গাজায় ফের ত্রাণ সংগ্রহের সময় ইসরায়েলের নির্মম হামলা, নিহত ৯৩ ফিলিস্তিনি!

- আপডেট : ২১ জুলাই ২০২৫, সোমবার
- / 45
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: গাজা উপত্যকার ধ্বংস স্তুপে দাঁড়িয়ে অসহায় মানুষগুলো ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে ত্রাণ সংগ্রহে এসেছিল। কিন্তু খাবার নিতে এসে জুটলো গুলি! রবিবার গাজায় ত্রাণ শিবিরে খাবার নিতে এসে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে অন্তত ৯৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, গাজার উত্তরে ট্রাকবোঝাই ত্রাণ পৌঁছানোর সময় একসঙ্গে ৮০ জননিহত হন। দক্ষিণে রাফাহের কাছে একটি ত্রাণকেন্দ্রের সামনে গুলিতে প্রাণ হারান ৯ জন। খান ইউনিসের আরেকটি ত্রাণকেন্দ্রের কাছেও ৪ জন নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খাদ্য বহনকারী ২৫টি ট্রাকের একটি বহর গাজা সিটির কাছে পৌঁছালে বিপুলসংখ্যক ক্ষুধার্ত মানুষ ভিড় করে। এই ভিড়ের মধ্যেই গুলি চালানো হয়। সংস্থাটি এই ভয়াবহ ঘটনাকে “অগ্রহণযোগ্য সহিংসতা” বলে নিন্দা জানিয়েছে।
তবে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী নিহতের সংখ্যা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে দাবি করেছে, গাজা শহরের কাছে হাজারো মানুষের জমায়েতের সময় নিজেদের ওপর আসন্ন হুমকি ঠেকাতে তারা সতর্কতামূলক গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছিল।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী যাই দাবি করুক, কিন্তু বাস্তবতা বলছে, প্রতিদিনই গাজার নিরীহ মানুষগুলো খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে মৃত্যুর মুখে পড়ছে। জাতিসংঘের তথ্য বলছে, মে মাসের শেষ থেকে ত্রাণ সংগ্রহের পথে প্রায় ৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজা শহরের ৩৬ বছর বয়সী কাসেম আবু খাতের বলেন, “এক ব্যাগ আটা সংগ্রহের আশায় আমি দৌড়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু সেখানে পৌঁছে দেখি হাজারো ক্ষুধার্ত মানুষের মরিয়া ভিড়- ঠেলাঠেলি আর হাহাকার।”
তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “ট্যাংকগুলো আমাদের দিকে নির্বিচারে শেল ছুড়ছিল, আর ইসরায়েলি সেনারা এমনভাবে গুলি চালাচ্ছিল
যেন জঙ্গলে পশু শিকার করছে।”
তিনি বলেন, “আমার চোখের সামনেই ডজন ডজন মানুষ প্রাণ হারাল। কেউ কাউকে বাঁচাতে পারছিল না!”
বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, বর্তমানে গাজায় ২১ লাখ মানুষ মাত্র ১২ শতাংশ এলাকায় গাদাগাদি করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে। পর্যাপ্ত খাবার, পানি, ওষুধ—কিছুই নেই। ক্ষুধায় কাতর মানুষগুলো ত্রাণের আশায় প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই রাস্তায় নামছে। আর সেই ত্রাণের লাইনে দাঁড়িয়েও ইসরাইলের হাত থেকে রেহায় নেই।
উল্লেখ্য, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৫৮,৮৯৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।