১৯ জুলাই ২০২৫, শনিবার, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিবরাত্রিতে ক্যান্টিনে আমিষ খাদ্যের পক্ষে সরব, হিন্দু ছাত্রই বহিস্কৃত!

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২৫, শনিবার
  • / 19

নয়াদিল্লি, ১৯ জুলাই : দিল্লির সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির এক বাংলাদেশী ছাত্রকে শুধুমাত্র শিবরাত্রির দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে আমিষ খাবার পরিবেশনের পক্ষে সরব হওয়ার অভিযোগে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।তাঁকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে।

 

একইসঙ্গে ছাত্রদের মেস এর সম্পাদক যশোদা সাবন্তকে এই ‘ অনৈতিক’ কাজের জন্য ৫০০০ টাকা জরিমানা দিতে বলা হয়েছে। সুদীপ দাস নামে ওই বাংলাদেশী ছাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছিলেন।

 

শিবরাত্রির দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে কী খাবার পরিবেশিত হবে, তা নিয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এস এফ আই এবং এ বি ভি পির ছাত্রদের মধ্যে বচসা হয়। এস এফ আই বলেছিল, আমিষ খাবারই পরিবেশিত হবে। কারণ শিবরাত্রির সঙ্গে ছাত্রদের কারও কোনও সম্পর্ক নেই।

 

কিন্তু বিজেপির ছাত্র শাখা এবিভিপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, কোনও মতেই মহাশিবরাত্রির দিন আমিষ খাওয়া যাবে না। তাতে মহা পাপ হবে। বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এস এফ আই বলেছিল, তাদের কোনও পাপ হবে না। যাই হোক, এই বচসার পরে ক্যান্টিনে আমিষ খাবারই পরিবেশিত হয়। এরপর তা নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক কমিটি তদন্ত শুরু করে। সেই কমিটির রিপোর্টে সুদীপ দাসকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়। কারণ আমিষ খাবারের পক্ষে ওই বেশি সরব হয়েছিল।

 

রিপোর্টে বলা হয়, আগেও ২০২২ সালে সুদীপ নাকি দুর্ব্যবহার করেছিলেন। সুতরাং তাঁর বিরুদ্ধে একাধিকবার শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। তাঁকে শুধু যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তাই নয়, ভবিষ্যতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি আর ভর্তির কোনও সুযোগ পাবেন না।

 

এস এফ আই এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে বলেছে, এবিভিপি জোর করে কে কী খাবেন তা ঠিক করে দিচ্ছে। এটা ধর্মনিরপেক্ষতার উপর চরম আঘাত। যেদিন দুই ছাত্র সংগঠনের মধ্যে বচসা থেকে হাতাহাতি শুরু হয় সেদিন স্থানীয় থানায় খবর দেওয়া হয়। থানা থেকে পুলিশ আসে, কিন্তু কোনও অভিযোগ রুজু করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুলিশকে বলেছিল যে, বিষয়টি তাঁরাই মিটিয়ে নেবেন। এখনও অবধি সুদীপ বা ওই মেস সম্পাদকের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

শিবরাত্রিতে ক্যান্টিনে আমিষ খাদ্যের পক্ষে সরব, হিন্দু ছাত্রই বহিস্কৃত!

আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২৫, শনিবার

নয়াদিল্লি, ১৯ জুলাই : দিল্লির সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির এক বাংলাদেশী ছাত্রকে শুধুমাত্র শিবরাত্রির দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে আমিষ খাবার পরিবেশনের পক্ষে সরব হওয়ার অভিযোগে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।তাঁকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে।

 

একইসঙ্গে ছাত্রদের মেস এর সম্পাদক যশোদা সাবন্তকে এই ‘ অনৈতিক’ কাজের জন্য ৫০০০ টাকা জরিমানা দিতে বলা হয়েছে। সুদীপ দাস নামে ওই বাংলাদেশী ছাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছিলেন।

 

শিবরাত্রির দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে কী খাবার পরিবেশিত হবে, তা নিয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এস এফ আই এবং এ বি ভি পির ছাত্রদের মধ্যে বচসা হয়। এস এফ আই বলেছিল, আমিষ খাবারই পরিবেশিত হবে। কারণ শিবরাত্রির সঙ্গে ছাত্রদের কারও কোনও সম্পর্ক নেই।

 

কিন্তু বিজেপির ছাত্র শাখা এবিভিপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, কোনও মতেই মহাশিবরাত্রির দিন আমিষ খাওয়া যাবে না। তাতে মহা পাপ হবে। বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এস এফ আই বলেছিল, তাদের কোনও পাপ হবে না। যাই হোক, এই বচসার পরে ক্যান্টিনে আমিষ খাবারই পরিবেশিত হয়। এরপর তা নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক কমিটি তদন্ত শুরু করে। সেই কমিটির রিপোর্টে সুদীপ দাসকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়। কারণ আমিষ খাবারের পক্ষে ওই বেশি সরব হয়েছিল।

 

রিপোর্টে বলা হয়, আগেও ২০২২ সালে সুদীপ নাকি দুর্ব্যবহার করেছিলেন। সুতরাং তাঁর বিরুদ্ধে একাধিকবার শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। তাঁকে শুধু যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তাই নয়, ভবিষ্যতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি আর ভর্তির কোনও সুযোগ পাবেন না।

 

এস এফ আই এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে বলেছে, এবিভিপি জোর করে কে কী খাবেন তা ঠিক করে দিচ্ছে। এটা ধর্মনিরপেক্ষতার উপর চরম আঘাত। যেদিন দুই ছাত্র সংগঠনের মধ্যে বচসা থেকে হাতাহাতি শুরু হয় সেদিন স্থানীয় থানায় খবর দেওয়া হয়। থানা থেকে পুলিশ আসে, কিন্তু কোনও অভিযোগ রুজু করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুলিশকে বলেছিল যে, বিষয়টি তাঁরাই মিটিয়ে নেবেন। এখনও অবধি সুদীপ বা ওই মেস সম্পাদকের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।