নিজ হাতে সবজি ফলিয়ে তাক লাগালেন স্বয়ং বিডিও

- আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২১, সোমবার
- / 5
শুভায়ুর রহমানঃ আজওয়া খেজুর– আলফানসো কিংবা লালমনির মতো আম সারি দিয়ে লাগানো। গোবর সার কিছুটা ছড়িয়ে আবার সবজি বাগানে ঢুকে পরিচর্যায় ব্যস্ত। মাচায় ঝুলে রয়েছে শশা– ঝিঙে– লাউ। কাঁঠালগাছের চারাটাকে জড়িয়ে ধরেছে কুমড়োর লতা। তা সরিয়ে নিড়ানি হাতে পিঁয়াজ– বাঁধাকপির মধ্যে বসে পড়েছেন ঘাস তুলতে।

সবজি ক্ষেত নিড়াতে নিড়াতেই বললেন– ফুলকপি এখনই খাওয়ার সময়। বাঁধাকপিও বেশ সাইজের হয়েছে। এটা উঠে গেলে আরেকবার কপি চাষ করা যাবে– এখন শীতের শুরু। দৃশ্যটি সাধারণত কোনও কৃষকের মনে হলেও তা কিন্তু নয়। বাস্তবের জমিতেই নিজ হাতে সবজি ফলাচ্ছেন খোদ বিডিও। ঘটনাটি বীরভূমের মুরারই-২ ব্লকের। বিডিও নাজির হোসেন এক্কেবারে সার-কীটনাশক প্রয়োগ না করেই অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করছেন। উৎপাদিত সবজি নিজেও যেমন খাচ্ছেন– ব্লকের কোয়ার্টারে থাকা অন্য কর্মীও ভাগ পাচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন বিডিও নাজির হোসেন।
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর। উত্তর ২৪ পরগনার প্রান্তিক এক ক্ষুদ্র কৃষক পরিবারে বেড়ে ওঠা। সেই সুবাদে বিডিও সাহেব আগে থেকেই চাষের কাজ জানেন।
স্বভাবতই মুরারই-২ ব্লক চত্বরে চাষ করার সুযোগ থাকায় তিনি নিজে গড়ে তুলেছেন সবজি ও ফলের বাগান।

বিডিও জানাচ্ছেন– ব্লক অফিসের কোয়ার্টারের পাশেই কাঠা ছ’য়েক পোড়ো জমি ছিল। মনে হল ব্লকটাকে সাজানো উচিত। তাই সবজি চাষ শুরু করি। ২০২০ সালের নভেম্বরে মুরারই-২ ব্লকে জয়েন করি। তারপর থেকে যতটা পারছি কাজ করার চেষ্টা করছি। সবজি বাগানে ক্যাপসিকাম– লঙ্কা– ঢ্যাঁড়শ সহ কুড়ি রকমের সবজি চাষ হচ্ছে। এ ছাড়া সবজি ক্ষেতের বাইরেও বিভিন্ন ফলের গাছ লাগানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই– মাত্র এক বছরের মধ্যে বিভিন্ন কাজ করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
বাউন্ডারি ওয়াল– চিলড্রেন্স পার্ক– দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে মায়েদের জন্য স্তন্যপান কক্ষ বেশ নজর কেড়েছে। পাশাপাশি দুয়ারে সরকারের সময় যেসকল মায়েদের কোলে বাচ্চা ছিল– তাদের হাতে ফলের চারাগাছ ও চকোলেট প্রদান করা হয়। এবার ব্লক চত্বরেই বিডিও নিজহাতে সার– কীটনাশক ছাড়াই সবজি চাষ করছেন।
ঘাসের গোড়ায় নিড়ানি বসিয়েই বিডিও নাজির হোসেন হেসে বললেন– ‘কাজ জানি– আর সুযোগও রয়েছে। তাই অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করছি। আমি যেমন খাচ্ছি– অন্য কর্মীও পাচ্ছেন।’