০৬ নভেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সবুজ মেরুন পতাকায় মোড়া হল সুব্রতর দেহ

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৫ নভেম্বর ২০২১, শুক্রবার
  • / 37

রবীন্দ্রসদনে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানালেন সৃঞ্জয় বোস...। ছবি -সন্দীপ সাহা

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ দীপাবলির আলোর রোশনাইয়ের মাঝখানেই বাংলার রাজনীতির আকাশে নক্ষত্র পতন। যে মানুষটার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার কথা ছিল, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সেই সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আকস্মিক প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলা। শুধু রাজনীতির আঙিনা নয়, তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ কলকাতা ময়দানও। বিশেষ করে মোহনবাগান ক্লাব। কারণ সুব্রত মুখোপাধ্যায় ছিলেন মোহনবাগান ক্লাবের নয়নের মণি, ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট। যেখানেই মোহনবাগানের খেলা থাকত একটা সময়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড মিটিয়ে সেই খেলা দেখতে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকতেন তিনি।

সবুজ মেরুন পতাকায় মোড়া হল সুব্রতর দেহ

শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দার্জিলিং এ গিয়ে তার মোহনবাগানের খেলা দেখার ঘটনাও ভুলতে পারবেন না বাংলার ফুটবলপ্রেমী জনতা।  মোহনবাগান মাঠ হোক কিংবা সল্টলেক স্টেডিয়াম, মাঠে হাজির সুব্রত মুখোপাধ্যায়। হাজার ব্যস্ততার ফাঁকেও সময় করে নিতেন তিনি।

সদা হাস্যময় এই মানুষটি শুধু ক্লাবের ভাইস-প্রেসিডেন্ট নন, ছিলেন গোটা ক্লাবের কাছে এই অভিভাবকের মতো। কিংবদন্তি সুব্রত ভট্টাচার্যকে মোহনবাগান ক্লাবে সই করানো, কিংবা ক্লাবের রাজনৈতিক ডামাডোলে সমাধান সূত্র বের করে দেওয়া, সবেতেই সুব্রত মুখোপাধ্যায় অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন। তাই তাঁর মৃত্যু মনে প্রাণে মেনে নিতে পারছেন না মোহনবাগান ক্লাবের কোনও কর্মকর্তাই। মন্ত্রী নয়, ফুটবল পাগল সহ সভাপতি সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে হারিয়ে বাগানে যেন শোকের ছায়া। এটা যেন কেউ বিশ্বাস করতে পারছেন না আর কোনো মোহনবাগান ম্যাচে সবুজ মেরুন ভিআইপি গ্যালারিতে থাকবেন না সুব্রত মুখোপাধ্যায়।

ক্লাব সচিব সঞ্জয় বসু জানালেন,’তিনি তো আমাদের কাছে শুধু সহ-সভাপতি ছিলেন না, ছিলেন অনেক কিছু। আমরা তাকে পেয়েছিলাম অভিভাবকের মতো। ক্লাবের ভালো-মন্দ সবেতেই তার পরামর্শ আমাদের কাছে মন্ত্রের মতো কাজ করতো। প্রতিটা উৎসব-অনুষ্ঠান ফুটবল ম্যাচে আমরা তাকে পাশে পেতাম। এটা বিশ্বাস করতে খুব কষ্ট হচ্ছে সেই সুব্রত মুখোপাধ্যায় আর নেই।’

সবুজ মেরুন পতাকায় মোড়া হল সুব্রতর দেহ

শুক্রবার রবীন্দ্রসদনে শায়িত সুব্রত মুখোপাধ্যায় এর মরদেহে শ্রদ্ধা অর্পণ করে এলেন মোহনবাগান সচিব সৃঞ্জয় বসু,  অর্থসচিব দেবাশীষ দত্ত এবং প্রাক্তন ফুটবলার সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়। সবুজ মেরুন পতাকায় মুড়ে দেওয়া হল সুব্রত মুখোপাধ্যাযয়ের মরদেহ। ক্লাবের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হল। শুধু মোহনবাগান নয়, ইস্টবেঙ্গল-এর সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক ছিল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। কিছুদিন আগেই ইস্টবেঙ্গলকে নিজের বিধায়ক কোটা থেকে অ্যাম্বুলেন্স দান করেছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী। তাই তার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে রবীন্দ্রসদনে হাজির ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তারাও। ছিলেন দেবব্রত সরকারসহ অনেকেই। মহামেডান স্পোর্টিং এর তরফ থেকেও শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানো হল সুব্রত মুখোপাধ্যায় কে।

একটা সময় তিনি বলতেন,’বাংলার ফুটবল বাঁচলে দেশের ফুটবলও বাঁচবে।’ সে কথা এখন অতীত হয়ে গেল। বাংলার ফুটবলে থেকে যাবে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহামেডান। সশরীরে থাকবেন না শুধু সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি থাকবেন ফ্রেমবন্দি হয়ে। থেকে যাবে শুধু তার ফুটবল মাঠের স্মৃতিগুলো।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সবুজ মেরুন পতাকায় মোড়া হল সুব্রতর দেহ

আপডেট : ৫ নভেম্বর ২০২১, শুক্রবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ দীপাবলির আলোর রোশনাইয়ের মাঝখানেই বাংলার রাজনীতির আকাশে নক্ষত্র পতন। যে মানুষটার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার কথা ছিল, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সেই সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আকস্মিক প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলা। শুধু রাজনীতির আঙিনা নয়, তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ কলকাতা ময়দানও। বিশেষ করে মোহনবাগান ক্লাব। কারণ সুব্রত মুখোপাধ্যায় ছিলেন মোহনবাগান ক্লাবের নয়নের মণি, ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট। যেখানেই মোহনবাগানের খেলা থাকত একটা সময়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড মিটিয়ে সেই খেলা দেখতে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকতেন তিনি।

সবুজ মেরুন পতাকায় মোড়া হল সুব্রতর দেহ

শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দার্জিলিং এ গিয়ে তার মোহনবাগানের খেলা দেখার ঘটনাও ভুলতে পারবেন না বাংলার ফুটবলপ্রেমী জনতা।  মোহনবাগান মাঠ হোক কিংবা সল্টলেক স্টেডিয়াম, মাঠে হাজির সুব্রত মুখোপাধ্যায়। হাজার ব্যস্ততার ফাঁকেও সময় করে নিতেন তিনি।

সদা হাস্যময় এই মানুষটি শুধু ক্লাবের ভাইস-প্রেসিডেন্ট নন, ছিলেন গোটা ক্লাবের কাছে এই অভিভাবকের মতো। কিংবদন্তি সুব্রত ভট্টাচার্যকে মোহনবাগান ক্লাবে সই করানো, কিংবা ক্লাবের রাজনৈতিক ডামাডোলে সমাধান সূত্র বের করে দেওয়া, সবেতেই সুব্রত মুখোপাধ্যায় অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন। তাই তাঁর মৃত্যু মনে প্রাণে মেনে নিতে পারছেন না মোহনবাগান ক্লাবের কোনও কর্মকর্তাই। মন্ত্রী নয়, ফুটবল পাগল সহ সভাপতি সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে হারিয়ে বাগানে যেন শোকের ছায়া। এটা যেন কেউ বিশ্বাস করতে পারছেন না আর কোনো মোহনবাগান ম্যাচে সবুজ মেরুন ভিআইপি গ্যালারিতে থাকবেন না সুব্রত মুখোপাধ্যায়।

ক্লাব সচিব সঞ্জয় বসু জানালেন,’তিনি তো আমাদের কাছে শুধু সহ-সভাপতি ছিলেন না, ছিলেন অনেক কিছু। আমরা তাকে পেয়েছিলাম অভিভাবকের মতো। ক্লাবের ভালো-মন্দ সবেতেই তার পরামর্শ আমাদের কাছে মন্ত্রের মতো কাজ করতো। প্রতিটা উৎসব-অনুষ্ঠান ফুটবল ম্যাচে আমরা তাকে পাশে পেতাম। এটা বিশ্বাস করতে খুব কষ্ট হচ্ছে সেই সুব্রত মুখোপাধ্যায় আর নেই।’

সবুজ মেরুন পতাকায় মোড়া হল সুব্রতর দেহ

শুক্রবার রবীন্দ্রসদনে শায়িত সুব্রত মুখোপাধ্যায় এর মরদেহে শ্রদ্ধা অর্পণ করে এলেন মোহনবাগান সচিব সৃঞ্জয় বসু,  অর্থসচিব দেবাশীষ দত্ত এবং প্রাক্তন ফুটবলার সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়। সবুজ মেরুন পতাকায় মুড়ে দেওয়া হল সুব্রত মুখোপাধ্যাযয়ের মরদেহ। ক্লাবের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হল। শুধু মোহনবাগান নয়, ইস্টবেঙ্গল-এর সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক ছিল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। কিছুদিন আগেই ইস্টবেঙ্গলকে নিজের বিধায়ক কোটা থেকে অ্যাম্বুলেন্স দান করেছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী। তাই তার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে রবীন্দ্রসদনে হাজির ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তারাও। ছিলেন দেবব্রত সরকারসহ অনেকেই। মহামেডান স্পোর্টিং এর তরফ থেকেও শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানো হল সুব্রত মুখোপাধ্যায় কে।

একটা সময় তিনি বলতেন,’বাংলার ফুটবল বাঁচলে দেশের ফুটবলও বাঁচবে।’ সে কথা এখন অতীত হয়ে গেল। বাংলার ফুটবলে থেকে যাবে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহামেডান। সশরীরে থাকবেন না শুধু সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি থাকবেন ফ্রেমবন্দি হয়ে। থেকে যাবে শুধু তার ফুটবল মাঠের স্মৃতিগুলো।