০৮ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গণধর্ষণ ও খুনের ১১ জন অপরাধীকে মুক্তি দেওয়ার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন পীড়িতা বিলকিস বানু

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১ ডিসেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার
  • / 65

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ২০০২ সালের ভয়াবহ মুসলিম বিরোধী গুজরাত দাঙ্গায় গণধর্ষণ ও খুনের ১১ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে মুক্তি দেওয়ার বিরুদ্ধে শেষমেশ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন পীড়িতা বিলকিস বানু।

সুপ্রিম কোর্ট তাদের একটি রায়ে গুজরাত সরকারকে অনুমতি দিয়েছিল এই ১১ জন অপরাধীকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে। বিলকিস বানু সুপ্রিম কোর্টের সেই রায়ের পুনর্বিবেচনার আর্জিও জানিয়েছেন। বুধবার সকালে বিলকিস বানুর আইনজীবী শোভা গুপ্তা বানুর আবেদনের বিষয়টি উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের সামনে। আইনজীবী গুপ্তা বিলকিস বানুর মামলা শুনানির জন্য বিচারপতি অজয় রাস্তোগির বেঞ্চে পাঠানোর বিষয়ে আপত্তি জানান। কারণ বিচারপতি অজয় রাস্তোগির বেঞ্চ গুজরাত সরকারকে উক্ত ১১ জন অপরাধীর মুক্তির আবেদন বিবেচনা করার রায় দিয়েছিল।

আরও পড়ুন: মাহমুদাবাদ মামলা: তদন্তে দেরি নিয়ে সিটকে ভর্ৎসনায় করল সুপ্রিম কোর্ট

এই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, কিন্তু রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি তো করতে হবে যে রায় দিয়েছিল, সেই বিচারপতি অজয় রাস্তোগির বেঞ্চকেই। তারপর প্রধান বিচারপতি বিবেচনা করবেন মূল মামলাটি কোন বেঞ্চে পাঠানো হবে। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, তিনি একটি সাংবিধানিক বেঞ্চে রয়েছেন, তাই তিনি মামলাটি শুনতে পারছেন না।

আরও পড়ুন: ‘উদয়পুর ফাইলস’ মামলা: কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় শীর্ষ আদালত

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের মে মাসে বিচারপতি রাস্তোগির বেঞ্চ তাদের রায়ে বলেছিল, ১১ জন অপরাধীকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি গুজরাত সরকার বিবেচনা করতে পারে। কারণ যে অপরাধে ১১ জনের শাস্তি হয়েছে সেই অপরাধ ঘটেছে গুজরাতে। অথচ এর আগে গুজরাত হাইকোর্ট এই মামলার রায় দিতে গিয়ে বলেছিল ১১ জন অপরাধীকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে শুধু মহারাষ্ট্র সরকার। কারণ ১১ জন অপরাধীর বিচার হয়েছিল মুম্বইতে।

আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনের এসআইআর বন্ধের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা

২০২২ সালের ১৫ আগস্ট ১১ জন অপরাধীকে মুক্তি দেওয়া হয়। তাদের মুক্তির পর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ তাদের নায়কোচিত সম্মানে ভূষিত করে। ফুল এবং মিষ্টি বিতরণ করে ১১ জন অপরাধীকে বরণ করা হয়। এই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। ১১ জন অপরাধীর মুক্তির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে একগুচ্ছ মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। মামলাকারীদের মধ্যে রয়েছেন সিপিএম নেত্রী সুভাষিনী আলি, সাংবাদিক রেবতী লাল, টিএমসি সাংসদ মহুয়া মৈত্র, প্রাক্তন আইপিএস অফিসার মীরান চাড্ডা বোরওয়ানকর প্রমুখ।

গুজরাত সরকার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা করে বলেছিল ১১ জন অপরাধীর ভালো চালচলনের জন্য তাদের মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ২০০২ সালে বিলকিস বানুর ৩ বছরের শিশুকন্যা-সহ তাঁর পরিবারের ৯ জনকে খুন করে বিলকিস বানুকে গণধর্ষণ করেছিল এই ১১ জন অপরাধী। এই ধরনের জঘন্য অপরাধের পরও এদের মুক্তি দিয়েছে বিজেপি সরকার গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

গণধর্ষণ ও খুনের ১১ জন অপরাধীকে মুক্তি দেওয়ার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন পীড়িতা বিলকিস বানু

আপডেট : ১ ডিসেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ২০০২ সালের ভয়াবহ মুসলিম বিরোধী গুজরাত দাঙ্গায় গণধর্ষণ ও খুনের ১১ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে মুক্তি দেওয়ার বিরুদ্ধে শেষমেশ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন পীড়িতা বিলকিস বানু।

সুপ্রিম কোর্ট তাদের একটি রায়ে গুজরাত সরকারকে অনুমতি দিয়েছিল এই ১১ জন অপরাধীকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে। বিলকিস বানু সুপ্রিম কোর্টের সেই রায়ের পুনর্বিবেচনার আর্জিও জানিয়েছেন। বুধবার সকালে বিলকিস বানুর আইনজীবী শোভা গুপ্তা বানুর আবেদনের বিষয়টি উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের সামনে। আইনজীবী গুপ্তা বিলকিস বানুর মামলা শুনানির জন্য বিচারপতি অজয় রাস্তোগির বেঞ্চে পাঠানোর বিষয়ে আপত্তি জানান। কারণ বিচারপতি অজয় রাস্তোগির বেঞ্চ গুজরাত সরকারকে উক্ত ১১ জন অপরাধীর মুক্তির আবেদন বিবেচনা করার রায় দিয়েছিল।

আরও পড়ুন: মাহমুদাবাদ মামলা: তদন্তে দেরি নিয়ে সিটকে ভর্ৎসনায় করল সুপ্রিম কোর্ট

এই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, কিন্তু রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি তো করতে হবে যে রায় দিয়েছিল, সেই বিচারপতি অজয় রাস্তোগির বেঞ্চকেই। তারপর প্রধান বিচারপতি বিবেচনা করবেন মূল মামলাটি কোন বেঞ্চে পাঠানো হবে। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, তিনি একটি সাংবিধানিক বেঞ্চে রয়েছেন, তাই তিনি মামলাটি শুনতে পারছেন না।

আরও পড়ুন: ‘উদয়পুর ফাইলস’ মামলা: কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় শীর্ষ আদালত

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের মে মাসে বিচারপতি রাস্তোগির বেঞ্চ তাদের রায়ে বলেছিল, ১১ জন অপরাধীকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি গুজরাত সরকার বিবেচনা করতে পারে। কারণ যে অপরাধে ১১ জনের শাস্তি হয়েছে সেই অপরাধ ঘটেছে গুজরাতে। অথচ এর আগে গুজরাত হাইকোর্ট এই মামলার রায় দিতে গিয়ে বলেছিল ১১ জন অপরাধীকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে শুধু মহারাষ্ট্র সরকার। কারণ ১১ জন অপরাধীর বিচার হয়েছিল মুম্বইতে।

আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনের এসআইআর বন্ধের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা

২০২২ সালের ১৫ আগস্ট ১১ জন অপরাধীকে মুক্তি দেওয়া হয়। তাদের মুক্তির পর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ তাদের নায়কোচিত সম্মানে ভূষিত করে। ফুল এবং মিষ্টি বিতরণ করে ১১ জন অপরাধীকে বরণ করা হয়। এই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। ১১ জন অপরাধীর মুক্তির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে একগুচ্ছ মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। মামলাকারীদের মধ্যে রয়েছেন সিপিএম নেত্রী সুভাষিনী আলি, সাংবাদিক রেবতী লাল, টিএমসি সাংসদ মহুয়া মৈত্র, প্রাক্তন আইপিএস অফিসার মীরান চাড্ডা বোরওয়ানকর প্রমুখ।

গুজরাত সরকার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা করে বলেছিল ১১ জন অপরাধীর ভালো চালচলনের জন্য তাদের মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ২০০২ সালে বিলকিস বানুর ৩ বছরের শিশুকন্যা-সহ তাঁর পরিবারের ৯ জনকে খুন করে বিলকিস বানুকে গণধর্ষণ করেছিল এই ১১ জন অপরাধী। এই ধরনের জঘন্য অপরাধের পরও এদের মুক্তি দিয়েছে বিজেপি সরকার গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে।