দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে জনগণনা

- আপডেট : ৪ জুন ২০২৫, বুধবার
- / 148
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: অবশেষে দিন ঘোষণা কেন্দ্রের। ১৬ বছর পর দেশে ফের হতে চলেছে জনগণনা বা সেনসাস। সেইসঙ্গে হবে জাতগণনাও (কাস্ট সেনসাস)। বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ঘোষণা করা হয়েছে, ২০২৭ সালের ১ মার্চ থেকে শুরু হবে জনগণনার কাজ। অর্থাৎ, দেশে পুরোদমে জনগণনা শুরু হতে আর দু’বছরের অপেক্ষা।
২০১১ সালে শেষবার জনগণনা হয়েছিল। এর দশ বছর পর অর্থাৎ ২০২১ সালে ফের জনগণনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, তা আর হয়ে ওঠেনি। বুধবার কেন্দ্রীয় সরকার যে দিনক্ষণ চূড়ান্ত করেছে তা থেকে স্পষ্ট—১৬ বছর পর ফের দেশজুড়ে জনগণনা হতে চলেছে।
এই জনগণনা বা আদমশুমারির সঙ্গে জাতভিত্তিক গণনাও হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। তবে লাদাখ, জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের হিমালয় ঘেরা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ও রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা সে সময় তুষারাবৃত থাকবে। তাই ওই এলাকাগুলিতে ২০২৬-এর ১ অক্টোবর থেকেই শুরু হবে জনগণনার কাজ। এরপর ২০২৭ সালের ১ মার্চ থেকে হবে দেশের বাকি অংশে জনগণনার কাজ। গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার জনগণনার এই তারিখ সরকারিভাবে ঘোষণা করবে।
মনে করা হচ্ছে, ১৯৪৮ সালের সেনসাস আইনের ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী ১৬ জুন এই সংক্রান্ত সরকারি গেজেট প্রকাশিত হতে পারে। ১৯৪৮ সালের সেনসাস অ্যাক্ট এবং সেনসাস রুলস, ১৯৯০ অনুযায়ী দেশে আদমশুমারি হবে।
এর আগে ২০১১ সালের শেষবার দুই পর্যায়ে জনগণনা হয়েছিল। ২০২৯ সালে দেশের পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন হবে। করোনা সংক্রমণের জন্য ২০২১ সালের জনগণনা করা সম্ভব হয়নি বলেও জানানো হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। একইভাবে ২০২১ সালে দু’টি পর্যায়ে আদমশুমারি হওয়ার কথা ছিল। প্রথম দফায় ২০২০ সালের এপ্রিল-সেপ্টেম্বর এবং দ্বিতীয় দফায় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ২০২১ সালের এই জনগণনার প্রথম পর্যায়ের সব প্রস্তুতিই সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল।
২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে ফিল্ডে কাজ আরম্ভ হওয়া ঠিক ছিল। কিন্তু দেশজুড়ে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় জনগণনার কাজ স্থগিত করা হয়। যদিও অনেকের অভিযোগ, ২০১৯ সালে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাসের পর দেশজুড়ে তৈরি হওয়া উত্তেজনার আবহে সে সময় নরেন্দ্র মোদি সরকার আদমশুমারির প্রক্রিয়া শুরুর তৎপরতা দেখায়নি।
শোনা গিয়েছিল, ২০২৩ সালে জনগণনা হতে পারে। কিন্তু ভোটের আগে সে পথে হাঁটেনি মোদি সরকার। সব মিলিয়ে মোদি জমানায় একবারও জনগণনা হয়নি। তাতে সরকারের অন্দরে নানা ধরনের প্রশ্নও উঠছিল। অবশেষে গত বছর জনগণনার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে কেন্দ্র। গত মাসেই কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছিল, জনগণনার সঙ্গে জাতিগত জনগণনাও করা হবে। তিনটি বিষয়ের উপর জনগণনা হবে—বাড়িতে ব্যক্তিসংখ্যা, তাদের আবাস সংখ্যা ও এক আবাসে কতজন বসবাস করেন তার উপর।
অর্থাৎ দেশের জনসংখ্যার পাশাপাশি কটি বাড়ি রয়েছে তাও গণনার আওতায় আনা হবে। সেইসঙ্গে জাত গণনাকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রশ্ন ও উত্তরের মাধ্যমে জাত এবং জনগোষ্ঠী সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে বলে খবর। আর যাবতীয় তথ্য প্রকাশ্যে আসতে পারে ২০২৮ সাল নাগাদ।
উল্লেখ্য, কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলির দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, আদমশুমারির পাশাপাশি জাত গণনাও করতে হবে। অবশেষে তাতে রাজি হয় কেন্দ্র। সেক্ষেত্রে এটাই হবে মোদি সরকারের জমানার প্রথম জনগণনা। কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, দু’টি পর্যায়ে সাঙ্গ হবে পুরো প্রক্রিয়া। গত মাসেই জনগণনার সঙ্গে জাতগণনা করার কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। বর্তমানে দেশের জনগণনা কমিশনার পদে রয়েছেন মৃত্যুঞ্জয়কুমার নারায়ণ। গত বছর তাঁর কার্যকালের মেয়াদ ২০২৬-এর আগস্ট মাস পর্যন্ত বাড়িয়েছিল মোদি সরকার।
Population Census-2027 to be conducted in two phases along with enumeration of castes
Read here: https://t.co/5Nt4QOPqda@HMOIndia @PIB_India pic.twitter.com/avUqB878d2
— Spokesperson, Ministry of Home Affairs (@PIBHomeAffairs) June 4, 2025