মোহনপুর ব্রিজ তৈরির আগে হবে মার্কেট কমপ্লেক্স, উচ্ছেদ নয়: আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর

- আপডেট : ৬ অগাস্ট ২০২৫, বুধবার
- / 29
সেখ জামাল, মেদিনীপুর : বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন সেরে মঙ্গলবার মেদিনীপুর শহরে রাত্রিযাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সকালে ঝাড়গ্রামের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করার সময় শহর ছাড়ার মুখে মোহনপুর ব্রিজের কাছে একদল ছোট ব্যবসায়ী হাতে পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। দাবি ছিল, ‘ব্রিজ তৈরি হলে আমাদের দোকান উচ্ছেদ হবে, আমাদের জন্য কিছু করুন।’ তাদের দেখে মুখ্যমন্ত্রী দাঁড়িয়ে যান। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং আশ্বস্ত করেন।
সেখানে দাঁড়িয়ে জেলাশাসক খুরশেদ আলীকে জানালেন, ‘২০২৬-এর নির্বাচনের পর আমরা এই ব্রিজ সম্পর্কিত সমস্যাটিতে হাত দেব। কোনও ব্যবসায়ীকে উচ্ছেদ নয়। এদের জন্য মার্কেট কমপ্লেক্স, বাসস্থান তৈরি করে তবেই দোকান সরানোর নেওয়া হবে।’
বর্তমানে মেদিনীপুর শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কংসাবতী নদীর উপর পুরানো মোহনপুর ব্রিজ তথা বীরেন্দ্র সেতু রয়েছে, যা ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
দীর্ঘদিনের সেতুটিতে যানবাহনের চাপ অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বিকল্প ব্রিজ নির্মাণের। কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই ওই প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে। তবে নতুন ব্রিজ তৈরির জন্য মাতকাপুর এলাকায় প্রায় ১০০টি ক্ষুদ্র দোকান ভেঙে ফেলতে হবে বলে জানানো হয়েছে হাইওয়ে অথরিটির পক্ষ থেকে। এই খবরেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছিলেন ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা।
তাদের অনেকেই জানান, বহুবার বিভিন্ন দফতরে লিখিত আবেদন করেও কোনও সুরাহা হয়নি। অবশেষে বুধবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর রাস্তায় পোস্টারে আবেদন নিয়ে দাঁড়িয়ে শেষ চেষ্টা করেছিলেন তারা। এ দিনের আশ্বাসে তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। একজন ব্যবসায়ী জানান, ‘মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে আমাদের কথা শুনলেন, তা আমাদের প্রাণে বাঁচার মতো। উনি না দাঁড়ালে হয়তো আমরা পথে বসতাম।’
স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে যথেষ্ট খুশি ব্যবসায়ীরা। ধন্যবাদ জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে। তারা জানাচ্ছেন, ‘বহু দফতরে আবেদন-নিবেদন করেছিলাম। লাভ হয়নি। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীর সরাসরি নির্দেশ পেয়ে স্বস্তি।’
এদিন বিকেলে ঝাড়গ্রামের ভাষা আন্দোলনের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন। বলেন, ‘জট-এর আড়ালে এনআরসি চাপানো হচ্ছে। নাম বাদ দিতে হলে আমার দেহ পেরিয়ে যেতে হবে। বাংলায় এনআরসি চলবে না, মানব না।’ তার কণ্ঠে দৃঢ় প্রতিবাদে ফুটে উঠেছে বাংলার জন্য লড়াইয়ের বার্তা।