‘গেরুয়ার অপমানকারীদের ঈশ্বর শাস্তি দেবেন’: রায়ে আবেগপ্রবণ মন্তব্য সাধ্বী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুরের

- আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 37
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: মুম্বইয়ের বিশেষ এনআইএ আদালতের বিচারক এ কে লাহোটি যখনও রায় পড়া শেষ করেননি, তখনই বেকসুর খালাস ঘোষণায় আবেগে ভেঙে পড়লেন সাধ্বী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর ও কর্নেল শ্রীকান্ত পুরোহিত। মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় দীর্ঘ ১৭ বছর পরে মুক্তি মিলল অপবাদ থেকে। আদালতের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর আদালত চত্বরে কেঁদে ফেলেন এই দুই অভিযুক্ত। প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সাধ্বী প্রজ্ঞা বলেন, ‘‘যাঁরা গেরুয়া বস্ত্রকে কালিমালিপ্ত করতে চেয়েছেন, ঈশ্বর তাঁদের শাস্তি দেবেন।’’
২০০৮ সালের মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন সাধ্বী প্রজ্ঞা, কর্নেল পুরোহিত-সহ সাতজন। বৃহস্পতিবার আদালতের রায়ে তাঁরা সকলেই বেকসুর খালাস পেয়েছেন। আদালতের বাইরে আবেগে ভেসে উঠে সাধ্বী প্রজ্ঞা বলেন, ‘‘এই রায় শুধু আমার নয়, এটা গেরুয়ার জয়। হিন্দুত্বর জয়। বহু বছর ধরে অপমান সহ্য করেছি। মিথ্যে তকমা দিয়ে আমাকে বদনাম করা হয়েছিল। আজ সমস্ত অপবাদ থেকে মুক্তি পেলাম।’’
সাধ্বী প্রজ্ঞার কথায়, ‘‘গেরুয়াকে সন্ত্রাসবাদের রঙে দেখানোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সত্যের জয় হয়েছে। বিচার ব্যবস্থার উপর আমার বিশ্বাস ছিল। যারা ষড়যন্ত্র করেছে, তাদের ঈশ্বর বিচার করবেন।’’
আদালতের রায় শোনার পর আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন কর্নেল শ্রীকান্ত পুরোহিতও। তাঁর বিরুদ্ধে ছিল বিস্ফোরক তৈরির ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ। কোর্টরুমেই তিনি বলেন, ‘‘আমি একজন সৈনিক। দেশের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা আজও অটুট। কিন্তু কিছু মানুষের অসুস্থ মানসিকতার জন্য এত বছর অপমান সইতে হয়েছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার কাছে দেশ আগে। কিন্তু রাজনৈতিক স্বার্থে আমাদের অপমানিত করা হয়েছে। আজ ন্যায় বিচার পেলাম, এটাই সবচেয়ে বড় স্বস্তি।’’
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওয়ে একটি বাইকে বিস্ফোরণ ঘটলে ছ’জনের মৃত্যু ও ১০১ জন আহত হন। সেই মামলায় মূল অভিযুক্তদের মধ্যে ছিলেন সাধ্বী প্রজ্ঞা ও কর্নেল পুরোহিত। এই মামলায় এনআইএ তদন্ত করলেও বহু তথ্য ও সাক্ষ্য প্রমাণ নিয়ে বিতর্ক ছিল শুরু থেকেই। শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পরে বৃহস্পতিবার সাত অভিযুক্তেরই বেকসুর খালাস ঘোষণা করল বিশেষ আদালত।
এই রায় নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। গেরুয়া শিবিরে স্বস্তি থাকলেও, বিরোধী পক্ষ এই রায়ের ন্যায়িকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। তবে অভিযুক্তদের বক্তব্য, ‘‘১৭ বছরের লড়াইয়ের অবসান ঘটল। এখন সম্মানের সঙ্গে বাঁচার অধিকার ফিরে পেলাম।’’
এবার দেখা যাক, এই রায়ের পরবর্তী রাজনৈতিক এবং সামাজিক প্রতিক্রিয়া কীভাবে গতি নেয়।