১৫ নভেম্বর ২০২৫, শনিবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কেমন চলছে দেশে প্রথম “ডাকঘরে কফি হাউস” কলকাতা জিপিওর শিউলি দ্য পার্সেল কাফে

অর্পিতা লাহিড়ী
  • আপডেট : ২০ জুলাই ২০২২, বুধবার
  • / 75

অর্পিতা লাহিড়ীঃ স্মার্টফোন  আর ডিজিটাল  যুগে দাঁড়িয়ে  চিঠি  লেখাটা এখন একেবারেই  সাবেকি।  এখন মনের কথা  পৌঁছে দেওয়ার জন্য   হরেক রকমের আয়োজন।  ইমেল, হোয়াটসঅ্যাপ,  টেলিগ্রাম,  ম্যাসেঞ্জার। সোশ্যাল মিডিয়ার এই বাড়বাড়ন্তে কোথায় যেন হারিয়ে গেল  চিঠি  লেখা,  শরতের  মেঘের  আনাগোনা  আকাশে  দেখা দিলেই ডাকপিয়নের অপেক্ষায় দরজার দিকে  চেয়ে থাকা। সেই  চিঠি  যে বয়ে আনবে কলকাতা প্রবাসে  থাকা  মানুষটির ঘরে  ফেরার সংবাদ,  শারদোৎসবে বাড়ি  ফেরার  বার্তা,  সঙ্গে  থাকবে উপহার।  খোকার  জন্য  নতুন  কাপড়,  খুকির ফ্রক,  আর  ভালোবাসার মানুষটির জন্য  নতুন  লাল পেড়ে তাঁতের শাড়ি, স্নো, আলতা, আরও কতকিছুর কথা।

 

কেমন চলছে দেশে প্রথম "ডাকঘরে কফি হাউস" কলকাতা জিপিওর শিউলি দ্য পার্সেল কাফে

আজ আর রানারের প্রিয়া কে একা শয্যায় বিনিদ্র   রজনী যাপন করতে  হয় না। রানার  আজ আর  খবরের বোঝা  নিয়ে  দৌড়ায় না। তাঁর  ঠাঁই  আজ ডাক যাদুঘরে।বাবার  হাত ধরে  কিশোর পুত্র  অপেক্ষা করেনা প্রথম প্রকাশিত  স্ট্যাম্পের কভার পাতাটি সংগ্রহ  করার জন্য।

কেমন চলছে দেশে প্রথম "ডাকঘরে কফি হাউস" কলকাতা জিপিওর শিউলি দ্য পার্সেল কাফে

সব দেখে  কেমন যেন দীর্ঘশ্বাস  ফেলে  বিনয় বাদল দীনেশ  বাগের ওই সাদা গম্বুজ  ওলা বাড়িটা। বয়স তো তার  কম কিছু  হলনা, কলকাতার  মানুষ  তাকে জিপিও  বলেই জানে। এখন এই বাড়ির ব্যস্ততা অনেক কমে গিয়েছে। তবুও এর গুরুত্ব অপরিসীম। এই বাড়িটি তৈরি হয় চার বছর ধরে। শুরু হয় ১৮৬৪ সালে। শেষ হয় ১৮৬৮ সালে। নকশা করেছিলেন সেই সময়ে ব্রিটিশ ভারতের কনসাল্টিং আর্কিটেক্ট ওয়াল্টার বি গ্রেনভিল। ইতিহাস বলছে, এই ভবনটি তৈরি করতে সেই সময়ে খরচ হয়েছিল সাড়ে ৬ লাখ টাকা।

কেমন চলছে দেশে প্রথম "ডাকঘরে কফি হাউস" কলকাতা জিপিওর শিউলি দ্য পার্সেল কাফে

 

 

ডিজিটাল  যুগে আজকাল,  চিঠি লেখা,  ডাকটিকিট  সংগ্রহ,  পুরনো  মুদ্রা  সংগ্রহ  কমে গিয়েছে  অনেকটাই। বিশেষ করে  তরুণ প্রজন্ম এইসব  সেকেলে  ব্যাপারস্যাপার থেকে  অনেক আগেই  মুখ ফিরিয়েছে।তাই   কলকাতা  জিপিও তে খুব  সম্প্রতি  শুরু হয়েছে  শিউলি  দ্য পার্সেল কাফে।  একসময়  শিউলি  বলে একটা  কাউন্টার ছিল  কলকাতা জিপিও তে। ছিল  ফিলাটেলিক ব্যুরো। কিন্তু  ডাকটিকিট সংগ্রহের নেশা কমতে  শুরু করায় একসময়  বন্ধ হয়ে যায়  শিউলি।  এখন সেই  শিউলিকেই সাজিয়ে গুছিয়ে  ভারতীয় ডাক বিভাগ  তৈরি করেছে  শিউলি  দ্য পার্সেল কাফে।

 

কেমন চলছে দেশে প্রথম "ডাকঘরে কফি হাউস" কলকাতা জিপিওর শিউলি দ্য পার্সেল কাফে

ভেতরে ঢুকলেই  কেমন যেন   ব্রিটিশ   আমলের  ছোঁয়া। লাল উর্দি পরা  ওয়েটার টা ঘুরে  বেড়াচ্ছেন।  আসবাবপত্রেও পুরাতনী  স্পর্শ।  কাঠের  টেবিল,  চেয়ার, দেওয়াল জোড়া  রানারের সেই  লণ্ঠন  আর বর্শা। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের  ওপর প্রকাশিত  স্ট্যাম্প, পুরনো মান্ধাতা আমলের  লাল ওজন মেশিন,  শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয় বরং  সিলিং থেকে নেমে  আসা সেই  লম্বা  রড ওয়ালা  পাখা। দেখতে দেখতে কেমন  যেন ঘোর লেগে যায়। ভারতে এই প্রথম কোনও পোস্ট অফিসে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ।পরিবার পরিজন, বন্ধুদের নিয়ে  সময় কাটানোর আদর্শ জায়গা। চিকেন  এবং  ভেজের হরেক রকম  স্ন্যাকস মিলবে, সঙ্গে  আড্ডা  জমাতে রয়েছে  চা,কফি।  আইসক্রিম,  কোল্ড ড্রিংক,  ফ্রুটজুস তাও রয়েছে।

কেমন চলছে দেশে প্রথম "ডাকঘরে কফি হাউস" কলকাতা জিপিওর শিউলি দ্য পার্সেল কাফে

 

 

নবীন প্রজন্ম কে ডাকঘরমুখী করতেই ভারতীয়  ডাক বিভাগ  এই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন। এই ক্যাফেতেই রয়েছে  গিফট  কাউন্টার।  চাইলে প্রিয়জনকে  উপহার  দিতে পারেন ডাক টিকিট।  স্মারক হিসেবে  সংগ্রহ করতেই পারেন কফিমাগ, কোস্টার, টি শার্ট।  সবেতেই রয়েছে  ভারতীয়  ডাক বিভাগের ভাবনার  অভিনবত্ব।  সকাল  ১১ টা থেকে  সন্ধ্যা  সাতটা পর্যন্ত   এই পার্সেল কাফে  খোলা থাকে।এমনকি  এখান থেকে পার্সেল-বুকিং, প্যাকেজিং, গিফট-প্যাকিং, একই দিনে ডেলিভারির জন্য বুকিংও করা হয়।  তাহলে আর  দেরি  কেন চলে আসুন জিপিওর এই শিউলি দ্য পার্সেল কাফে তে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

কেমন চলছে দেশে প্রথম “ডাকঘরে কফি হাউস” কলকাতা জিপিওর শিউলি দ্য পার্সেল কাফে

আপডেট : ২০ জুলাই ২০২২, বুধবার

অর্পিতা লাহিড়ীঃ স্মার্টফোন  আর ডিজিটাল  যুগে দাঁড়িয়ে  চিঠি  লেখাটা এখন একেবারেই  সাবেকি।  এখন মনের কথা  পৌঁছে দেওয়ার জন্য   হরেক রকমের আয়োজন।  ইমেল, হোয়াটসঅ্যাপ,  টেলিগ্রাম,  ম্যাসেঞ্জার। সোশ্যাল মিডিয়ার এই বাড়বাড়ন্তে কোথায় যেন হারিয়ে গেল  চিঠি  লেখা,  শরতের  মেঘের  আনাগোনা  আকাশে  দেখা দিলেই ডাকপিয়নের অপেক্ষায় দরজার দিকে  চেয়ে থাকা। সেই  চিঠি  যে বয়ে আনবে কলকাতা প্রবাসে  থাকা  মানুষটির ঘরে  ফেরার সংবাদ,  শারদোৎসবে বাড়ি  ফেরার  বার্তা,  সঙ্গে  থাকবে উপহার।  খোকার  জন্য  নতুন  কাপড়,  খুকির ফ্রক,  আর  ভালোবাসার মানুষটির জন্য  নতুন  লাল পেড়ে তাঁতের শাড়ি, স্নো, আলতা, আরও কতকিছুর কথা।

 

কেমন চলছে দেশে প্রথম "ডাকঘরে কফি হাউস" কলকাতা জিপিওর শিউলি দ্য পার্সেল কাফে

আজ আর রানারের প্রিয়া কে একা শয্যায় বিনিদ্র   রজনী যাপন করতে  হয় না। রানার  আজ আর  খবরের বোঝা  নিয়ে  দৌড়ায় না। তাঁর  ঠাঁই  আজ ডাক যাদুঘরে।বাবার  হাত ধরে  কিশোর পুত্র  অপেক্ষা করেনা প্রথম প্রকাশিত  স্ট্যাম্পের কভার পাতাটি সংগ্রহ  করার জন্য।

কেমন চলছে দেশে প্রথম "ডাকঘরে কফি হাউস" কলকাতা জিপিওর শিউলি দ্য পার্সেল কাফে

সব দেখে  কেমন যেন দীর্ঘশ্বাস  ফেলে  বিনয় বাদল দীনেশ  বাগের ওই সাদা গম্বুজ  ওলা বাড়িটা। বয়স তো তার  কম কিছু  হলনা, কলকাতার  মানুষ  তাকে জিপিও  বলেই জানে। এখন এই বাড়ির ব্যস্ততা অনেক কমে গিয়েছে। তবুও এর গুরুত্ব অপরিসীম। এই বাড়িটি তৈরি হয় চার বছর ধরে। শুরু হয় ১৮৬৪ সালে। শেষ হয় ১৮৬৮ সালে। নকশা করেছিলেন সেই সময়ে ব্রিটিশ ভারতের কনসাল্টিং আর্কিটেক্ট ওয়াল্টার বি গ্রেনভিল। ইতিহাস বলছে, এই ভবনটি তৈরি করতে সেই সময়ে খরচ হয়েছিল সাড়ে ৬ লাখ টাকা।

কেমন চলছে দেশে প্রথম "ডাকঘরে কফি হাউস" কলকাতা জিপিওর শিউলি দ্য পার্সেল কাফে

 

 

ডিজিটাল  যুগে আজকাল,  চিঠি লেখা,  ডাকটিকিট  সংগ্রহ,  পুরনো  মুদ্রা  সংগ্রহ  কমে গিয়েছে  অনেকটাই। বিশেষ করে  তরুণ প্রজন্ম এইসব  সেকেলে  ব্যাপারস্যাপার থেকে  অনেক আগেই  মুখ ফিরিয়েছে।তাই   কলকাতা  জিপিও তে খুব  সম্প্রতি  শুরু হয়েছে  শিউলি  দ্য পার্সেল কাফে।  একসময়  শিউলি  বলে একটা  কাউন্টার ছিল  কলকাতা জিপিও তে। ছিল  ফিলাটেলিক ব্যুরো। কিন্তু  ডাকটিকিট সংগ্রহের নেশা কমতে  শুরু করায় একসময়  বন্ধ হয়ে যায়  শিউলি।  এখন সেই  শিউলিকেই সাজিয়ে গুছিয়ে  ভারতীয় ডাক বিভাগ  তৈরি করেছে  শিউলি  দ্য পার্সেল কাফে।

 

কেমন চলছে দেশে প্রথম "ডাকঘরে কফি হাউস" কলকাতা জিপিওর শিউলি দ্য পার্সেল কাফে

ভেতরে ঢুকলেই  কেমন যেন   ব্রিটিশ   আমলের  ছোঁয়া। লাল উর্দি পরা  ওয়েটার টা ঘুরে  বেড়াচ্ছেন।  আসবাবপত্রেও পুরাতনী  স্পর্শ।  কাঠের  টেবিল,  চেয়ার, দেওয়াল জোড়া  রানারের সেই  লণ্ঠন  আর বর্শা। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের  ওপর প্রকাশিত  স্ট্যাম্প, পুরনো মান্ধাতা আমলের  লাল ওজন মেশিন,  শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয় বরং  সিলিং থেকে নেমে  আসা সেই  লম্বা  রড ওয়ালা  পাখা। দেখতে দেখতে কেমন  যেন ঘোর লেগে যায়। ভারতে এই প্রথম কোনও পোস্ট অফিসে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ।পরিবার পরিজন, বন্ধুদের নিয়ে  সময় কাটানোর আদর্শ জায়গা। চিকেন  এবং  ভেজের হরেক রকম  স্ন্যাকস মিলবে, সঙ্গে  আড্ডা  জমাতে রয়েছে  চা,কফি।  আইসক্রিম,  কোল্ড ড্রিংক,  ফ্রুটজুস তাও রয়েছে।

কেমন চলছে দেশে প্রথম "ডাকঘরে কফি হাউস" কলকাতা জিপিওর শিউলি দ্য পার্সেল কাফে

 

 

নবীন প্রজন্ম কে ডাকঘরমুখী করতেই ভারতীয়  ডাক বিভাগ  এই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন। এই ক্যাফেতেই রয়েছে  গিফট  কাউন্টার।  চাইলে প্রিয়জনকে  উপহার  দিতে পারেন ডাক টিকিট।  স্মারক হিসেবে  সংগ্রহ করতেই পারেন কফিমাগ, কোস্টার, টি শার্ট।  সবেতেই রয়েছে  ভারতীয়  ডাক বিভাগের ভাবনার  অভিনবত্ব।  সকাল  ১১ টা থেকে  সন্ধ্যা  সাতটা পর্যন্ত   এই পার্সেল কাফে  খোলা থাকে।এমনকি  এখান থেকে পার্সেল-বুকিং, প্যাকেজিং, গিফট-প্যাকিং, একই দিনে ডেলিভারির জন্য বুকিংও করা হয়।  তাহলে আর  দেরি  কেন চলে আসুন জিপিওর এই শিউলি দ্য পার্সেল কাফে তে।