২৭ নভেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৫১তম রাজ্য হলে বিনামূল্যে গোল্ডেন ডোম’: কানাডাকে সরাসরি প্রস্তাব ট্রাম্পের

চামেলি দাস
  • আপডেট : ২৯ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 302

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিক চমকপ্রদ ও বিতর্কিত ঘোষণা করে চলেছেন। জানুয়ারিতে শপথ নেওয়ার পরই তিনি বলেন, তাঁর লক্ষ্য কানাডা ও গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করে তোলা। এবার সেই লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগিয়ে তিনি সরাসরি কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হওয়ার প্রস্তাব দিলেন।

এই প্রস্তাবের সঙ্গেই ট্রাম্প একটি ‘লাভজনক অফার’ও দিয়েছেন। তাঁর দাবি, কানাডা যদি যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হয়, তবে ‘গোল্ডেন ডোম’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাবে একেবারে বিনামূল্যে। আর যদি আলাদা সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে থাকতে চায়, তাহলে এই সিস্টেমের জন্য তাদের ৬১ বিলিয়ন ডলার গুনতে হবে।

আরও পড়ুন: প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে খোঁচা দিয়ে নোবেল ঘোষণার আগে যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব দাবি ট্রাম্পের

‘গোল্ডেন ডোম’ হল একটি উচ্চপ্রযুক্তির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা মূলত ড্রোন, ব্যালেস্টিক, ত্রুুজ এবং হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রকে মহাকাশেই ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখবে। ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, এটি হবে আমেরিকার প্রথম মহাকাশ-ভিত্তিক অস্ত্র ব্যবস্থাপনা।

আরও পড়ুন: Palestinian state: এবার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিচ্ছে france

এই প্রকল্পে খরচ হতে পারে মোট ১৭৫ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে প্রাথমিক ধাপে ২৫ বিলিয়ন ডলারের বাজেট ইতিমধ্যেই রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত হাউসে পাস হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৯ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ গোল্ডেন ডোম সিস্টেম চালু হবে।

আরও পড়ুন: মোদির বজ্রকন্ঠ কেড়ে নিয়েছেন Donald Trump: জয়রাম রমেশ

বিশেষজ্ঞদের মতে, গোল্ডেন ডোম তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্রকে কৌশলগতভাবে কানাডার সহযোগিতা নিতেই হবে। কারণ আর্কটিক অঞ্চলে যদি কোনও শত্রু দেশ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে, তা ট্র্যাক করতে প্রয়োজন কানাডার আকাশসীমা ও রাডার নেটওয়ার্ক। সেই কারণেই ট্রাম্প এই প্রস্তাব দিয়ে রাজনৈতিক চাপ তৈরি করতে চাইছেন বলেই মত সামরিক বিশেষজ্ঞদের।

ট্রাম্প নিজেই দাবি করেছেন, কানাডা এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যোগ দিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি জানিয়েছেন, তাঁরা অবশ্যই উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চাইছেন, এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও আলোচনা চালাচ্ছেন; তবে কানাডার সার্বভৌমত্ব কোনও অবস্থাতেই লঙ্ঘন করা যাবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখতে চাই, কিন্তু নিজের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রেখেই।’

ট্রাম্পের এই অফার নিয়ে কানাডার তরফে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে অতীতেও কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হওয়ার কোনও প্রস্তাব মেনে নেয়নি। বরং বরাবরই স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে তাদের অবস্থান বজায় রেখেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মুহূর্তে বিশ্ব রাজনীতিতে এবং মহাকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য স্থাপন করাই ট্রাম্প প্রশাসনের মূল লক্ষ্য। আর তাতেই কানাডা হয়ে উঠেছে এক কৌশলগত ‘টার্গেট’।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

৫১তম রাজ্য হলে বিনামূল্যে গোল্ডেন ডোম’: কানাডাকে সরাসরি প্রস্তাব ট্রাম্পের

আপডেট : ২৯ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিক চমকপ্রদ ও বিতর্কিত ঘোষণা করে চলেছেন। জানুয়ারিতে শপথ নেওয়ার পরই তিনি বলেন, তাঁর লক্ষ্য কানাডা ও গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করে তোলা। এবার সেই লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগিয়ে তিনি সরাসরি কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হওয়ার প্রস্তাব দিলেন।

এই প্রস্তাবের সঙ্গেই ট্রাম্প একটি ‘লাভজনক অফার’ও দিয়েছেন। তাঁর দাবি, কানাডা যদি যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হয়, তবে ‘গোল্ডেন ডোম’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাবে একেবারে বিনামূল্যে। আর যদি আলাদা সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে থাকতে চায়, তাহলে এই সিস্টেমের জন্য তাদের ৬১ বিলিয়ন ডলার গুনতে হবে।

আরও পড়ুন: প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে খোঁচা দিয়ে নোবেল ঘোষণার আগে যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব দাবি ট্রাম্পের

‘গোল্ডেন ডোম’ হল একটি উচ্চপ্রযুক্তির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা মূলত ড্রোন, ব্যালেস্টিক, ত্রুুজ এবং হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রকে মহাকাশেই ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখবে। ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, এটি হবে আমেরিকার প্রথম মহাকাশ-ভিত্তিক অস্ত্র ব্যবস্থাপনা।

আরও পড়ুন: Palestinian state: এবার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিচ্ছে france

এই প্রকল্পে খরচ হতে পারে মোট ১৭৫ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে প্রাথমিক ধাপে ২৫ বিলিয়ন ডলারের বাজেট ইতিমধ্যেই রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত হাউসে পাস হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৯ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ গোল্ডেন ডোম সিস্টেম চালু হবে।

আরও পড়ুন: মোদির বজ্রকন্ঠ কেড়ে নিয়েছেন Donald Trump: জয়রাম রমেশ

বিশেষজ্ঞদের মতে, গোল্ডেন ডোম তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্রকে কৌশলগতভাবে কানাডার সহযোগিতা নিতেই হবে। কারণ আর্কটিক অঞ্চলে যদি কোনও শত্রু দেশ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে, তা ট্র্যাক করতে প্রয়োজন কানাডার আকাশসীমা ও রাডার নেটওয়ার্ক। সেই কারণেই ট্রাম্প এই প্রস্তাব দিয়ে রাজনৈতিক চাপ তৈরি করতে চাইছেন বলেই মত সামরিক বিশেষজ্ঞদের।

ট্রাম্প নিজেই দাবি করেছেন, কানাডা এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যোগ দিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি জানিয়েছেন, তাঁরা অবশ্যই উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চাইছেন, এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও আলোচনা চালাচ্ছেন; তবে কানাডার সার্বভৌমত্ব কোনও অবস্থাতেই লঙ্ঘন করা যাবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখতে চাই, কিন্তু নিজের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রেখেই।’

ট্রাম্পের এই অফার নিয়ে কানাডার তরফে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে অতীতেও কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হওয়ার কোনও প্রস্তাব মেনে নেয়নি। বরং বরাবরই স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে তাদের অবস্থান বজায় রেখেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মুহূর্তে বিশ্ব রাজনীতিতে এবং মহাকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য স্থাপন করাই ট্রাম্প প্রশাসনের মূল লক্ষ্য। আর তাতেই কানাডা হয়ে উঠেছে এক কৌশলগত ‘টার্গেট’।