০২ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসরাইলকে ৪৩৬৫ কোটি টাকার অস্ত্র দিচ্ছে আমেরিকা, দেওয়া হবে ‘বম্ব গাইডেন্স কিট’ও

চামেলি দাস
  • আপডেট : ২ জুলাই ২০২৫, বুধবার
  • / 49

 

 

আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধ থামিয়ে ছেলেকে ফিরিয়ে আনুন, ট্রাম্পের কাছে কাতর আর্জি এক বন্দি ইসরায়েলি নাগরিকের মায়ের

পশ্চিম এশিয়ায় নতুন করে সামরিক উত্তেজনার আবহে ইসরাইলের হাতে ৫১ কোটি ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৪৩৬৫ কোটি টাকার অস্ত্র ও গোলাবারুদ তুলে দিচ্ছে আমেরিকা। গত ১৩ জুন ইরানের পরমাণু ও সামরিক কেন্দ্রের উপর ইসরাইলি বিমান হানার পরে দুই দেশের মধ্যে টানা ১২ দিন সংঘর্ষ হয়। পরে যুদ্ধবিরতি হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয় বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা। ঠিক সেই সময়েই ইসরাইলকে বিপুল পরিমাণ সামরিক সহায়তা দিতে উদ্যোগী হল ওয়াশিংটন।

আরও পড়ুন: ইসরাইলের উসকানিমূলক আচরণ নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি: মিশরের প্রেসিডেন্ট সিসি

মার্কিন প্রতিরক্ষা নিরাপত্তা সহযোগিতা সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই অস্ত্র বিক্রি ইসরাইলকে বর্তমান ও ভবিষ্যতের নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় সাহায্য করবে। তএতে করে তারা সীমান্ত, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এবং নাগরিক বসতিগুলিকে আরও ভালোভাবে রক্ষা করতে পারবে,দ জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

আরও পড়ুন: ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লা নেতা হাসান নাসরুল্লাহর প্রাক্তন দেহরক্ষী নিহত 

এই সামরিক প্যাকেজে রয়েছে প্রায় সাত হাজার ‘বম্ব গাইডেন্স কিট’, যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে বোমা ফেলানো সম্ভব। এই কিটগুলোর মধ্যে রয়েছে , এমকে-৮২ বোমার জন্য ৩,২৮০টি কেএমইউ ৫৭২এফ/বি ইউনিট এবং বিএলইউ-১০৯ বোমার জন্য ৩,৮৮৫টি কেএমইউ ৫৫৮বি/বি ইউনিট। সামরিক ভাষায় এগুলিকে ‘জয়েন্ট ডিরেক্ট অ্যাটাক মিউনিশন’ বলা হয়।

তবে এই সিদ্ধান্তে এখনো সিলমোহর দেয়নি মার্কিন কংগ্রেস। তবুও অনেকেই মনে করছেন, ইরান ঘিরে ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া অবস্থানেরই প্রতিফলন এই পদক্ষেপ।

ট্রাম্পের প্রথম প্রেসিডেন্সির সময় ২০১৮ সালে তিনি ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তি থেকে আমেরিকাকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে তিনি কূটনৈতিক সমঝোতার কথা বললেও, শেষপর্যন্ত ইরানের পরমাণু স্থাপনায় মার্কিন হামলার নির্দেশ দেন। এ নিয়ে পশ্চিম এশিয়ায় নতুন করে সংঘাতের সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি তেহরানকে আর কোনওভাবেই পারমাণবিক স্থাপনা গড়ে তুলতে দেবেন না। বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, তাই ভবিষ্যতে নতুন করে ইরান-ইসরাইল সংঘাত যে কোনও সময় শুরু হতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার এই অস্ত্র বিক্রি সেই সংঘাতের সম্ভাবনাকেই আরও উসকে দিচ্ছে বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে ওয়াশিংটনের মতে, ইসরাইলের আত্মরক্ষার ক্ষমতা দৃঢ় রাখা তাদের জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে জড়িত। সেই কারণেই তেল আবিবকে শক্তিশালী করার পদক্ষেপ বলে দাবি করা হচ্ছে বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকেও। তবে সমালোচকরা বলছেন, গাজা বা পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার বদলে আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত অঞ্চলটিকে আরও অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ইসরাইলকে ৪৩৬৫ কোটি টাকার অস্ত্র দিচ্ছে আমেরিকা, দেওয়া হবে ‘বম্ব গাইডেন্স কিট’ও

আপডেট : ২ জুলাই ২০২৫, বুধবার

 

 

আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধ থামিয়ে ছেলেকে ফিরিয়ে আনুন, ট্রাম্পের কাছে কাতর আর্জি এক বন্দি ইসরায়েলি নাগরিকের মায়ের

পশ্চিম এশিয়ায় নতুন করে সামরিক উত্তেজনার আবহে ইসরাইলের হাতে ৫১ কোটি ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৪৩৬৫ কোটি টাকার অস্ত্র ও গোলাবারুদ তুলে দিচ্ছে আমেরিকা। গত ১৩ জুন ইরানের পরমাণু ও সামরিক কেন্দ্রের উপর ইসরাইলি বিমান হানার পরে দুই দেশের মধ্যে টানা ১২ দিন সংঘর্ষ হয়। পরে যুদ্ধবিরতি হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয় বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা। ঠিক সেই সময়েই ইসরাইলকে বিপুল পরিমাণ সামরিক সহায়তা দিতে উদ্যোগী হল ওয়াশিংটন।

আরও পড়ুন: ইসরাইলের উসকানিমূলক আচরণ নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি: মিশরের প্রেসিডেন্ট সিসি

মার্কিন প্রতিরক্ষা নিরাপত্তা সহযোগিতা সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই অস্ত্র বিক্রি ইসরাইলকে বর্তমান ও ভবিষ্যতের নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় সাহায্য করবে। তএতে করে তারা সীমান্ত, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এবং নাগরিক বসতিগুলিকে আরও ভালোভাবে রক্ষা করতে পারবে,দ জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

আরও পড়ুন: ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লা নেতা হাসান নাসরুল্লাহর প্রাক্তন দেহরক্ষী নিহত 

এই সামরিক প্যাকেজে রয়েছে প্রায় সাত হাজার ‘বম্ব গাইডেন্স কিট’, যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে বোমা ফেলানো সম্ভব। এই কিটগুলোর মধ্যে রয়েছে , এমকে-৮২ বোমার জন্য ৩,২৮০টি কেএমইউ ৫৭২এফ/বি ইউনিট এবং বিএলইউ-১০৯ বোমার জন্য ৩,৮৮৫টি কেএমইউ ৫৫৮বি/বি ইউনিট। সামরিক ভাষায় এগুলিকে ‘জয়েন্ট ডিরেক্ট অ্যাটাক মিউনিশন’ বলা হয়।

তবে এই সিদ্ধান্তে এখনো সিলমোহর দেয়নি মার্কিন কংগ্রেস। তবুও অনেকেই মনে করছেন, ইরান ঘিরে ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া অবস্থানেরই প্রতিফলন এই পদক্ষেপ।

ট্রাম্পের প্রথম প্রেসিডেন্সির সময় ২০১৮ সালে তিনি ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তি থেকে আমেরিকাকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে তিনি কূটনৈতিক সমঝোতার কথা বললেও, শেষপর্যন্ত ইরানের পরমাণু স্থাপনায় মার্কিন হামলার নির্দেশ দেন। এ নিয়ে পশ্চিম এশিয়ায় নতুন করে সংঘাতের সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি তেহরানকে আর কোনওভাবেই পারমাণবিক স্থাপনা গড়ে তুলতে দেবেন না। বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, তাই ভবিষ্যতে নতুন করে ইরান-ইসরাইল সংঘাত যে কোনও সময় শুরু হতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার এই অস্ত্র বিক্রি সেই সংঘাতের সম্ভাবনাকেই আরও উসকে দিচ্ছে বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে ওয়াশিংটনের মতে, ইসরাইলের আত্মরক্ষার ক্ষমতা দৃঢ় রাখা তাদের জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে জড়িত। সেই কারণেই তেল আবিবকে শক্তিশালী করার পদক্ষেপ বলে দাবি করা হচ্ছে বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকেও। তবে সমালোচকরা বলছেন, গাজা বা পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার বদলে আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত অঞ্চলটিকে আরও অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।