০৬ অক্টোবর ২০২৫, সোমবার, ১৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চিন স্পষ্ট করল অবস্থান: ইউক্রেনের যুদ্ধে রাশিয়ার পরাজয় মেনে নেবে না বেজিং

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ৫ জুলাই ২০২৫, শনিবার
  • / 271

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে স্পষ্ট অবস্থান নিল চিন। চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই জানিয়েছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধে কোনও অবস্থাতেই রাশিয়ার পরাজয় মেনে নেবে না বেজিং। শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) বিদেশনীতি বিষয়ক প্রধান কাজ়া ক্যালাসের সঙ্গে বৈঠকে ওয়াং এই মন্তব্য করেন। আন্তর্জাতিক মহলে চিনের এই অবস্থান নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, চিনের এই দৃঢ় সমর্থনের মূল কারণ, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষে যদি রাশিয়া পরাস্ত হয়, তবে পরবর্তী টার্গেট হবে চিন নিজেই। ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বেজিং মনে করে, রাশিয়ার পরাজয় হলে পশ্চিমা বিশ্বের নেতৃত্বে থাকা আমেরিকার প্রধান নিশানা হয়ে উঠবে চিন।

যদিও চিন রাশিয়াকে কোনও সামরিক সাহায্য দিচ্ছে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। ওয়াং ই দাবি করেছেন, চিন যদি সত্যিই রাশিয়াকে অস্ত্র ও সামরিক সহযোগিতা করত, তবে যুদ্ধ অনেক আগেই শেষ হয়ে যেত। বেজিং বরাবরই এ ধরনের সহায়তার কথা অস্বীকার করে এসেছে। তবে ইউক্রেন ইতিমধ্যেই ডনেৎসের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে রাশিয়ার হয়ে লড়তে আসা দুই চিনা সেনাকে গ্রেফতার করেছে বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির আহ্বান চিনের

এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শুক্রবার ইউক্রেনের রাজধানী কিভে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় রুশ বাহিনী। ৩ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে এই হামলা, যেখানে অন্তত ১৮টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ৫০টিরও বেশি ড্রোন ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে ইউক্রেন সেনা।

আরও পড়ুন: Earthquake: রাশিয়ায় ৭.৪ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প

অন্যদিকে, যুদ্ধ থামাতে কূটনৈতিক তৎপরতাও চলছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করেন। কিন্তু তারপরও মস্কোর আক্রমণের তীব্রতা কোনওভাবেই কমেনি।

আরও পড়ুন: Indian National in Russian Army: রুশ সেনায় যোগ দেবেন না, ভারতীয়দের সতর্ক করল কেন্দ্রীয় সরকার

এর আগে, সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ‘শাংরি লা ডায়ালগ’ প্রতিরক্ষা সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি অভিযোগ করেছিলেন, চিনের মদতেই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, রাশিয়াকে চিন যতটা সমর্থন দিচ্ছে, তাতে যুদ্ধের অবসান নয়, বরং তা আরও প্রসারিত হচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার মতো চিনের দিকেও রাশিয়ার হয়ে প্রত্যক্ষ সামরিক সহায়তার অভিযোগ বহুবার উঠেছে। যদিও বেজিং তার প্রতিটি অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবুও ইউক্রেন যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া বলছে, চিনের অবস্থান বিশ্ব রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে চলেছে।

এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি এখন বেজিং এবং মস্কোর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং চিনের ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক চালের দিকে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

চিন স্পষ্ট করল অবস্থান: ইউক্রেনের যুদ্ধে রাশিয়ার পরাজয় মেনে নেবে না বেজিং

আপডেট : ৫ জুলাই ২০২৫, শনিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে স্পষ্ট অবস্থান নিল চিন। চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই জানিয়েছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধে কোনও অবস্থাতেই রাশিয়ার পরাজয় মেনে নেবে না বেজিং। শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) বিদেশনীতি বিষয়ক প্রধান কাজ়া ক্যালাসের সঙ্গে বৈঠকে ওয়াং এই মন্তব্য করেন। আন্তর্জাতিক মহলে চিনের এই অবস্থান নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, চিনের এই দৃঢ় সমর্থনের মূল কারণ, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষে যদি রাশিয়া পরাস্ত হয়, তবে পরবর্তী টার্গেট হবে চিন নিজেই। ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বেজিং মনে করে, রাশিয়ার পরাজয় হলে পশ্চিমা বিশ্বের নেতৃত্বে থাকা আমেরিকার প্রধান নিশানা হয়ে উঠবে চিন।

যদিও চিন রাশিয়াকে কোনও সামরিক সাহায্য দিচ্ছে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। ওয়াং ই দাবি করেছেন, চিন যদি সত্যিই রাশিয়াকে অস্ত্র ও সামরিক সহযোগিতা করত, তবে যুদ্ধ অনেক আগেই শেষ হয়ে যেত। বেজিং বরাবরই এ ধরনের সহায়তার কথা অস্বীকার করে এসেছে। তবে ইউক্রেন ইতিমধ্যেই ডনেৎসের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে রাশিয়ার হয়ে লড়তে আসা দুই চিনা সেনাকে গ্রেফতার করেছে বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির আহ্বান চিনের

এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শুক্রবার ইউক্রেনের রাজধানী কিভে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় রুশ বাহিনী। ৩ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে এই হামলা, যেখানে অন্তত ১৮টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ৫০টিরও বেশি ড্রোন ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে ইউক্রেন সেনা।

আরও পড়ুন: Earthquake: রাশিয়ায় ৭.৪ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প

অন্যদিকে, যুদ্ধ থামাতে কূটনৈতিক তৎপরতাও চলছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করেন। কিন্তু তারপরও মস্কোর আক্রমণের তীব্রতা কোনওভাবেই কমেনি।

আরও পড়ুন: Indian National in Russian Army: রুশ সেনায় যোগ দেবেন না, ভারতীয়দের সতর্ক করল কেন্দ্রীয় সরকার

এর আগে, সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ‘শাংরি লা ডায়ালগ’ প্রতিরক্ষা সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি অভিযোগ করেছিলেন, চিনের মদতেই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, রাশিয়াকে চিন যতটা সমর্থন দিচ্ছে, তাতে যুদ্ধের অবসান নয়, বরং তা আরও প্রসারিত হচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার মতো চিনের দিকেও রাশিয়ার হয়ে প্রত্যক্ষ সামরিক সহায়তার অভিযোগ বহুবার উঠেছে। যদিও বেজিং তার প্রতিটি অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবুও ইউক্রেন যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া বলছে, চিনের অবস্থান বিশ্ব রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে চলেছে।

এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি এখন বেজিং এবং মস্কোর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং চিনের ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক চালের দিকে।