১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘উদয়পুর ফাইলস’ মামলা: কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় শীর্ষ আদালত

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৫, বুধবার
  • / 28

পুবের কলম, নয়াদিল্লি: বিতর্কিত সিনেমা ‘উদয়পুর ফাইলস’-এর মুক্তিতে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দেশের শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করে ছবির নির্মাতারা। বুধবার বিতর্কিত সিনেমা সংক্রান্ত সমস্ত আবেদনের শুনানি স্থগিত করল সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের পরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার আজ ছবিটির সিবিএফসি শংসাপত্রের বিরুদ্ধে সংশোধন আবেদনের শুনানি করতে চলেছে। এবিষয়ে আদালত বলেছে, আসা করি কেন্দ্রের কমিটি ‘সময় নষ্ট না করে’ অবিলম্বে সিদ্ধান্ত নেবে। চলচ্চিত্র নির্মাতারা জরুরিতাকে মাথায় রেখে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

বিতর্কিত ‘উদয়পুর ফাইলস’ নিয়ে শীর্ষ আদালতে দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। প্রথম মামলাটি দায়ের করেছেন কানহাইয়া লাল তেলি হত্যা মামলায় এক অভিযুক্ত। অন্যটি করেছেন ছবির নির্মাতারা। দুটি মামলায় রয়েছে বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে। অভিযুক্তের আইনজীবী মেনকা গুরুস্বামী সুপ্রিম বেঞ্চকে জানান, আবেদনকারী এই যুক্তিতে ছবিটির মুক্তিকে চ্যালেঞ্জ করছেন যে এটি তার ন্যায্য বিচারের অধিকারকে প্রভাবিত করবে। বেঞ্চ বলেছে, তারা কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছেন।

তবে ছবির প্রযোজকের আইনজীবী গৌরব ভাটিয়া আদালতকে আজই এই মামলার শুনানির আর্জি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশ ভুল ছিল। সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন (সিবিএফসি) দ্বারা ছবিটি শংসাপত্র পাওয়ার পরে, এর পক্ষে বৈধতার একটি অনুমান রয়েছে। কিন্তু আদালত ছবির মুক্তির একদিন আগেই স্থগিতাদেশ দেয়। আবেদনকারীদের কেন্দ্রের কাছে পুনর্বিবেচনা আবেদন করার অনুমতি দিয়েও ভুল করেছে। এরপরই বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করেছেন, ১৯৫২ সালের সিনেমাটোগ্রাফি আইনের ৬ নম্বর ধারা কেন্দ্রীয় সরকারকে চলচ্চিত্রের শংসাপত্র বাতিল করার ক্ষমতা দিয়েছে এবং হাইকোর্ট কেবল আবেদনকারীদের বিধিবদ্ধ প্রতিকার পাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। জবাবে ভাটিয়া যুক্তি দেন, যে হাইকোর্ট আবেদনকারীদের শংসাপত্র যাচাই না করেই এই আদেশ দিয়েছে এবং স্থগিতাদেশ নির্মাতাদের বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের পাশাপাশি তাদের ব্যবসা চালানোর অধিকার লঙ্ঘন করেছে। বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, সুবিধার ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব সেইসব পক্ষের উপর বর্তায় যারা সিনেমাটির মুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন, কারণ সিনেমাটি মুক্তি পেলে তাদের আবেদনগুলি অর্থহীন হয়ে যাবে। বিলম্বের কারণে প্রযোজকের যে কোনও ক্ষতি হলে তা আর্থিকভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।

আরও পড়ুন: মাহমুদাবাদ মামলা: তদন্তে দেরি নিয়ে সিটকে ভর্ৎসনায় করল সুপ্রিম কোর্ট

আইনজীবী সিব্বল অবশ্য যুক্তি দিয়েছেন, সিবিএফসি-এর নির্দেশের পর ছবির ৫৫টি জায়গা কাটাছাট করা হয়েছে। আমি একটি বিশেষ ব্যক্তিগত স্ক্রিনিংয়ে ছবিটি দেখেছি। কিন্তু তাতেও বেশকিছু সমস্যা ও অসঙ্গতি রয়েছে। তিনি আদালতকে সাফ বলেন, একটি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো এই ধরনের সিনেমা একটি গণতান্ত্রিক দেশে কোটি কোটি মানুষের চোখের সামনে তা দেখানোর অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।

আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনের এসআইআর বন্ধের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা

আরও পড়ুন: ভারতের সংবিধানই এই অস্পৃশ্যকে সর্বোচ্চ পদে বসিয়েছে : গাভাই

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

‘উদয়পুর ফাইলস’ মামলা: কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় শীর্ষ আদালত

আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম, নয়াদিল্লি: বিতর্কিত সিনেমা ‘উদয়পুর ফাইলস’-এর মুক্তিতে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দেশের শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করে ছবির নির্মাতারা। বুধবার বিতর্কিত সিনেমা সংক্রান্ত সমস্ত আবেদনের শুনানি স্থগিত করল সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের পরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার আজ ছবিটির সিবিএফসি শংসাপত্রের বিরুদ্ধে সংশোধন আবেদনের শুনানি করতে চলেছে। এবিষয়ে আদালত বলেছে, আসা করি কেন্দ্রের কমিটি ‘সময় নষ্ট না করে’ অবিলম্বে সিদ্ধান্ত নেবে। চলচ্চিত্র নির্মাতারা জরুরিতাকে মাথায় রেখে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

বিতর্কিত ‘উদয়পুর ফাইলস’ নিয়ে শীর্ষ আদালতে দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। প্রথম মামলাটি দায়ের করেছেন কানহাইয়া লাল তেলি হত্যা মামলায় এক অভিযুক্ত। অন্যটি করেছেন ছবির নির্মাতারা। দুটি মামলায় রয়েছে বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে। অভিযুক্তের আইনজীবী মেনকা গুরুস্বামী সুপ্রিম বেঞ্চকে জানান, আবেদনকারী এই যুক্তিতে ছবিটির মুক্তিকে চ্যালেঞ্জ করছেন যে এটি তার ন্যায্য বিচারের অধিকারকে প্রভাবিত করবে। বেঞ্চ বলেছে, তারা কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছেন।

তবে ছবির প্রযোজকের আইনজীবী গৌরব ভাটিয়া আদালতকে আজই এই মামলার শুনানির আর্জি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশ ভুল ছিল। সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন (সিবিএফসি) দ্বারা ছবিটি শংসাপত্র পাওয়ার পরে, এর পক্ষে বৈধতার একটি অনুমান রয়েছে। কিন্তু আদালত ছবির মুক্তির একদিন আগেই স্থগিতাদেশ দেয়। আবেদনকারীদের কেন্দ্রের কাছে পুনর্বিবেচনা আবেদন করার অনুমতি দিয়েও ভুল করেছে। এরপরই বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করেছেন, ১৯৫২ সালের সিনেমাটোগ্রাফি আইনের ৬ নম্বর ধারা কেন্দ্রীয় সরকারকে চলচ্চিত্রের শংসাপত্র বাতিল করার ক্ষমতা দিয়েছে এবং হাইকোর্ট কেবল আবেদনকারীদের বিধিবদ্ধ প্রতিকার পাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। জবাবে ভাটিয়া যুক্তি দেন, যে হাইকোর্ট আবেদনকারীদের শংসাপত্র যাচাই না করেই এই আদেশ দিয়েছে এবং স্থগিতাদেশ নির্মাতাদের বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের পাশাপাশি তাদের ব্যবসা চালানোর অধিকার লঙ্ঘন করেছে। বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, সুবিধার ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব সেইসব পক্ষের উপর বর্তায় যারা সিনেমাটির মুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন, কারণ সিনেমাটি মুক্তি পেলে তাদের আবেদনগুলি অর্থহীন হয়ে যাবে। বিলম্বের কারণে প্রযোজকের যে কোনও ক্ষতি হলে তা আর্থিকভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।

আরও পড়ুন: মাহমুদাবাদ মামলা: তদন্তে দেরি নিয়ে সিটকে ভর্ৎসনায় করল সুপ্রিম কোর্ট

আইনজীবী সিব্বল অবশ্য যুক্তি দিয়েছেন, সিবিএফসি-এর নির্দেশের পর ছবির ৫৫টি জায়গা কাটাছাট করা হয়েছে। আমি একটি বিশেষ ব্যক্তিগত স্ক্রিনিংয়ে ছবিটি দেখেছি। কিন্তু তাতেও বেশকিছু সমস্যা ও অসঙ্গতি রয়েছে। তিনি আদালতকে সাফ বলেন, একটি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো এই ধরনের সিনেমা একটি গণতান্ত্রিক দেশে কোটি কোটি মানুষের চোখের সামনে তা দেখানোর অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।

আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনের এসআইআর বন্ধের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা

আরও পড়ুন: ভারতের সংবিধানই এই অস্পৃশ্যকে সর্বোচ্চ পদে বসিয়েছে : গাভাই