হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প-জ়েলেনস্কি বৈঠক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির পথে ইতিবাচক অগ্রগতি

- আপডেট : ১৯ অগাস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার
- / 10
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: গত ফেব্রুয়ারিতে ওভাল অফিসে প্রকাশ্য বিতণ্ডায় জড়িয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস পরে ফের একই স্থানে মুখোমুখি বসলেন তাঁরা। এ বার আর তর্ক নয়, বরং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে গঠনমূলক আলোচনাই মূল এজেন্ডা। যদিও রাতারাতি কোনও সমাধান হয়নি, তবে বৈঠক থেকে যুদ্ধবিরতির পথে ইতিবাচক অগ্রগতি মিলেছে বলে জানানো হয়েছে।
হোয়াইট হাউসে প্রথমে ট্রাম্প-জ়েলেনস্কি বৈঠক করেন, পরে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে যৌথ বৈঠকে বসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বৈঠক চলাকালীন মাঝপথে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করে দীর্ঘ আলোচনা করেন ট্রাম্প। পরে ফের বৈঠক এগিয়ে নিয়ে যান তিনি। ইউক্রেনের নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যৎ যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গ উঠে আসে আলোচনায়। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ বৈঠক শেষে জানান, “ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে আমেরিকার আশ্বাসই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাপ্তি।”
জ়ার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিক মার্জ় দাবি করেছেন, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যেই ভ্লাদিমির পুতিন এবং জ়েলেনস্কি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন। ইউক্রেন প্রেসিডেন্টও নিশ্চিত করেছেন যে, রাশিয়া আলোচনায় রাজি হয়েছে এবং পরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেরও সম্ভাবনা রয়েছে। তবে জ়েলেনস্কির বক্তব্য, এই বৈঠকে কোনও আগাম শর্ত মেনে নেওয়া হবে না।
বৈঠক শেষে হোয়াইট হাউসের বাইরে জ়েলেনস্কি জানান, ইউরোপীয় আর্থিক সহায়তায় ইউক্রেন আমেরিকা থেকে ৯ হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র কিনবে। যদিও এখনও চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি, তবে আগামী ৭-১০ দিনের মধ্যেই চুক্তি সম্পন্ন হতে পারে। পরবর্তী সময়ে ট্রাম্পও নিশ্চিত করেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমেরিকা ও ইউরোপ একসঙ্গে কাজ করবে।
এ বার জ়েলেনস্কির সফরসঙ্গী ছিলেন ইউরোপীয় নেতারা— ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, জ়ার্মানির চ্যান্সেলর মার্জ়, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজ়ান্ডার স্টাব, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন এবং নেটো প্রধান মার্ক রুটে। ফলে ফেব্রুয়ারির বিতণ্ডার পুনরাবৃত্তি যে এ বার হবে না, তা অনেকটাই অনুমান করা গিয়েছিল।
তবে বৈঠক চলাকালীন ইউক্রেনের মানচিত্র নিয়ে কিছুটা মতবিরোধ তৈরি হয় ট্রাম্প-জ়েলেনস্কির মধ্যে। ইউক্রেনের কত শতাংশ ভূখণ্ড রাশিয়ার দখলে রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা চলাকালীন এই বিতর্কের সূত্রপাত হয়। যদিও তা বিতণ্ডায় রূপ নেয়নি। বৈঠক শেষে জ়েলেনস্কি জানান, “আমার কাছে পরিসংখ্যান পরিষ্কার। আমি জানি কতটা এলাকা দখল করা হয়েছে।” নেটো প্রধান অবশ্য স্পষ্ট করেছেন— ইউক্রেনের মানচিত্র নতুন করে আঁকার কোনও আলোচনা হয়নি।