০৪ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উত্তরপ্রদেশ: মুসলিম যুবককে ইলেকট্রিক পোলে বেঁধে ব্যাপক মারধর-নির্যাতন

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ৮ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার
  • / 120

লখনউ: রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে ছেলে। স্থানীয় একটি ওষুধের দোকানে ফোন করে কিছু ওষুধ দিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন এক মহিলা। ওই রাতেই মহিলাকে ওষুধ দিতে গিয়েছিলেন দোকানের এক কর্মী। ধর্মে মুসলিম হওয়ায় ওই কর্মীকে আটক করে ব্যাপক মারধর করে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বদায়ুন জেলায় ইসলামনগর এলাকায়। সূত্রের খবর, শিখা সাগর নামে এক মহিলার দু’বছরের ছেলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয় ওষুধের দোকানে কর্মরত আসিফকে ফোন করে কিছু ওষুধ দিয়ে যেতে বলেছিলেন তিনি। অভিযোগ, শনিবার রাত্রি সাড়ে ১১টা নাগাদ ওষুধ নিয়ে মহিলার বাড়ি পৌঁছালে সইফিকে ঘিরে ধরে বেশ কয়েকজন হিন্দুত্ববাদী। তারপর মুসলিম যুবককে ইলেকট্রিক পোলে বেঁধে ব্যাপক মারধর করা হয়। চলতে থাকে একের পর এক নির্যাতন ও শারীরিক নিগৃহ। ঘটনার ভিডিয়োও রেকর্ড করে অভিযুক্তরা। মুলসিম যুবককে নিগৃহ করার ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।

শিখা সাগর অভিযোগ করে বলেন, আসিফ তার বাড়িতে পৌঁছানো মাত্রই এলাকা থেকে একদল হিন্দুত্ববাদী এসে হাজির হয়। আসিফ মুসলিম জানতে পেরে তারা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। হামলাকারীদের মধ্যে ছিলেন মহাবীর, মহেশ, মণীশ, ওমপাল, শের সিং, মেঘ সিং, কুলদীপ এবং আরও কয়েকজন। আসিফকে তারা টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে ইলেকট্রিক পোলে বেঁধে রাখে। তারপর একে একে লাঠি দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে।

আরও পড়ুন: কর্নাটকে চোর সন্দেহে দলিত ছেলেকে খুঁটিতে বেঁধে বেধড়ক মার,অভিযুক্ত উচ্চবর্ণের দশজনের বিরুদ্ধে মামলা

এই ঘটনার পর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মহিলা। অভিযোগের ভিত্তিতে ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। অভিযোগে শিখা সাগর লেখেন, “যে মুহূর্তে তারা তার ধর্ম জানতে পারে, তখনই তারা তার উপর হামলা চালায়। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকেও গালিগালাজ করে। এমনকি মেরে ফেলার হুমকিও দেয়।”

মুসলিম যুবকের ওপর এই আক্রমণ এলাকায় ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ধর্মের ভিত্তিতে মুসলিমদের লক্ষ্যবস্তু করার ক্রমবর্ধমান ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এক বাসিন্দার কথায়, “এটা শুধু একজনের ওপর হামলা নয়, মানবতার ওপর হামলা। শুধু মুসলিম হওয়ার কারণে অসুস্থ শিশুকে সাহায্য করার জন্য কাউকে কীভাবে শাস্তি দেওয়া যায়?”

ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে জানিয়ে ইন্সপেক্টর বিশাল প্রতাপ সিং বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছি। ভাইরাল ভিডিয়োটি দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা তাদের দ্রুত গ্রেফতার করব। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই।”

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

উত্তরপ্রদেশ: মুসলিম যুবককে ইলেকট্রিক পোলে বেঁধে ব্যাপক মারধর-নির্যাতন

আপডেট : ৮ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার

লখনউ: রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে ছেলে। স্থানীয় একটি ওষুধের দোকানে ফোন করে কিছু ওষুধ দিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন এক মহিলা। ওই রাতেই মহিলাকে ওষুধ দিতে গিয়েছিলেন দোকানের এক কর্মী। ধর্মে মুসলিম হওয়ায় ওই কর্মীকে আটক করে ব্যাপক মারধর করে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বদায়ুন জেলায় ইসলামনগর এলাকায়। সূত্রের খবর, শিখা সাগর নামে এক মহিলার দু’বছরের ছেলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয় ওষুধের দোকানে কর্মরত আসিফকে ফোন করে কিছু ওষুধ দিয়ে যেতে বলেছিলেন তিনি। অভিযোগ, শনিবার রাত্রি সাড়ে ১১টা নাগাদ ওষুধ নিয়ে মহিলার বাড়ি পৌঁছালে সইফিকে ঘিরে ধরে বেশ কয়েকজন হিন্দুত্ববাদী। তারপর মুসলিম যুবককে ইলেকট্রিক পোলে বেঁধে ব্যাপক মারধর করা হয়। চলতে থাকে একের পর এক নির্যাতন ও শারীরিক নিগৃহ। ঘটনার ভিডিয়োও রেকর্ড করে অভিযুক্তরা। মুলসিম যুবককে নিগৃহ করার ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।

শিখা সাগর অভিযোগ করে বলেন, আসিফ তার বাড়িতে পৌঁছানো মাত্রই এলাকা থেকে একদল হিন্দুত্ববাদী এসে হাজির হয়। আসিফ মুসলিম জানতে পেরে তারা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। হামলাকারীদের মধ্যে ছিলেন মহাবীর, মহেশ, মণীশ, ওমপাল, শের সিং, মেঘ সিং, কুলদীপ এবং আরও কয়েকজন। আসিফকে তারা টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে ইলেকট্রিক পোলে বেঁধে রাখে। তারপর একে একে লাঠি দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে।

আরও পড়ুন: কর্নাটকে চোর সন্দেহে দলিত ছেলেকে খুঁটিতে বেঁধে বেধড়ক মার,অভিযুক্ত উচ্চবর্ণের দশজনের বিরুদ্ধে মামলা

এই ঘটনার পর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মহিলা। অভিযোগের ভিত্তিতে ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। অভিযোগে শিখা সাগর লেখেন, “যে মুহূর্তে তারা তার ধর্ম জানতে পারে, তখনই তারা তার উপর হামলা চালায়। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকেও গালিগালাজ করে। এমনকি মেরে ফেলার হুমকিও দেয়।”

মুসলিম যুবকের ওপর এই আক্রমণ এলাকায় ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ধর্মের ভিত্তিতে মুসলিমদের লক্ষ্যবস্তু করার ক্রমবর্ধমান ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এক বাসিন্দার কথায়, “এটা শুধু একজনের ওপর হামলা নয়, মানবতার ওপর হামলা। শুধু মুসলিম হওয়ার কারণে অসুস্থ শিশুকে সাহায্য করার জন্য কাউকে কীভাবে শাস্তি দেওয়া যায়?”

ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে জানিয়ে ইন্সপেক্টর বিশাল প্রতাপ সিং বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছি। ভাইরাল ভিডিয়োটি দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা তাদের দ্রুত গ্রেফতার করব। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই।”