১৩ অক্টোবর ২০২৫, সোমবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নাগরিকদের নিরাপত্তা দিয়ে গাজায় সক্রিয় হামাস

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার
  • / 170

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ইসরাইলের নিরাপত্তা মহলের অনেকেই মনে করেছিল, ইসরাইলের সামরিক অভিযান হামাসের যুদ্ধের সক্ষমতা প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই সেনা সরিয়ে নিলেও গাজায় নিয়ন্ত্রণ অটুট রাখার জন্য নেতানিয়াহুরা স্থানীয় কিছু গোষ্ঠীকে অস্ত্র দিয়ে, অর্থ দিয়ে ‘ফিলিস্তিন যোদ্ধা’র বেশ ধারণ করতে বলেছিল। তারা আসলে ইসরাইলি ‘এজেন্ট’।

তবে হামাসের শক্তি এখনও অটুট। তাই যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরপরই হামাস গাজার সর্বত্র নিজেদের যোদ্ধাদের মোতায়েন করেছে। তারা দেখিয়ে দিয়েছে যে গাজার ভেতরে ক্ষমতা ধরে রাখার সক্ষমতা তারা এখনো হারায়নি। কিছু জায়গায় এই এজেন্টরা পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছিল। সেখানে হামাস আক্রমণ করে তাদের ঠান্ডা করে দিয়েছে।

আরও পড়ুন: গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সংশোধনের দাবি হামাসের

উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ার পাশাপাশি গাজা সিটির সাবরা এলাকাতেও এই সংঘাতের খবর মিলেছে। বেইত লাহিয়াতে আশরাফ আল-মানসির অনুগামী বন্দুকধারীদের সঙ্গে হামাস বাহিনীর সরাসরি গুলির লড়াই শুরু হয়। একই সময়ে গাজা সিটির সাবরা এলাকায় দাজমাস ক্ল্যান এবং হামাসের মধ্যে আরেকটি সংঘর্ষের খবর আসে, যেখানে হামাসের এক উচ্চপদস্থ সামরিক কমান্ডারের ছেলে মুহাম্মদ ইমাদ আকল নিহত হন। এই কমান্ডারকে এর আগে হত্যা করা হয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হামাস বাহিনী গাজা সিটির আল-সাবরা এলাকাটিকে ঘিরে ফেলে। এলাকায় শান্তি ফেরাতে বিপুল সংখ্যক স্নাইপার মোতায়েন করা হয় হামাসের পক্ষ থেকে।

আরও পড়ুন: ৯ জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ২ মাসের যুদ্ধবিরতির শর্ত দিল হামাস

এদিকে ঘোষিত যুদ্ধবিরতি অনুযায়ী, সোমবারের মধ্যে ইসরাইলি জিম্মিদের বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার কথা। তবে পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে হামাসকে নিরস্ত্র হতে হবে। ওই সময় গাজায় নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়ার কথা একটি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা বাহিনীর।

আরও পড়ুন: অস্ত্র হাতে ট্রাম্পের গাজা প্ল্যানের বিরুদ্ধে দাঁড়াও : Hamas

কিন্তু যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসরাইল তাদের ‘এজেন্ট বাহিনী’ দিয়ে গাজা দখলে রাখার চেষ্টা করেছে। হামাস তাদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দিয়েছে। এসব গোত্র ইসরাইলি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে সহায়তা ও অস্ত্র পেয়েছিল। হামাস প্রতিদ্বন্দ্বী সব গোষ্ঠীকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অস্ত্র সমর্পণ ও তাদের নেতাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে। রাফাহ অঞ্চলের বৃহত্তম প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী ইয়াসির আবু শাবাবের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা পপুলার ফোর্সেস এই নির্দেশ মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

ইসরাইল তাদের অস্ত্র, সাঁজোয়া যান ও প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। ইসরাইলের হামলায় শুধু হামাসের যোদ্ধারাই নয়, গাজায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ফিলিস্তিনি পুলিশ সদস্যরাও লক্ষ্যবস্তু হয়েছিল। হামাস জানিয়েছে, তারা এখন ‘নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা জোরদার করা এবং নাগরিকদের অধিকার রক্ষার’ দায়িত্ব নেবে।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নাগরিকদের নিরাপত্তা দিয়ে গাজায় সক্রিয় হামাস

আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ইসরাইলের নিরাপত্তা মহলের অনেকেই মনে করেছিল, ইসরাইলের সামরিক অভিযান হামাসের যুদ্ধের সক্ষমতা প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই সেনা সরিয়ে নিলেও গাজায় নিয়ন্ত্রণ অটুট রাখার জন্য নেতানিয়াহুরা স্থানীয় কিছু গোষ্ঠীকে অস্ত্র দিয়ে, অর্থ দিয়ে ‘ফিলিস্তিন যোদ্ধা’র বেশ ধারণ করতে বলেছিল। তারা আসলে ইসরাইলি ‘এজেন্ট’।

তবে হামাসের শক্তি এখনও অটুট। তাই যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরপরই হামাস গাজার সর্বত্র নিজেদের যোদ্ধাদের মোতায়েন করেছে। তারা দেখিয়ে দিয়েছে যে গাজার ভেতরে ক্ষমতা ধরে রাখার সক্ষমতা তারা এখনো হারায়নি। কিছু জায়গায় এই এজেন্টরা পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছিল। সেখানে হামাস আক্রমণ করে তাদের ঠান্ডা করে দিয়েছে।

আরও পড়ুন: গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সংশোধনের দাবি হামাসের

উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ার পাশাপাশি গাজা সিটির সাবরা এলাকাতেও এই সংঘাতের খবর মিলেছে। বেইত লাহিয়াতে আশরাফ আল-মানসির অনুগামী বন্দুকধারীদের সঙ্গে হামাস বাহিনীর সরাসরি গুলির লড়াই শুরু হয়। একই সময়ে গাজা সিটির সাবরা এলাকায় দাজমাস ক্ল্যান এবং হামাসের মধ্যে আরেকটি সংঘর্ষের খবর আসে, যেখানে হামাসের এক উচ্চপদস্থ সামরিক কমান্ডারের ছেলে মুহাম্মদ ইমাদ আকল নিহত হন। এই কমান্ডারকে এর আগে হত্যা করা হয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হামাস বাহিনী গাজা সিটির আল-সাবরা এলাকাটিকে ঘিরে ফেলে। এলাকায় শান্তি ফেরাতে বিপুল সংখ্যক স্নাইপার মোতায়েন করা হয় হামাসের পক্ষ থেকে।

আরও পড়ুন: ৯ জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ২ মাসের যুদ্ধবিরতির শর্ত দিল হামাস

এদিকে ঘোষিত যুদ্ধবিরতি অনুযায়ী, সোমবারের মধ্যে ইসরাইলি জিম্মিদের বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার কথা। তবে পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে হামাসকে নিরস্ত্র হতে হবে। ওই সময় গাজায় নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়ার কথা একটি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা বাহিনীর।

আরও পড়ুন: অস্ত্র হাতে ট্রাম্পের গাজা প্ল্যানের বিরুদ্ধে দাঁড়াও : Hamas

কিন্তু যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসরাইল তাদের ‘এজেন্ট বাহিনী’ দিয়ে গাজা দখলে রাখার চেষ্টা করেছে। হামাস তাদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দিয়েছে। এসব গোত্র ইসরাইলি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে সহায়তা ও অস্ত্র পেয়েছিল। হামাস প্রতিদ্বন্দ্বী সব গোষ্ঠীকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অস্ত্র সমর্পণ ও তাদের নেতাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে। রাফাহ অঞ্চলের বৃহত্তম প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী ইয়াসির আবু শাবাবের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা পপুলার ফোর্সেস এই নির্দেশ মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

ইসরাইল তাদের অস্ত্র, সাঁজোয়া যান ও প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। ইসরাইলের হামলায় শুধু হামাসের যোদ্ধারাই নয়, গাজায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ফিলিস্তিনি পুলিশ সদস্যরাও লক্ষ্যবস্তু হয়েছিল। হামাস জানিয়েছে, তারা এখন ‘নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা জোরদার করা এবং নাগরিকদের অধিকার রক্ষার’ দায়িত্ব নেবে।