০১ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অসম পুলিশের এনকাউন্টারে নিহত ব্যক্তি ডাকাত নয়, কৃষক, সিআইডি তদন্তে চাঞ্চল্যকর মোড়

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৩, রবিবার
  • / 10

REPRESENTATIVE IMAGE

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: অসম পুলিশের এনকাউন্টারে নিহত ব্যক্তি ডাকাত নয়, কৃষক ছিলেন। ডাকাত সন্দেহে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। পরে সিআইডি তদন্তে উঠে আসে নিহত ব্যক্তির প্রকৃত পরিচয়। ফলে বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়েছে অসম পুলিশ।

উত্তরপ্রদেশে যোগী জমানায় পুলিশ ‘ট্রিগার হ্যাপি’ হয়ে উঠেছে। কথায় কথায় এনকাউন্টারে পারদর্শী হয়ে উঠেছে তারা। সেই ছবিই এবার ধরা পড়ল অসমে। ব্যক্তির পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার আগেই শুধুমাত্র সন্দেহের বশে গুলি চালিয়ে দিল হিমন্ত বিশ্বশর্মার পুলিশ। পুলিশি এনকাউন্টারে নিহত হয় এক ব্যক্তি। পরে জানা যায়, ডাকাত সন্দেহে পুলিশ যাকে গুলি করে হত্যা করেছে তিনি একজন কৃষক। আর বিষয়টি সামনে আসার পর হিমন্তর পুলিশ মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে ‘বড় ভুল’ হয়ে গিয়েছে। এমনিতেই চোর সন্দেহে, গরু পাচারকারী সন্দেহে, ফ্রিজে বিফ রাখার সন্দেহে গো-রক্ষকদের হাতে একাধিক লিঞ্চিং ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আর এবার শুধুমাত্র সন্দেহের বশে অসম পুলিশের হাতে এই ধরনের ঘটনা ঘটে গেল।

এই পুলিশি এনকাউন্টারে মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে অসমের উদালগুড়ি জেলার রওতা এলাকার ধানসিড়িখুঁটি গ্রামে। ডাকাত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে এনকাউন্টারে হত্যার তদন্ত নিশ্চিত করে যে এটি ‘ভুল পরিচয়’-এর মামলা।

সিআইডি তদন্তে উঠে এসেছে যে, নিহত ব্যক্তি ডাকাত কেনারাম বোরো ছিলেন না। তাঁর নাম ডিমবেশ্বর মুছাহারি। তিনি একজন ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী। ডাকাতের তত্ত্ব খারিজ হয়ে যাওয়ায় পুলিশ এখন দাবি করছে ওই ব্যক্তি একজন ‘বড় অপরাধী’। পুলিশের আরও দাবি, ২৪ ফেব্রুয়ারির এই এনকাউন্টারের ঘটনায় তাদের দু’জন সহকর্মীও গুরুতর জখম হয়েছে।

সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় হল, ডাকাত বলে পরিচিত কেনারাম বোরোর মা নিহত ব্যক্তিকে নিজের ছেলে বলে শণাক্ত করলে মৃতদেহটি তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেইমতো ‘পুত্রের’ অন্ত্যেষ্টিও করেন তিনি। এর ঠিক পরই মুছাহারির পরিবার দাবি জানায়, নিহত ব্যক্তি তাদের পরিবারের সদস্য। ফলে নিহত ব্যক্তির পরিচয় নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশে মামলা হয়। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এই ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেন।

২ মার্চ থেকে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখা যায়, নিহত ব্যক্তি মুছাহারি পরিবারের সদস্য। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, বোড়ো ল্যান্ডের নিষিদ্ধ সংগঠন ‘ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট’-এর প্রাক্তন সদস্য ছিল কেনারাম। অসম ও মেঘালয়ে আগ্নেয়াস্ত্র চুরিও পাচার সহ একাধিক মামলায় ফেরার। আগেও অস্ত্রসহ একাধিকবার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। পুলিশের দাবি, মুছাহারিও সমাজবিরোধী। আগ্নেয়াস্ত্র সহ তাকেও পুলিশ আগে গ্রেফতার করেছিল। একটি মামলায় দু’জনই ফেরার ছিল। যদিও পরিবারের দাবি, মুছাহারি সমাজবিরোধী নয়, সে একজন কৃষক।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

অসম পুলিশের এনকাউন্টারে নিহত ব্যক্তি ডাকাত নয়, কৃষক, সিআইডি তদন্তে চাঞ্চল্যকর মোড়

আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৩, রবিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: অসম পুলিশের এনকাউন্টারে নিহত ব্যক্তি ডাকাত নয়, কৃষক ছিলেন। ডাকাত সন্দেহে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। পরে সিআইডি তদন্তে উঠে আসে নিহত ব্যক্তির প্রকৃত পরিচয়। ফলে বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়েছে অসম পুলিশ।

উত্তরপ্রদেশে যোগী জমানায় পুলিশ ‘ট্রিগার হ্যাপি’ হয়ে উঠেছে। কথায় কথায় এনকাউন্টারে পারদর্শী হয়ে উঠেছে তারা। সেই ছবিই এবার ধরা পড়ল অসমে। ব্যক্তির পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার আগেই শুধুমাত্র সন্দেহের বশে গুলি চালিয়ে দিল হিমন্ত বিশ্বশর্মার পুলিশ। পুলিশি এনকাউন্টারে নিহত হয় এক ব্যক্তি। পরে জানা যায়, ডাকাত সন্দেহে পুলিশ যাকে গুলি করে হত্যা করেছে তিনি একজন কৃষক। আর বিষয়টি সামনে আসার পর হিমন্তর পুলিশ মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে ‘বড় ভুল’ হয়ে গিয়েছে। এমনিতেই চোর সন্দেহে, গরু পাচারকারী সন্দেহে, ফ্রিজে বিফ রাখার সন্দেহে গো-রক্ষকদের হাতে একাধিক লিঞ্চিং ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আর এবার শুধুমাত্র সন্দেহের বশে অসম পুলিশের হাতে এই ধরনের ঘটনা ঘটে গেল।

এই পুলিশি এনকাউন্টারে মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে অসমের উদালগুড়ি জেলার রওতা এলাকার ধানসিড়িখুঁটি গ্রামে। ডাকাত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে এনকাউন্টারে হত্যার তদন্ত নিশ্চিত করে যে এটি ‘ভুল পরিচয়’-এর মামলা।

সিআইডি তদন্তে উঠে এসেছে যে, নিহত ব্যক্তি ডাকাত কেনারাম বোরো ছিলেন না। তাঁর নাম ডিমবেশ্বর মুছাহারি। তিনি একজন ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী। ডাকাতের তত্ত্ব খারিজ হয়ে যাওয়ায় পুলিশ এখন দাবি করছে ওই ব্যক্তি একজন ‘বড় অপরাধী’। পুলিশের আরও দাবি, ২৪ ফেব্রুয়ারির এই এনকাউন্টারের ঘটনায় তাদের দু’জন সহকর্মীও গুরুতর জখম হয়েছে।

সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় হল, ডাকাত বলে পরিচিত কেনারাম বোরোর মা নিহত ব্যক্তিকে নিজের ছেলে বলে শণাক্ত করলে মৃতদেহটি তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেইমতো ‘পুত্রের’ অন্ত্যেষ্টিও করেন তিনি। এর ঠিক পরই মুছাহারির পরিবার দাবি জানায়, নিহত ব্যক্তি তাদের পরিবারের সদস্য। ফলে নিহত ব্যক্তির পরিচয় নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশে মামলা হয়। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এই ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেন।

২ মার্চ থেকে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখা যায়, নিহত ব্যক্তি মুছাহারি পরিবারের সদস্য। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, বোড়ো ল্যান্ডের নিষিদ্ধ সংগঠন ‘ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট’-এর প্রাক্তন সদস্য ছিল কেনারাম। অসম ও মেঘালয়ে আগ্নেয়াস্ত্র চুরিও পাচার সহ একাধিক মামলায় ফেরার। আগেও অস্ত্রসহ একাধিকবার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। পুলিশের দাবি, মুছাহারিও সমাজবিরোধী। আগ্নেয়াস্ত্র সহ তাকেও পুলিশ আগে গ্রেফতার করেছিল। একটি মামলায় দু’জনই ফেরার ছিল। যদিও পরিবারের দাবি, মুছাহারি সমাজবিরোধী নয়, সে একজন কৃষক।