ভারতীয় সংস্কৃতিতে গ্রহণযোগ্য নয়, সুপ্রিম কোর্টে সমকামী বিয়ের বিরোধিতা কেন্দ্রের
ইমামা খাতুন
- আপডেট :
১২ মার্চ ২০২৩, রবিবার
- / 19
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: সমলিঙ্গে বিয়ের অধিকার পেতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন সমকামীরা। সোমবার সেই মামলার শুনানি হবে। রবিবার সুপ্রিম কোর্টে সমলিঙ্গ বিবাহ আইনের বিরোধিতা করল কেন্দ্র।
হলফনামা দিয়ে কেন্দ্র জানাল, ‘ভারতীয় পারিবারিক সম্পর্কের সঙ্গে সমকামী সম্পর্ককের তুলনা চলে না। ভারতীয় পরিবারের ধারণা হল স্বামী, স্ত্রী এবং তাঁদের সন্তান।’
কেন্দ্রের তরফে আরও জানানো হয়, সমলিঙ্গের সম্পর্ককে আইনি বৈধতা দেওয়ার মানে এই নয় যে সমলিঙ্গের বৈবাহিক সম্পর্ককে বৈধতা দিতে হবে। আগের মতই ‘সামাজিক কারণে’ সমলিঙ্গে বিবাহের বিরোধিতা করল কেন্দ্র।
কেন্দ্র এদিন হলফনামায় আরও বলেছে, সমকামী বিবাহকে স্বীকৃতি দিলে কিছু আইনি জটিলতাও তৈরি হবে। বর্তমানে ভারতে ব্যক্তিগত এবং বিধিবদ্ধ আইনে, ‘নিষিদ্ধ সম্পর্ক’, ‘বিয়ের শর্ত’, ‘আনুষ্ঠানিকতা এবং আচারের প্রয়োজনীয়তা’, ‘গার্হস্থ্য’ হিংসা’র মতো বিষয়ে যে বিধিগুলি রয়েছে, সমকামী বিবাহ আইনি স্বীকৃতি পেলে সেগুলির লঙ্ঘন হতে পারে। কারণ, বিয়ে শুধুমাত্র নারী-পুরুষের মধ্যে হয়, এমনটা ধরেই বিধানগুলি তৈরি করা হয়েছে।
কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, সামাজিক সম্পর্কের একটি নির্দিষ্ট রূপের স্বীকৃতি চাওয়াটা কোনও মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না। সরকার বলেছে, ‘সংবিধানের ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সকল নাগরিকের নিজের ইচ্ছামতো মেলামেশার অধিকার আছে।
কিন্তু, এই ধরনের সম্পর্কগুলির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে আইনি স্বীকৃতি দিতেই হবে এটা কোনও অধিকারের বিষয় নয়। ২১ নম্বর অনুচ্ছেদের অধীনে জীবন ও স্বাধীনতার অধিকারের আওতাতেও এটা পড়ে না। বিবাহের ধারণা অনিবার্যভাবে বিপরীত লিঙ্গের দুই ব্যক্তির মধ্যে মিলনকে বোঝায়। সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং আইনগতভাবে তৈরি এই বিবাহের ধারণাকে বিচার বিভাগের ব্যাখ্যা দিয়ে নষ্ট করা অনুচিত।’
সংবিধানে যে ভারতীয় নাগরিকদের নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে বিয়ে করার অধিকার দেওয়া হয়েছে, সেই অধিকার এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের নাগরিকদেরও পাওয়া উচিত। এই দাবি করেই সমকামী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন হায়দরাবাদের সমকামী যুগল সুপ্রিয় চক্রবর্তী এবং অভয় ডাং। তবে শুধু তাঁরা একাই নন, দেশের বিভিন্ন হাইকোর্টে একাধিক সমকামী যুগল সমকামী বিবাহের স্বীকৃতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন। এর আগে, প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পিএস নরসিংহ এবং বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে হবে মামলার শুনানি। এক্ষেত্রে সমকামী নিয়ে দেশের হাইকোর্টের সবকটি পিটিশন স্থানান্তরীত করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।