দত্তক নিয়ে বাড়িতে যান, পথকুকুরদের রাস্তায় খেতে দিলেই দিতে হবে জরিমানা, নির্দেশ বম্বে হাইকোর্টের

- আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২২, শনিবার
- / 16
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি পথকুকুরদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অলিগলিতে প্রায় সর্বত্রই সারমেয়দের ছড়াছড়ি। অনেক সময় তারা তেড়ে যাচ্ছে সাধারণ পথচলতি মানুষের ওপরেও। সম্প্রতি নয়ডায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে রাস্তার কুকুরের হামলায় প্রাণ হারায় সাত মাস বয়সি এক শিশু।
ইদানীং রাস্তার মাঝখানেই পথকুকুরদের খাওয়ানোর একটা চল মানুষের মধ্যে বেড়ে গেছে। এই নিয়ে যত্রতত্র নোংরা হওয়া থেকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে তথাকথিত ‘পশুপ্রেমিক’দের।
এবার এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করল বম্বে হাইকোর্ট। রাস্তার কুকুরকে খাওয়ালে জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কোর্ট এক নির্দেশে জানিয়েছে, যারা বিপথগামী, পথকুকুরদের সুরক্ষা এবং কল্যাণে আগ্রহী, তাদের অবশ্যই তাদের (পথকুকুর) দত্তক নিতে হবে, রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তাদের আশ্রয় সহ সমস্ত খরচ তাদের বহন করতে হবে। পথকুকুরদের সমস্যা মোকাবিলায় বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ সম্প্রতি এই নির্দেশে জানায়, এই আদেশ কার্যকর হচ্ছে কিনা, তা দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নাগপুরের মিউনিসিপ্যাল কমিশনারকে।
বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি এসবি শুক্রে এবং বিচারপতি এএল পানসারের ডিভিশন বেঞ্চ গত ২০ তারিখ মামলার রায় দিতে গিয়ে জানায়, নাগপুরে বর্তমানে কিছু মানুষের দায়িত্বজ্ঞান কর্মকাণ্ডের জন্য পথকুকুরদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। কারণ তারা যত্রতত্র রাস্তায় কুকুরদের খেতে দেন। পথকুকুরদের প্রতি অনেকের ভালোবাসা থাকতে পারে। তবে বহু মানুষ এই পথকুকুরদের আক্রমণের শিকার। তাই এই ধরনের কাজ বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। যারা কুকুরদের ভালোবাসেন তারা তাদের দত্তক নিয়ে বাড়িতে গিয়ে রেখে সেখানে খেতে দিন।
আদালত আরও জানায়, এই সমস্ত নাগরিকরা এইভাবে পথকুকুরদের খেতে দিয়ে নিজেদের পশুপ্রেমী বলে দাবি করে, সমাজের ক্ষতি করছেন। আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, এই নাগরিকরা সমাজকে কি ধরনের বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে তা তারা বুঝতে পারছেন না। এই ভাবে খাওয়ানোর ফলে পথকুকুররা আরও হিংস্র আচরণ করছে, আর অনেক সময় খাবার না পেয়ে তারা সাধারণ মানুষ থেকে শিশুদের উপর আক্রমণ করছে। সেই সমস্ত নাগরিককে বুঝতে হবে, শুধু খাওয়ালেই হবে না, তাদের প্রকৃত যত্ন নিতে হবে।
বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি এসবি শুক্রে এবং বিচারপতি এএল পানসারের ডিভিশন বেঞ্চ, জানিয়েছে পথকুকুরদের প্রতি সহানুভূতি থাকলে তার জন্য মৌলিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।
আদালত তীব্র ভর্ৎসনা করে বলে, কিন্তু তথাকথিত নাগরিকদের মৌলিক দায়িত্ব নিতে লজ্জাবোধ করে, আর তার ফলসরূপ কুকুরদের জনসংখ্যা অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি ঘটছে। বেঞ্চ তাই নির্দেশ দিয়েছে যে সাধারণভাবে নাগপুর এবং এর আশেপাশের অঞ্চলের কোনও নাগরিক বা বাসিন্দা সর্বজনীন স্থান, বাগানে পথকুকুরদের খাওয়াবেন না। নির্দেশ অমান্য করলে তাকে ২০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। যতবার নিয়ম ভাঙবে, ততবার এই টাকা দিতে হবে।
আদালত আরও জানায়, মহারাষ্ট্র পুলিশ আইনে ৪৪ ধারা বিপথগামী কুকুর নিধনের অনুমতি দেয়। তবে আমরা সেটা বলছি না, পুরসভার মনিটারিং কমিটিকে বিষয়টিকে নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।