৩১ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুর মামলায় সিবিআই তদন্ত বাতিল চেয়ে রাজ্যের আবেদন খারিজ সুপ্রিম কোর্টে

সুস্মিতা
  • আপডেট : ২১ অগাস্ট ২০২৩, সোমবার
  • / 91

পারিজাত মোল্লা: সোমবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে একাধারে যেমন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়েরর পোস্টিং দুর্নীতি মামলায় অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ পেয়েছে রাজ্য সরকার। ঠিক তেমনি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পুরসভা মামলায় ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য।  কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাত্‍ পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্ত চালিয়ে যাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

 

আরও পড়ুন: মাহমুদাবাদ মামলা: তদন্তে দেরি নিয়ে সিটকে ভর্ৎসনায় করল সুপ্রিম কোর্ট

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল এদিন এজলাসে জানান, “শিক্ষক দুর্নীতি মামলা ও পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতি মামলা, দুটি ক্ষেত্রেই একাধিক সাধারণ অভিযুক্ত রয়েছেন”। এই সওয়ালকে মান্যতা দিয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। স্কুলে শিক্ষক ও পুরসভার নিয়োগ দুর্নীতি মামলা কি একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত? আদৌ এই মামলার কে তদন্ত করবে?। ইতিমধ্যেই এই মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশেই সমান্তরালভাবে তদন্ত করছে সিবিআই-ইডি। সেই বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য।

আরও পড়ুন: ‘উদয়পুর ফাইলস’ মামলা: কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় শীর্ষ আদালত

 

আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনের এসআইআর বন্ধের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা

সোমবারের শুনানিতে দেশে শীর্ষ আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল জানান, ‘শিক্ষা দুর্নীতি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে অয়ন শীলের হদিশ পাওয়া যায়। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি করতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি মিলেছে। এই নথি থেকেই পুরসভা দুর্নীতির কথা জানা গিয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে এখনও বাংলার একাধিক পুরসভায় ১৮০০ নিয়োগ হয়েছে। ১৬টা পুরসভায় দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। একই ব্যক্তি স্কুলে ও পুরসভার নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত। তেমনই একজন হলেন অয়ন শীল। তিনি সেখানে ‘ইন্টারমেলিংয়ের’ কাজ করেছেন। দুটি ক্ষেত্রেই নিয়োগে দুর্নীতিতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী, বিধায়কের ভূমিকাও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে এই তদন্ত অত্যন্ত জরুরি’।

 

রাজ্যের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল দুটি যুক্তি খাঁড়া করেছেন। প্রথম যুক্তি, এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত কোনও জোরাল তথ্য প্রমাণ নেই। সেখানে এই তদন্তের কোনও প্রয়োজনীয়তাই নেই। দ্বিতীয় যুক্তি, কেন রাজ্য পুলিশকে এক্ষেত্রে যুক্ত করা হচ্ছে না? পুলিশকে এড়িয়ে কেন তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা? যদিও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট করে দেয়, সিবিআই সুনির্দিষ্ট এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। সোমবার সপ্তাহের শুরুতে ওই মামলার শুনানিতে রাজ্যের আবেদন খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্টের  নির্দেশই বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট।

 

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিল রাজ্য। সেই আর্জি খারিজ করে আগের নির্দেশই বহাল রাখেন বিচারপতি অমৃতা সিন‌হা। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে গত মে মাসে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চও সেই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেয়নি। বিচারপতি বিশ্বজিত্‍ বসু এবং বিচারপতি অপূর্ব সিন্‌হা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছিল, আপাতত তদন্তে কোনও হস্তক্ষেপ করবে না আদালত। একই মামলায় পৃথকভাবে তদন্ত করছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও। পরবর্তী শুনানিতে ইডিকে মামলার কেস ডায়েরি নিয়ে আসতে হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

পুর মামলায় সিবিআই তদন্ত বাতিল চেয়ে রাজ্যের আবেদন খারিজ সুপ্রিম কোর্টে

আপডেট : ২১ অগাস্ট ২০২৩, সোমবার

পারিজাত মোল্লা: সোমবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে একাধারে যেমন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়েরর পোস্টিং দুর্নীতি মামলায় অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ পেয়েছে রাজ্য সরকার। ঠিক তেমনি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পুরসভা মামলায় ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য।  কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাত্‍ পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্ত চালিয়ে যাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

 

আরও পড়ুন: মাহমুদাবাদ মামলা: তদন্তে দেরি নিয়ে সিটকে ভর্ৎসনায় করল সুপ্রিম কোর্ট

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল এদিন এজলাসে জানান, “শিক্ষক দুর্নীতি মামলা ও পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতি মামলা, দুটি ক্ষেত্রেই একাধিক সাধারণ অভিযুক্ত রয়েছেন”। এই সওয়ালকে মান্যতা দিয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। স্কুলে শিক্ষক ও পুরসভার নিয়োগ দুর্নীতি মামলা কি একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত? আদৌ এই মামলার কে তদন্ত করবে?। ইতিমধ্যেই এই মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশেই সমান্তরালভাবে তদন্ত করছে সিবিআই-ইডি। সেই বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য।

আরও পড়ুন: ‘উদয়পুর ফাইলস’ মামলা: কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় শীর্ষ আদালত

 

আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনের এসআইআর বন্ধের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা

সোমবারের শুনানিতে দেশে শীর্ষ আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল জানান, ‘শিক্ষা দুর্নীতি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে অয়ন শীলের হদিশ পাওয়া যায়। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি করতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি মিলেছে। এই নথি থেকেই পুরসভা দুর্নীতির কথা জানা গিয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে এখনও বাংলার একাধিক পুরসভায় ১৮০০ নিয়োগ হয়েছে। ১৬টা পুরসভায় দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। একই ব্যক্তি স্কুলে ও পুরসভার নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত। তেমনই একজন হলেন অয়ন শীল। তিনি সেখানে ‘ইন্টারমেলিংয়ের’ কাজ করেছেন। দুটি ক্ষেত্রেই নিয়োগে দুর্নীতিতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী, বিধায়কের ভূমিকাও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে এই তদন্ত অত্যন্ত জরুরি’।

 

রাজ্যের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল দুটি যুক্তি খাঁড়া করেছেন। প্রথম যুক্তি, এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত কোনও জোরাল তথ্য প্রমাণ নেই। সেখানে এই তদন্তের কোনও প্রয়োজনীয়তাই নেই। দ্বিতীয় যুক্তি, কেন রাজ্য পুলিশকে এক্ষেত্রে যুক্ত করা হচ্ছে না? পুলিশকে এড়িয়ে কেন তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা? যদিও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট করে দেয়, সিবিআই সুনির্দিষ্ট এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। সোমবার সপ্তাহের শুরুতে ওই মামলার শুনানিতে রাজ্যের আবেদন খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্টের  নির্দেশই বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট।

 

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিল রাজ্য। সেই আর্জি খারিজ করে আগের নির্দেশই বহাল রাখেন বিচারপতি অমৃতা সিন‌হা। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে গত মে মাসে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চও সেই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেয়নি। বিচারপতি বিশ্বজিত্‍ বসু এবং বিচারপতি অপূর্ব সিন্‌হা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছিল, আপাতত তদন্তে কোনও হস্তক্ষেপ করবে না আদালত। একই মামলায় পৃথকভাবে তদন্ত করছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও। পরবর্তী শুনানিতে ইডিকে মামলার কেস ডায়েরি নিয়ে আসতে হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়।