আল-আকসা ধ্বংসের ছক: জেরুসালেমের ইতিহাস মুছতে ইসরাইলের নতুন ষড়যন্ত্র
- আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, শুক্রবার
- / 151
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: জেরুসালেমের হৃদয়ে দাঁড়িয়ে থাকা আল-আকসা মসজিদ; ইসলামী ঐতিহ্যের এক অমূল্য প্রতীক। নবী মুহাম্মদ সা.-এর মিরাজের স্মৃতিবাহী এই পবিত্র স্থান কেবল মুসলমানদের নয়, বরং সমগ্র মানবসভ্যতার ইতিহাসে আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাক্ষী।
কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসরাইলি দখলদার প্রশাসন যেভাবে এই পবিত্র স্থানের নিচে গোপনে খননকাজ চালাচ্ছে, তাতে আশঙ্কা বাড়ছে; এ যেন ধীরে ধীরে আল-আকসা মসজিদের অস্তিত্ব বিলুপ্ত করার পরিকল্পনা। ফিলিস্তিনি সংবাদসংস্থা ওয়াফা-র সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জেরুসালেম গভর্নরেটের উপদেষ্টা মারুফ আল-রিফাই সতর্ক করে বলেছেন, আল-আকসা মসজিদের নিচে এবং পুরনো জেরুসালেম নগরের আশপাশে ইসরাইলি খননকাজ ‘ধ্বংসের পূর্বাভাস’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি জানান, এই কাজগুলো তথাকথিত ‘সিটি অব ডেভিড’ নামের উপনিবেশিক প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত, যার লক্ষ্য মুসলিম ও খ্রিস্টান ঐতিহ্যকে মুছে দিয়ে পুরো পুরনো শহরটিকে ‘ইহুদি ঐতিহ্যের কেন্দ্র’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
আল-রিফাই আরও বলেন, শতাধীপ্রাচীন জল চলাচলের নালা ও গুহাগুলো শুকিয়ে ফেলে সেখানে কৃত্রিম সুড়ঙ্গ, জাদুঘর ও সিনাগগ তৈরি করা হচ্ছে। একসময়কার ঐতিহাসিক জাব্বানা মার্কেটকে রূপান্তর করা হয়েছে তথাকথিত ‘ইহুদি পর্যটন পথ’-এ। এ সব সুড়ঙ্গ আল-আকসার মাটির নিচে প্রবাহিত হয়ে এর ভিত্তি দুর্বল করছে। তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, ‘এই খননকাজ কোনও বৈজ্ঞানিক মানদণ্ড অনুসারে নয়; এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
বিশ্লেষকদের মতে, এটি ইসরাইলের দীর্ঘমেয়াদি ‘জুডাইজেশন প্রজেক্ট’-এরই অংশ; যার উদ্দেশ্য ফিলিস্তিনের ইসলামি পরিচয় মুছে দিয়ে জেরুসালেমকে ‘ইহুদি রাজধানী’ হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করা। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ ছাড়া, গোপনে বা আধা-গোপনে চলা এ সব কার্যক্রম সরাসরি আন্তর্জাতিক আইন এবং ধর্মীয় স্থানের সুরক্ষা চুক্তির লঙ্ঘন। আল-আকসা আজ শুধু একটি মসজিদ নয়; এটি দখল, প্রতিরোধ ও অস্তিত্বের প্রতীকে পরিণত হয়েছে। ইসরাইলি প্রশাসনের এই কর্মকাণ্ড থামানো না গেলে একদিন হয়তো মানবসভ্যতার এক অমূল্য ধর্মীয় ঐতিহ্য ইতিহাসের গর্ভে হারিয়ে যাবে।



























