গাজায় খাদ্য সহায়তা কেন্দ্রেই মৃত্যুর মিছিল, নিহত ৭৪৩ ফিলিস্তিনি

- আপডেট : ৬ জুলাই ২০২৫, রবিবার
- / 89
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন শত শত মানুষ। খাদ্য, পানি ও ওষুধের অভাবে যারা বেঁচে থাকার আশায় সহায়তা কেন্দ্রে যাচ্ছেন, তারাই আজ গুলির শিকার হচ্ছেন। ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’ নামের বিতর্কিত প্রকল্পটি পরিণত হয়েছে আরেকটি মৃত্যুকূপে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক সপ্তাহে জিএইচএফ-এর কেন্দ্রগুলোতে সহায়তা নিতে গিয়ে ৭৪৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৪ হাজার ৮৯১ জন আহত হয়েছেন। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনা ও প্রকল্পের নিরাপত্তাকর্মীরা সহায়তা নিতে আসা ক্ষুধার্ত মানুষদের ওপর বারবার গুলি ছুড়েছে। সাংবাদিক হানি মাহমুদের ভাষায়, “এই সংখ্যা কেবল ন্যূনতম হিসাব, প্রকৃত সংখ্যাটি আরও ভয়াবহ হতে পারে।”
জিএইচএফ-এ যুক্ত মার্কিন ঠিকাদাররাও অভিযোগ তুলেছেন—নিরাপত্তাকর্মীরা অস্ত্র হাতে স্বেচ্ছাচারী আচরণ করছে। যদিও প্রকল্প কর্তৃপক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবুও, এই মানবিক সহায়তা কেন্দ্রকে ঘিরে গণহত্যার অভিযোগ উঠেছে আন্তর্জাতিক মহলে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এটিকে ‘সামরিকীকৃত সহায়তা প্রকল্প’ বলে আখ্যা দিয়ে জানিয়েছে, এটি আসলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের আবরণে চলমান গণহত্যা।
তীব্র সংকটেও বাধ্য হয়ে সহায়তা নিতে আসছেন ফিলিস্তিনিরা। এক ফিলিস্তিনি নাগরিক মাজিদ আবু লাবান বলেন, “আমার সন্তানরা তিন দিন ধরে না খেয়ে ছিল। সহায়তা নিতে গিয়েই ইসরায়েলি সেনার গোলায় পড়ে প্রাণ হারাতে বসেছিলাম।”
এই ভয়াবহ বাস্তবতা স্বত্বেও মার্কিন সরকার জিএইচএফ প্রকল্পে সমর্থন অব্যাহত রেখেছে এবং জুনে ৩০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে। গাজায় গণহত্যা আর সহায়তার নামে নিপীড়নের এই চিত্র সামনে আসায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। তবুও, গাজার অসহায় মানুষজন প্রাণ হাতে করে প্রতিদিন যাচ্ছেন একটু খাদ্যের আশায়।