আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের পথে ইরান

- আপডেট : ২৬ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 195
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইরান। বুধবার ভোটাভুটির মাধ্যমে ইরানের পার্লামেন্ট সদস্যরা এই পরিকল্পনা অনুমোদন করেন। এই প্রস্তাবের বিপক্ষে কোনও প্রতিনিধি ভোট দেননি।
ইরানের সংসদ সদস্য আলিরেজা সালিমি জানান, যতদিন না দেশের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে, ততদিন আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার পরিদর্শকরা ইরানে ঢুকতে পারবে না। সংসদে ভোটাভুটির আগে স্পিকার মুহাম্মদ বাকের কালিবাফ কড়া ভাষায় আইএইএ-র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমেরিকা ও ইসরাইল মিলে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা করল, অথচ আইএইএ একটা কথাও বলল না। এমন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ বরদাস্ত করা যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ইসরাইল ইরানের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি থামাতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং ইরানের হামলায় তাদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। ‘আমরা এখনও আমাদের সব শক্তি ব্যবহার করিনি। আমাদের যদি বাধ্য করা হয়, তাহলে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সরবরাহেও প্রভাব ফেলতে পারি।’
এদিকে, ইরানের সংসদে আরও প্রস্তাব উঠেছে;আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি-কে ইরানে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ইরান বলছে, তাঁর রিপোর্টের ভিত্তিতেই আইএইএ সম্প্রতি ইরানের বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রস্তাব নেয়, যা পরে ইসরাইল-আমেরিকার হামলার পথ খুলে দেয়।
গ্রোসি-র রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, ইরান পারমাণবিক চুক্তির নিয়ম ভেঙেছে। এরপরই ১৩ জুন ইসরাইল ও আমেরিকা ইরানের ফারদো, নাতনজ ও ইসফাহান-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালায়। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা পরে জানায়, হামলার ক্ষতি খুবই কম হয়েছে, এবং ইরানের প্রকল্প হয়তো কয়েক মাস পিছিয়েছে মাত্র।
ইরানের বিদেশ মন্ত্র বলেছে, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা এখন নিরপেক্ষতা হারিয়ে একতরফা অবস্থানে পৌঁছেছে। প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, ‘এই রিপোর্টের কারণে ইরানে নিরপরাধ মানুষ মারা গেছে। গ্রোসি তার জন্য দায় এড়াতে পারেন না।’
ইরানের পারমাণবিক সংস্থা জানিয়েছে, তারা সব আন্তর্জাতিক আইনি পথ অনুসরণ করে নিজেদের অধিকার রক্ষা করবে। শান্তিপূর্ণ কাজে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার তাদের অধিকার;এটা কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না।