সঞ্জিত চন্দ্রের মৃত্যুতে একসঙ্গে বিধবা হলেন তাঁর তিন স্ত্রী
পুবের কলম প্রতিবেদক: নিউ বারাকপুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ দরদী মানুষ সঞ্জিত চন্দ্র রবিবার পরলোক গমন করলেন। ৬৫ বছরের সঞ্জিত বাবুর মৃত্যুতে বিধবা হলেন তাঁর তিনজন স্ত্রী। ওই দিনই বরাহনগরের রতনবাবুর ঘাটের শ্মশানে তাঁর শেষ কৃত্য সম্পন্ন হয়।
সঞ্জিত চন্দ্র বেশ কয়েক মাস ধরে ফুসফুসের সংক্রমণের কারণে ভুগছিলেন। বাড়িতে রেখে তাঁর সেবাযত্ন করে গেছেন তিনজন স্ত্রীই। তবে শেষ রক্ষা আর হলো না, রবিবার সঞ্জিত চন্দ্রের মৃত্যুতে একসঙ্গে বিধবা হলেন তাঁর তিন স্ত্রীই।
তিনজন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি নিয়ে সুখের সংসার ছিল সঞ্জিত চন্দ্রের। প্রথম স্ত্রীর দুই পুত্র ও এক কন্যা। তাদের আবার একটি করে সন্তান। দ্বিতীয় স্ত্রীর দুই কন্যারও বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তাদেরও একটি করে সন্তান। তৃতীয় স্ত্রীর একটি কন্যারও বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে তিনতলা বাড়িতে বড়সড় একান্নবর্তী পরিবার। সব সময় ছিল জমজমাট।
নিজের কর্মদক্ষতা ও সততায় এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন নিজের উৎপাদন সংস্থাকে। কেন্দু কাঠের ভিতরের সারিকাঠ কুচকুচে কালো বর্ণের হয়। সেই মূল্যবান কাঠ দিয়ে তৈরি করতেন বাদ্যযন্ত্রের যন্ত্রাংশ। বেহালার ছড়ি, কান, ফিঙ্গারবোর্ড থেকে শুরু করে আরও অনেক মিউজিক্যাল ইন্সটুমেন্টের পার্টস নির্মাণ করে তাঁর চন্দ্র মিউজিক্যালস। দেশে ও বিদেশের বাজারে তার ব্যাপক চাহিদা। লাভজনক কারবারও বটে। চরম দরিদ্র অবস্থা থেকে এই কাজে অসামান্য দক্ষতার জন্য তিনি আর্থিক সমৃদ্ধশালী হতে পেরেছিলেন। সুদর্শন চেহারা, মিষ্টিভাষীর জন্য সঞ্জিত বাবুর জনপ্রিয়তাও এলাকাজুড়ে। বিভিন্ন সামাজিক কাজে কেউ তাঁর কাছে গেলে বিমুখ হয়ে ফিরতে হয়নি। এমন এক উজ্জ্বল পুরুষের প্রতি একে একে আকৃষ্ঠ হয়েছেন তিনজন তরুণী। কারও সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত বা অনৈতিক সম্পর্কে জড়ানোর তীব্র বিরোধী সঞ্জিত বাবু পর্যায়ক্রমে তিন স্ত্রীকেই সমান মর্যাদা দিয়েছিলেন। তাঁর তিন স্ত্রীকেই সমান মর্যাদা দিয়েছিলেন। তাঁর তিন স্ত্রীর মধ্যেও দেখা যায় অদ্ভুত সখ্যতা। একসঙ্গে তিনজন ‘সতীন’-কে বাজার বা কেনাকাটা করতে বা উৎসবে অনুষ্ঠানে যোগদান করতেও দেখা যায়। স্থানীয়রা বলে থাকেন সঞ্জিত বাবুর অমোঘ ম্যানেজমেন্টের জন্যই এটা সম্ভব হয়েছিল। তাঁর মৃত্যুতে তিন স্ত্রী ছাড়াও ২ পুত্র চার কন্যা অনাথ হলেন। রয়েছে কয়েকজন নাতি-নাতনিও।