গাজা-প্রতিবাদে বাধা: বোম্বে হাইকোর্ট এর মত অসাংবিধানিক, মত কাটজুর

- আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৫, রবিবার
- / 14
কোথায় গাজায় কী হচ্ছে, তা নিয়ে আপনাদের এত মাথাব্যথা কেন? অত দূরে চোখ যায় কেন? সামনে কী হচ্ছে দেখুন। এরকম বিস্তর জ্ঞান দেন দুই বিচারপতি। এদিন তার তীব্র প্রতিবাদ করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মার্কণ্ডেয় কাটজু। কাটজু বলেছেন, বোম্বে হাইকোর্ট যা করেছে তা সংবিধানের ১৯(১খ) ধারার বিরোধী। বিচারপতিরা আবেদনকারীদের দেশপ্রেম দেখাতে পরামর্শ দিয়েছিলেন।
কাটজুর প্রশ্ন, বিশ্বের কোনও দেশে গণহত্যা চললে, মানবতার চরম অবমাননা হলে তার বিরোধিতা করা কি দেশপ্রেম নয়? বোম্বে হাইকোর্টের ওই বিচারপতিদের বলছি, সংবিধানের ১৯(১খ) ধারায় কী বলা আছে দেখুন। বলা হয়েছে, দেশের যে কোনও নাগরিক অস্ত্র ছাড়া শান্তিপূর্ণ ভাবে সমবেত হতে পারেন। কাটজু বলেছেন, আমার মনে হয়, ওই দুই বিচারপতি সংবিধানের ওই ধারাকে সংশোধন করে ঠিক করেছেন, দেশের যে কোনও নাগরিকের শান্তিপূর্ণ ভাবে অস্ত্র ছাড়া সমবেত হওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে শর্ত হল , বিদেশি কোনও বিষয়ে আলোচনা করা যাবে না, শুধু মাত্র দেশীয় ব্যাপারে আলোচনা করা যাবে।
কিন্তু বিচারপতিদের তো সংবিধান সংশোধনের অধিকার নেই। একমাত্র সংসদের দুই কক্ষ দুই তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতা থাকলে সংবিধান সংশোধন করতে পারে। সেদিক থেকে বোম্বে হাইকোর্টের ওই বিচারপতিরা সংসদের এক্তিয়ারে নাক গলিয়েছেন। আরাবলী গল্ফ ক্লাব বনাম চন্দ্র হাসের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্পষ্ট বলা আছে, সংসদ এবং বিচার বিভাগের এক্তিয়ারের কথা। তা ওই বিচারপতিরা অমান্য করেছেন বলে মনে করেন কাটজু। কাটজু আরও বলেছেন, ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ভারত গণতান্ত্রিক দেশ।
এটা কী ধরনের গণতন্ত্র যেখানে নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ ভাবে কোথাও সমবেত হয়ে দেশ হোক, বিদেশ হোক কোনও সমস্যার ব্যাপারে মতপ্রকাশে বাধা দেওয়া হচ্ছে? বোম্বে হাইকোর্টের মত মেনে নেওয়া হলে এবার অন্য কোনও আদালত এক কদম এগিয়ে গিয়ে বলবে, সংবিধানের ১৯(১খ) ধারা অনুযায়ী দেশের যে কোনও নাগরিকের শান্তিপূর্ণ ভাবে সমবেত হওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে শর্ত হল, সেখানে সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না। আদালতের এই হাল হলে গণতন্ত্রের কী অবশিষ্ট থাকে? প্রশ্ন কাটজুর।