ভোটের আগে বাউরি কালচারাল বোর্ডের চেয়ারম্যান বদল

- আপডেট : ৮ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার
- / 20
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে বাউরি কালচারাল বোর্ডে বড়সড় রদবদল করল শাসক দল। বোর্ডের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারিত করা হল বাঁকুড়ার তৃণমূল নেতা দেবদাস দাসকে। তাঁর জায়গায় নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ শিক্ষক ও নেতা দীপক দুলেকে। যদিও দেবদাস দাসকে সরাসরি বোর্ড থেকে বাদ দেওয়া হয়নি, তাঁকে ভাইস চেয়ারম্যানের পদে রাখা হয়েছে।
কিন্তু এই হঠাৎ রদবদলকে ঘিরে শাসকদলের অন্দরে অন্তর্কলহের গুঞ্জন একেবারে আলোচনার শীর্ষে উঠেছে। ২০২১ সালে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় এই বাউরি কালচারাল বোর্ড গঠন হয়েছিল। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, হুগলি সহ প্রায় সাতটি জেলার ৬৮টি বিধানসভা আসনে এই জনজাতির ভোটের প্রভাব অনেকটাই রয়েছে। এই বোর্ড গঠনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ জনজাতি বাউরি সম্প্রদায়ের উন্নয়ন। যার ফলে এই অঞ্চলগুলোর সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে নজর দেওয়া যায়।
কিন্তু চার বছর পেরোতেই আচমকা দেবদাস দাসকে অপসারণ এবং দীপক দুলের অভিষেককে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্ন উঠছে। অনেকের ধারণা, বোর্ডের ক্ষমতা আসলে কার হাতে থাকবে তা নিয়েই শুরু হয়েছিল অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। সেই দ্বন্দ্বই হয়তো কোথাও গিয়ে রদবদলের অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
গতকাল বাঁকুড়ার তৃণমূল ভবনে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সভায় নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান দীপক দুলে বলেন, “সব রাগ-অভিমান ভুলে আমাদের একসঙ্গে সমাজের জন্য কাজ করতে হবে। অনেকে চক্রান্ত করে আমাদের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করবে। কিন্তু আমাদের যৌথভাবে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের জন্য কাজ করতে হবে। বাঁকুড়ার ১২টি আসনে জয়লাভ করাই এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য উচিত।”
দীপকবাবুও আরও বলেন, “সংগঠনের আন্তরিকতা, তৎপরতা ও সাংগঠনিক দুর্বলতার জেরেই কিছুটা হলেও বোর্ডের উদ্দেশ্যে ব্যাঘাত ঘটেছে। আমরা চেষ্টা করব, আগামী দিনে এই ভুল শুধরে নেওয়ার ও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার”। অন্যদিকে, অপসারিত চেয়ারম্যান দেবদাস দাস এই নিয়ে কিন্তু প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্যই করেননি।
এই নিয়ে শাসকদলকে নিশানা করে, বিজেপি দলের বাঁকুড়ার প্রাক্তন জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল বলেন, “বাউরি কালচারাল বোর্ড সমাজের জন্য কোনও কাজই করেনি। এখন ভোটের আগে মুখ বদলে বাউরি ভোট নিজেদের পক্ষে আনার চেষ্টা করছে তৃণমূল।
কিন্তু এই করে কোন লাভই হবে না। বাউরি সমাজ বিজেপির সঙ্গেই আছে। কারণ বিজেপি সবসময় বাউরি সমাজের পাশে। এই নিয়ে যে রাজনৈতিক তরজা চলছে, সেই রাজনীতির আঁচ যে বাউরি কালচারাল বোর্ডেও লেগেছে তা বেশ ভালোভাবেই স্পষ্ট।