নাগপুরের স্কুলে সংখ্যালঘু ছাত্রীকে ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা, মামলা দায়ের

- আপডেট : ২১ মে ২০২৫, বুধবার
- / 39
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সংখ্যালঘু মুসলিম ছাত্রীকে স্কুলে ভর্তি না নেওয়ার অভিযোগ উঠল মহারাষ্ট্রের নাগপুরের জারিপটকায় অবস্থিত বেসরকারি এক স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি জনসমক্ষে আসতেই দয়ানন্দ আর্য কন্যা বিদ্যালয় নামের ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে নগর পুলিশে মামলা দায়ের হয়েছে। জানা গিয়েছে, চলতি ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে সংখ্যালঘু মুসলিম পরিবারের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্মীয় কারণে দয়ানন্দ আর্য কন্যা বিদ্যালয়ে ভর্তি না করার মৌখিক নির্দেশ দেন বিদ্যালয়ের সম্পাদক রাজেশ লালওয়ানি। শুধুমাত্র সংখ্যালঘু মুসলিম হওয়ার কারণেই ওই ছাত্রীকে ভর্তি না নেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সহকারী শিক্ষিকা সুমন মাসান্দ বিষয়টি অধ্যক্ষ ড. গীতা হারওয়ানিকে জানান। এরপরেই ওই ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভারতীয় নিয়ম সংহিতার (বিএনএস) অনুচ্ছেদ ২৯৯ অনুযায়ী, যে-কোনও ধর্মে বা ধর্মীয় বিশ্বাসের অবমাননা করে ধর্মীয় অনুভূতি আঘাত করার জন্য নগর পুলিশে মামলা রুজু করা হয়।
উল্লেখ্য, স্কুলে আসন খালি থাকা সত্ত্বেও কেন ওই ছাত্রীকে ভর্তি নেওয়া হয়নি, বিষয়টি অনুসন্ধান করার পর স্কুলের অধ্যক্ষ ড. হারওয়ানিকে ভর্তি প্রক্রিয়ায় যুক্ত কর্মচারীরা জানান, স্কুলের সেক্রেটারি রাজেশ লালওয়ানি তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন যে সংখ্যালঘু সমাজের ছাত্রীদের ভর্তি না করার জন্য। তখনই ড. হারওয়ানি মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে আলোচনার পর বিষয়টি কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি মহারাষ্ট্র রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনেও অভিযোগ জানানো হয়।
বিষয়টি জানতে পেরেই গত ১৩ মে জেলা শিশু সুরক্ষা ইউনিটের কর্মকর্তারা তদন্তের জন্য স্কুল পরিদর্শন করেন এবং ১৪ মে স্কুলের সম্পাদক রাজেশ লালওয়ানি, পড়ুয়া ভর্তির দায়িত্বপ্রাপ্ত সিমরান জ্ঞানচন্দনী এবং শিক্ষিকা অনিতা আর্যের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ২৯৯-এর অধীনে ধর্ম বা ধর্মীয় বিশ্বাসকে অবমাননা করে যে-কোনও শ্রেণির ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃত এবং বিদ্বেষপূর্ণ কাজের অভিযোগে মামলা করেছে।
এ ব্যাপারে মহারাষ্ট্র রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের সদস্য পেয়ারে খান এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘শিক্ষা সবার জন্য, এবং এতে বৈষম্যের কোনও স্থান নেই।’তিনি আশ্বস্ত করেছেন যে শীঘ্রই ওই ছাত্রীকে ভর্তি দেওয়া হবে।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের কাছে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দ্রুত এবং কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক রইস শেখ বলেন, ‘এটি কেবল মর্মান্তিকই নয় ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আমাদের সংবিধানের মূল্যবোধের উপর সরাসরি আক্রমণ।’