১৩ মে ২০২৫, মঙ্গলবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অভিন্ন দেওয়ানি বিধি: বিতর্কের আবহে মতামতের সময়সীমা ২৮ জুলাই পর্যন্ত বাড়াল আইন কমিশন

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৩, শনিবার
  • / 12

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  দেশে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একের পর নীতি ও বিধান নিয়ে খবরের শিরোনামে নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। এই মুহূর্তে দেশে অন্যতম চর্চিত বিষয় অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। গত ১৪ জুন ২২তম আইন কমিশনের তরফে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর বিষয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন এবং রাজ্যবাসীর কাছে তাদের মতামত চাওয়া হয়।

প্রাথমিকভাবে একমাস সময়সীমা চাওয়া হয়েছিল। বিতর্কের আবহে সেই সময়সীমা আগামী ২৮ জুলাই পর্যন্ত বাড়াল জাতীয় আইন কমিশন। শুক্রবার আইন কমিশনের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। গত বুধবার পর্যন্ত এ বিষয়ে অনলাইনে প্রায় ৫০ লক্ষ ব্যক্তি এবং সংগঠনের মতামত জমা পড়েছে বলে আইন কমিশন সূত্রে খবর। ২০১৮ সালে আগের আইন কমিশনও বিভিন্ন সংগঠনের থেকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে মতামত চেয়েছিল। তবে এরপর ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে জয়ের পর এই নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। তবে ২০২৪ সালের ভোটের আগে ফের একবার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে তৎপর হল আইন কমিশন।

আরও পড়ুন: অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কখনোই মানব না, মুসলিম ধর্মীয় নেতাদের যৌথ বিবৃতি

উল্লেখ্য, হিন্দু ভারত বানানোর অঙ্গীকার নিয়ে ৯৯ বছর আগে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ জন্ম নিয়েছিল, তারই অ্যাজেন্ডা ছিল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। বিজেপি এবার সেটাই প্রয়োগ করতে চলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হয়ে মিশর সফর সেরে দেশে ফিরেই গভীর রাতে বৈঠক করে মোদি। পরদিনই ‘সব বুথ হোক মজবুত’ স্লোগান দিয়ে ভোপালে দলীয় অনুষ্ঠান থেকেই প্রধানমন্ত্রী দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রয়োজনীয়তার কথা দেশবাসীকে বুঝিয়ে দেন। আগামী ২০ জুলাই সংসদে বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে। আর এই অধিবেশনেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বা ইউসিসি বিল পাস হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

আরও পড়ুন: উত্তর-পূর্বে লাগু হবে না অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, আশ্বাস মন্ত্রীর

এদিকে আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসেই পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের আগে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করার বার্তা দিয়েছিলেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ইতিমধ্যেই বহু বিজেপি শাসিত রাজ্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছে। দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার প্রতিশ্রুতি বিজেপির নির্বাচনী ইস্তাহারের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। প্রসঙ্গত, মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের আমলেই রাম মন্দির, তিন তালাক, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার প্রত্যক্ষ করেছে দেশ। এবার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, বিল পাস নিয়ে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন: অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে সমর্থন মায়াবতীর

তবে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বলবীর সিংহ চৌহানের নেতৃত্বাধীন ২১-তম আইন কমিশনের মত ছিল, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করে বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, উত্তরাধিকারের মতো পারিবারিক বিষয়ে হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান, পার্সি, জৈন সকলের জন্য একই আইন চালু করার প্রয়োজন নেই। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের খ্রিস্টানপ্রধান তিন রাজ্য মিজোরাম, মেঘালয় ও নাগাল্যান্ড সরকার এবং বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের তরফে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি পাস নিয়ে আপত্তি উঠেছে।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

অভিন্ন দেওয়ানি বিধি: বিতর্কের আবহে মতামতের সময়সীমা ২৮ জুলাই পর্যন্ত বাড়াল আইন কমিশন

আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৩, শনিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  দেশে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একের পর নীতি ও বিধান নিয়ে খবরের শিরোনামে নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। এই মুহূর্তে দেশে অন্যতম চর্চিত বিষয় অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। গত ১৪ জুন ২২তম আইন কমিশনের তরফে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর বিষয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন এবং রাজ্যবাসীর কাছে তাদের মতামত চাওয়া হয়।

প্রাথমিকভাবে একমাস সময়সীমা চাওয়া হয়েছিল। বিতর্কের আবহে সেই সময়সীমা আগামী ২৮ জুলাই পর্যন্ত বাড়াল জাতীয় আইন কমিশন। শুক্রবার আইন কমিশনের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। গত বুধবার পর্যন্ত এ বিষয়ে অনলাইনে প্রায় ৫০ লক্ষ ব্যক্তি এবং সংগঠনের মতামত জমা পড়েছে বলে আইন কমিশন সূত্রে খবর। ২০১৮ সালে আগের আইন কমিশনও বিভিন্ন সংগঠনের থেকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে মতামত চেয়েছিল। তবে এরপর ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে জয়ের পর এই নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। তবে ২০২৪ সালের ভোটের আগে ফের একবার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে তৎপর হল আইন কমিশন।

আরও পড়ুন: অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কখনোই মানব না, মুসলিম ধর্মীয় নেতাদের যৌথ বিবৃতি

উল্লেখ্য, হিন্দু ভারত বানানোর অঙ্গীকার নিয়ে ৯৯ বছর আগে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ জন্ম নিয়েছিল, তারই অ্যাজেন্ডা ছিল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। বিজেপি এবার সেটাই প্রয়োগ করতে চলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হয়ে মিশর সফর সেরে দেশে ফিরেই গভীর রাতে বৈঠক করে মোদি। পরদিনই ‘সব বুথ হোক মজবুত’ স্লোগান দিয়ে ভোপালে দলীয় অনুষ্ঠান থেকেই প্রধানমন্ত্রী দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রয়োজনীয়তার কথা দেশবাসীকে বুঝিয়ে দেন। আগামী ২০ জুলাই সংসদে বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে। আর এই অধিবেশনেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বা ইউসিসি বিল পাস হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

আরও পড়ুন: উত্তর-পূর্বে লাগু হবে না অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, আশ্বাস মন্ত্রীর

এদিকে আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসেই পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের আগে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করার বার্তা দিয়েছিলেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ইতিমধ্যেই বহু বিজেপি শাসিত রাজ্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছে। দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার প্রতিশ্রুতি বিজেপির নির্বাচনী ইস্তাহারের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। প্রসঙ্গত, মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের আমলেই রাম মন্দির, তিন তালাক, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার প্রত্যক্ষ করেছে দেশ। এবার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, বিল পাস নিয়ে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন: অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে সমর্থন মায়াবতীর

তবে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বলবীর সিংহ চৌহানের নেতৃত্বাধীন ২১-তম আইন কমিশনের মত ছিল, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করে বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, উত্তরাধিকারের মতো পারিবারিক বিষয়ে হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান, পার্সি, জৈন সকলের জন্য একই আইন চালু করার প্রয়োজন নেই। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের খ্রিস্টানপ্রধান তিন রাজ্য মিজোরাম, মেঘালয় ও নাগাল্যান্ড সরকার এবং বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের তরফে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি পাস নিয়ে আপত্তি উঠেছে।