০৯ জুন ২০২৫, সোমবার, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যদি স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ বিচারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, তবে ভারতে ফিরবেন, জানালেন বিজয় মালিয়া

আবুল খায়ের
  • আপডেট : ৬ জুন ২০২৫, শুক্রবার
  • / 48

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ গোটা ভারত তথা বিশ্ব তাঁকে ‘চোর’ বলেই ডেকেছে। তাঁর বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ। তাঁর জন্যই পথে বসতে হয়েছিল হাজার হাজার কর্মীকে। অবশেষে সামনে এলেন বিজয় মালিয়া। জনগণের কাছে ক্ষমা চাইলেন কিংফিশার এয়ারলাইন্স ডুবে যাওয়ার জন্য। তবে একইসঙ্গে বলে দিলেন যে তিনি চোর নন। তাঁর গায়ে যে চোর তকমা লাগানো হয়েছে, তা মিথ্যা।

শুধু কিংফিশার এয়ারলাইন্সের মালিক নয়, বিলাসবহুল জীবনযাত্রা, কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ, সুন্দরী রমণী বেষ্টিত জীবন- জনগণের সামনে বিজয় মালিয়ার পরিচয় ছিল এমনটাই। সেই বিজয় মাল্যই খবরের শিরোনামে উঠে এলেন আর্থিক প্রতারণার জন্য। তাঁর বিরুদ্ধে যখন মামলা হল, তখন দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেন মালিয়া। এরপর আর সামনে আসেননি তিনি।

দীর্ঘ ৯ বছর পর রাজ সামানির পডকাস্ট শো-তেই সামনে এলেন পলাতক ব্যবসায়ী বিজয় মালিয়া। তিনি প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নেন এক সময়ে দেশের সবথেকে বড় এয়ারলাইন্স কিংফিশারের ব্যর্থতার জন্য। তবে বিজয় মালিয়ার দাবি, তিনি কোনও প্রতারণা করেননি।

বিজয় মালিয়ার কথায়, বিগত ৯ বছর ধরে তাঁকে নিয়ে নানা ভুয়ো খবর, প্রচার করা হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। জনগণের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমকেই তিনি দোষারোপ করেন রঙ চড়িয়ে খবর করার জন্য”। কিংফিশার সংস্থা ডুবে যাওয়ার পর তাঁকে যেভাবে চোর তকমা দেওয়া হয়েছিল, তার জবাব দিয়ে বিজয় মালিয়া বলেন, “কীসের চুরি? বিনা কারণে আমায় দোষী বানানো হয়েছিল।”

বিজয় বলেন, অর্থমন্ত্রী সংসদে বিবৃতি দিয়েছিলেন। তারপর সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রকও বিবৃতি দিয়ে জানায় যে ১৪,১০০ কোটি টাকা তাঁর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

বিজয় মালিয়া বলেন, “কিংফিশার সংস্থা যখন ডুবে যায়, তখন কিংফিশারের মাথায় ৪৯৯৯ কোটি টাকার ঋণ ছিল। তিনি এই ঋণের একজন গ্যারান্টার ছিলেন। সুদ মিলিয়ে মোট ৬২০৩ কোটি টাকা বাকি ছিল। সেখানেই সরকার বিজয় মালিয়ার কাছ থেকে ১৪,১০০ কোটি টাকা আদায় করেছে। এখন আমার এদেরকে প্রশ্ন করা উচিত।”

‘পলাতক’ তকমা মানতে রাজি তিনি, তবে ‘চোর’ তকমা মানতে রাজি নন। তাঁর দাবি, রাজনৈতিক স্বার্থে তাঁকে চোর বলা হয়েছিল।  বিজয় মালিয়া বলেন, “২০১৬ সালের মার্চ মাসের পর ভারতে আর না যাওয়ার জন্য আমায় পলাতক বলুন। আমি পালিয়ে যাইনি। পূর্বপরিকল্পিত সফর অনুযায়ীই ভারতের বাইরে গিয়েছিলাম। আমার মতে কিছু বৈধ কারণে আর ভারতে ফিরিনি। যদি আমায় পলাতক বলতে চান, বলুন। কিন্তু চোর কথাটা আসছে কোথা থেকে? কোথায় চুরি হয়েছে?”

প্রশ্ন করা হয়, তিনি কি কখনও ভারতে ফিরবেন? এর উত্তরে বিজয় মালিয়া বলেন যে তাঁকে যদি স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ বিচারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, তবে তিনি ভারতে ফিরবেন।

প্রসঙ্গত, ভারতের একাধিক ব্যাঙ্ক থেকে ৯০০০ কোটি টাকারও বেশি ঋণ নিয়েছিল কিংফিশার এয়ারলাইন্স। ঋণখেলাপের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই তিনি ভারতের বাইরে রয়েছেন। বর্তমানে ব্রিটেনে রয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে ব্রিটেনের আদালতও বিজয় মালিয়াকে ভারতে প্রত্যর্পণের অনুমতি দেয়। তবুও ভারতে ফেরেননি মালিয়া। তাঁর দাবি, ভারতে তাঁর স্বচ্ছ বিচার হবে না।

 

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

যদি স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ বিচারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, তবে ভারতে ফিরবেন, জানালেন বিজয় মালিয়া

আপডেট : ৬ জুন ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ গোটা ভারত তথা বিশ্ব তাঁকে ‘চোর’ বলেই ডেকেছে। তাঁর বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ। তাঁর জন্যই পথে বসতে হয়েছিল হাজার হাজার কর্মীকে। অবশেষে সামনে এলেন বিজয় মালিয়া। জনগণের কাছে ক্ষমা চাইলেন কিংফিশার এয়ারলাইন্স ডুবে যাওয়ার জন্য। তবে একইসঙ্গে বলে দিলেন যে তিনি চোর নন। তাঁর গায়ে যে চোর তকমা লাগানো হয়েছে, তা মিথ্যা।

শুধু কিংফিশার এয়ারলাইন্সের মালিক নয়, বিলাসবহুল জীবনযাত্রা, কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ, সুন্দরী রমণী বেষ্টিত জীবন- জনগণের সামনে বিজয় মালিয়ার পরিচয় ছিল এমনটাই। সেই বিজয় মাল্যই খবরের শিরোনামে উঠে এলেন আর্থিক প্রতারণার জন্য। তাঁর বিরুদ্ধে যখন মামলা হল, তখন দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেন মালিয়া। এরপর আর সামনে আসেননি তিনি।

দীর্ঘ ৯ বছর পর রাজ সামানির পডকাস্ট শো-তেই সামনে এলেন পলাতক ব্যবসায়ী বিজয় মালিয়া। তিনি প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নেন এক সময়ে দেশের সবথেকে বড় এয়ারলাইন্স কিংফিশারের ব্যর্থতার জন্য। তবে বিজয় মালিয়ার দাবি, তিনি কোনও প্রতারণা করেননি।

বিজয় মালিয়ার কথায়, বিগত ৯ বছর ধরে তাঁকে নিয়ে নানা ভুয়ো খবর, প্রচার করা হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। জনগণের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমকেই তিনি দোষারোপ করেন রঙ চড়িয়ে খবর করার জন্য”। কিংফিশার সংস্থা ডুবে যাওয়ার পর তাঁকে যেভাবে চোর তকমা দেওয়া হয়েছিল, তার জবাব দিয়ে বিজয় মালিয়া বলেন, “কীসের চুরি? বিনা কারণে আমায় দোষী বানানো হয়েছিল।”

বিজয় বলেন, অর্থমন্ত্রী সংসদে বিবৃতি দিয়েছিলেন। তারপর সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রকও বিবৃতি দিয়ে জানায় যে ১৪,১০০ কোটি টাকা তাঁর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

বিজয় মালিয়া বলেন, “কিংফিশার সংস্থা যখন ডুবে যায়, তখন কিংফিশারের মাথায় ৪৯৯৯ কোটি টাকার ঋণ ছিল। তিনি এই ঋণের একজন গ্যারান্টার ছিলেন। সুদ মিলিয়ে মোট ৬২০৩ কোটি টাকা বাকি ছিল। সেখানেই সরকার বিজয় মালিয়ার কাছ থেকে ১৪,১০০ কোটি টাকা আদায় করেছে। এখন আমার এদেরকে প্রশ্ন করা উচিত।”

‘পলাতক’ তকমা মানতে রাজি তিনি, তবে ‘চোর’ তকমা মানতে রাজি নন। তাঁর দাবি, রাজনৈতিক স্বার্থে তাঁকে চোর বলা হয়েছিল।  বিজয় মালিয়া বলেন, “২০১৬ সালের মার্চ মাসের পর ভারতে আর না যাওয়ার জন্য আমায় পলাতক বলুন। আমি পালিয়ে যাইনি। পূর্বপরিকল্পিত সফর অনুযায়ীই ভারতের বাইরে গিয়েছিলাম। আমার মতে কিছু বৈধ কারণে আর ভারতে ফিরিনি। যদি আমায় পলাতক বলতে চান, বলুন। কিন্তু চোর কথাটা আসছে কোথা থেকে? কোথায় চুরি হয়েছে?”

প্রশ্ন করা হয়, তিনি কি কখনও ভারতে ফিরবেন? এর উত্তরে বিজয় মালিয়া বলেন যে তাঁকে যদি স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ বিচারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, তবে তিনি ভারতে ফিরবেন।

প্রসঙ্গত, ভারতের একাধিক ব্যাঙ্ক থেকে ৯০০০ কোটি টাকারও বেশি ঋণ নিয়েছিল কিংফিশার এয়ারলাইন্স। ঋণখেলাপের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই তিনি ভারতের বাইরে রয়েছেন। বর্তমানে ব্রিটেনে রয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে ব্রিটেনের আদালতও বিজয় মালিয়াকে ভারতে প্রত্যর্পণের অনুমতি দেয়। তবুও ভারতে ফেরেননি মালিয়া। তাঁর দাবি, ভারতে তাঁর স্বচ্ছ বিচার হবে না।