২৩ জুন ২০২৫, সোমবার, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজ্যকে না জানিয়ে ভিনরাজ্যের বাঙালিকে ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে পুশব্যাক নয়, কড়া বার্তা নবান্নর

চামেলি দাস
  • আপডেট : ২৩ জুন ২০২৫, সোমবার
  • / 13

ভিনরাজ্যে থাকা বাঙালিকে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ তকমা দিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার সাম্প্রতিক ঘটনায় কড়া অবস্থান নিতে চলেছে রাজ্য প্রশাসন। প্রশাসনের শীর্ষ মহলের সিদ্ধান্ত, এই ধরনের কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার আগে রাজ্যকে লিখিতভাবে জানানো আবশ্যিক করতে হবে। এই বিষয়ে কেন্দ্রকে স্পষ্ট বার্তা দিতে চলেছে নবান্ন।

সম্প্রতি স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব¨্যােপাধ্যায় নবান্নে প্রশ্ন তুলেছিলেন, বাংলা ভাষা বলা কি অপরাধ? রাজ্যের বাইরে কেউ বাংলায় কথা বললেই ‘পুশব্যাক’ করে বাংলাদেশে পাঠানো হবে? এই বিষয়ে কেন্দ্র এবং ডাবল ইঞ্জিন সরকারের ওপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মমতা ব¨্যােপাধ্যায়। বিধানসভাতেও মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, বৈধ নাগরিকদের জোর করে ঠেলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা শুধু বে-আইনি নয়, বরং মানবাধিকার লঙ্ঘনেরই নজির। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতোই এবার বাঙালিদের ভিনরাজ্য থেকে বাংলাদেশে পুশব্যাক নিয়ে কেন্দ্রকে কড়া বার্তা দিতে চলেছে নবান্ন।

আরও পড়ুন: একশো দিনের কাজে গত চার বছরের বকেয়া টাকা মেটাক কেন্দ্র, দাবি মুখ্যমন্ত্রীর

সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান ও উত্তর চব্বিশ পরগণার মোট সাতজন পরিযায়ী শ্রমিককে মহারাষ্ট্র পুলিশ ‘বাংলাদেশি’ অনুপ্রবেশকারী তকমা দিয়ে বিএসএফ-এর হাতে তুলে দেয়। এই বিষয়ে রাজ্য সরকারকে কোনও তথ্য না দিয়ে ভিনরাজ্য থেকেওই বাংলার বাসি¨াদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে ওই ব্যক্তিরা বাংলাদেশ থেকে তাদের ™রিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে রাজ্য সরকার বিষয়টি জানতে পারে। তারপর নবান্নের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে শুরু হয় তাঁদের ফেরানোর প্রক্রিয়া। সেই মতো মুর্শিদাবাদের চারজন, পূর্ব বর্ধমানের একজন এবং উত্তর চব্বিশ পরগণার একজনকে বাংলায় ফেরানো হয়।

আরও পড়ুন: ‘আপনার মন্ত্রী তাঁকেও ছাড়লেন না’, কর্নেল কুরেশিকে করা বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে সবর মমতা

নবান্নের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, রাজ্যের বাসি¨াদের এভাবে নির্বিচারে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ঘটনা বারবার ঘটছে। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী এই ধরনের ঘটনা নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের সমান। এবার থেকে রাজ্য সরকার তা কোনওভাবেই মেনে নেবে না। প্রয়োজনে প্রতিটি ঘটনায় আইনিভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই ধরনের ঘটনা ঘটলে কেন্দ্র-রাজ্যের একসঙ্গে তদন্ত করা উচিত বলে মনে করছেন মানবাধিকার কর্মীরাও।

আরও পড়ুন: ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ পালনে রাজ্যকে চিঠি কেন্দ্রের, ‘আপনারা গণতন্ত্র মানেন?’ নিশানা মুখ্যমন্ত্রীর

নবান্নের কড়া অবস্থান অনুযায়ী, কোনও রাজ্যে বাংলার কেউ আটক হলে বা তাঁর নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠলে প্রথমে তা জানাতে হবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। তারপর রাজ্য সেই ব্যক্তির যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখে কেন্দ্রকে রিপোর্ট দেবে। অনুপ্রবেশকারী প্রমাণিত হলে তবেই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

নবান্ন সূত্রে খবর, এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে শীঘ্রই চিঠি পাঠানো হতে পারে। একই সঙ্গে বিএসএফ এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকেও একই বার্তা দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে কোনও একতরফা ‘™ুশব্যাক’ হলে কড়া প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রাজ্যকে না জানিয়ে ভিনরাজ্যের বাঙালিকে ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে পুশব্যাক নয়, কড়া বার্তা নবান্নর

আপডেট : ২৩ জুন ২০২৫, সোমবার

ভিনরাজ্যে থাকা বাঙালিকে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ তকমা দিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার সাম্প্রতিক ঘটনায় কড়া অবস্থান নিতে চলেছে রাজ্য প্রশাসন। প্রশাসনের শীর্ষ মহলের সিদ্ধান্ত, এই ধরনের কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার আগে রাজ্যকে লিখিতভাবে জানানো আবশ্যিক করতে হবে। এই বিষয়ে কেন্দ্রকে স্পষ্ট বার্তা দিতে চলেছে নবান্ন।

সম্প্রতি স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব¨্যােপাধ্যায় নবান্নে প্রশ্ন তুলেছিলেন, বাংলা ভাষা বলা কি অপরাধ? রাজ্যের বাইরে কেউ বাংলায় কথা বললেই ‘পুশব্যাক’ করে বাংলাদেশে পাঠানো হবে? এই বিষয়ে কেন্দ্র এবং ডাবল ইঞ্জিন সরকারের ওপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মমতা ব¨্যােপাধ্যায়। বিধানসভাতেও মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, বৈধ নাগরিকদের জোর করে ঠেলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা শুধু বে-আইনি নয়, বরং মানবাধিকার লঙ্ঘনেরই নজির। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতোই এবার বাঙালিদের ভিনরাজ্য থেকে বাংলাদেশে পুশব্যাক নিয়ে কেন্দ্রকে কড়া বার্তা দিতে চলেছে নবান্ন।

আরও পড়ুন: একশো দিনের কাজে গত চার বছরের বকেয়া টাকা মেটাক কেন্দ্র, দাবি মুখ্যমন্ত্রীর

সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান ও উত্তর চব্বিশ পরগণার মোট সাতজন পরিযায়ী শ্রমিককে মহারাষ্ট্র পুলিশ ‘বাংলাদেশি’ অনুপ্রবেশকারী তকমা দিয়ে বিএসএফ-এর হাতে তুলে দেয়। এই বিষয়ে রাজ্য সরকারকে কোনও তথ্য না দিয়ে ভিনরাজ্য থেকেওই বাংলার বাসি¨াদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে ওই ব্যক্তিরা বাংলাদেশ থেকে তাদের ™রিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে রাজ্য সরকার বিষয়টি জানতে পারে। তারপর নবান্নের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে শুরু হয় তাঁদের ফেরানোর প্রক্রিয়া। সেই মতো মুর্শিদাবাদের চারজন, পূর্ব বর্ধমানের একজন এবং উত্তর চব্বিশ পরগণার একজনকে বাংলায় ফেরানো হয়।

আরও পড়ুন: ‘আপনার মন্ত্রী তাঁকেও ছাড়লেন না’, কর্নেল কুরেশিকে করা বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে সবর মমতা

নবান্নের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, রাজ্যের বাসি¨াদের এভাবে নির্বিচারে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ঘটনা বারবার ঘটছে। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী এই ধরনের ঘটনা নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের সমান। এবার থেকে রাজ্য সরকার তা কোনওভাবেই মেনে নেবে না। প্রয়োজনে প্রতিটি ঘটনায় আইনিভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই ধরনের ঘটনা ঘটলে কেন্দ্র-রাজ্যের একসঙ্গে তদন্ত করা উচিত বলে মনে করছেন মানবাধিকার কর্মীরাও।

আরও পড়ুন: ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ পালনে রাজ্যকে চিঠি কেন্দ্রের, ‘আপনারা গণতন্ত্র মানেন?’ নিশানা মুখ্যমন্ত্রীর

নবান্নের কড়া অবস্থান অনুযায়ী, কোনও রাজ্যে বাংলার কেউ আটক হলে বা তাঁর নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠলে প্রথমে তা জানাতে হবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। তারপর রাজ্য সেই ব্যক্তির যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখে কেন্দ্রকে রিপোর্ট দেবে। অনুপ্রবেশকারী প্রমাণিত হলে তবেই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

নবান্ন সূত্রে খবর, এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে শীঘ্রই চিঠি পাঠানো হতে পারে। একই সঙ্গে বিএসএফ এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকেও একই বার্তা দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে কোনও একতরফা ‘™ুশব্যাক’ হলে কড়া প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।