কৌস্তভের গ্রেফতারির প্রতিবাদে কংগ্রেস, ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দিল আদালত

- আপডেট : ৪ মার্চ ২০২৩, শনিবার
- / 17
পারিজাত মোল্লা: শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালত থেকে এক হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেলেন কংগ্রেস নেতা তথা কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচী। শনিবার ভোর রাতে কৌস্তভকে গ্রেফতার করে পুলিশ । কংগ্রেস যুব নেতা ও আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচীকে জামিন দিল ব্যাঙ্কশাল আদালত। এদিন ব্যাঙ্কশাল কোর্টে এই নেতা ও আইনজীবী কে ১০ মার্চ পর্যন্ত হেফাজতে নিতে চেয়েছিল বড়তলা থানার পুলিশ । কিন্তু তাদের সেই আবেদন গ্রাহ্য হল না ।
শর্তসাপেক্ষে জামিন দেওয়া হল কৌস্তভকে । এক হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেলেন তিনি । এদিন বেলা ২ টো নাগাদ কৌস্তুভের হয়ে মামলার সওয়াল জবাব শুরু করেন রাজ্যসভার সিপিএম সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য । তিনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রশ্ন তোলেন । যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিসেবে রাত ৩টে নাগাদ কীভাবে পুলিশ কোনও আইনজীবীর বাড়িতে যেতে পারে? সে বিষয়টিও উল্লেখ করেন । নোটিশ ছাড়া কীভাবে তাঁকে গ্রেফতার করা হল ? এই প্রশ্ন করা হয় ব্যাঙ্কশাল আদালতে ।বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ছাড়াও কৌস্তভের হয়ে প্রায় একশো জন আইনজীবী এদিন মামলাতে অংশগ্রহণ করেন। রাজ্য সরকারের আইনজীবী তাঁকে পুলিশ হেফাজতে দেওয়ার আবেদন জানান । তবে দীর্ঘ সওয়াল জবাবের মাঝে সরকারি আইনজীবী ও কৌস্তভ বাগচীর আইনজীবীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয় । এর জেরে বিচারক মামলার রায়দান স্থগিত রাখতে চান ।
এদিন বিকাল সাড়ে চারটের পরে কৌস্তভের জামিন দেন বিচারক।কৌস্তভ বাগচীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে শনিবার হাওড়া স্টেশনের সামনে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস । এদিন বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় কংগ্রেসের নেতা ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীকে । জামিন অযোগ্য ধারাতে তাঁকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ । এরপর দুপুর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভে সামিল হন কংগ্রেস কর্মীরা । হাওড়া স্টেশনের চত্বরে কংগ্রেস নেতৃত্ব ও কর্মীরা প্রতিবাদ জানায় । তাঁদের দাবি ছিল, কৌস্তভ বাগচীকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে ।প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার বটতলা থানায় কৌস্তভের নামে অভিযোগ দায়ের করেন সুমিত সিং নামে এক ব্যক্তি।
তাঁর অভিযোগ পাওয়ার পরই শনিবার কাকভোরে কৌস্তভের বিরুদ্ধে বাড়িতে হানা দেয় কলকাতা পুলিশ। তারপর কয়েক ঘণ্টা জেরার পর গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।পুলিশ কৌস্তভের বিরুদ্ধে হুমকি, উস্কানি দেওয়া, শ্লীলতাহানি সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে। কৌস্তভকে মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর পর ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। সেখানে পুলিশ কৌস্তভকে ১০ মার্চ পর্যন্ত নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানায়।কৌস্তভের হয়ে এদিন আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি আদালতে কৌস্তভের গ্রেফতারিতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
বলেন, কোনও নোটিস না দিয়ে কীভাবে একজনের বাড়িতে ভোর রাতে হানা দিল পুলিশ। কৌস্তভের বিরুদ্ধে কোনও অপরাধমূলক অভিযোগ নেই। এমনকী তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে ৭ বছরের কম যে অপরাধে সাজা রয়েছে, সেখানে গ্রেফতারি বাধ্যতামূলক নয়।পুলিশি হেফাজত চাওয়ার আর্জি কানেই তোলেননি বিচারক। এদিন কৌস্তভের গ্রেফতারি মামলার শুনানিতে এজলাসে বিশৃঙ্খলার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। কৌস্তভের হয়ে ১০০ জন আইনজীবী সওয়াল শুরু করেন। তাঁদের দাবি ছিল, যে কোনও শর্তে কৌস্তভকে জামিন দিতেই হবে। হট্টগোল এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, একসময় এজলাস ছেড়ে বেরিয়ে যান বিচারক।প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ফের কৌস্তভের গ্রেফতারি মামলার সওয়াল জবাব শুরু হয়। শুনানি শেষে বিচারক রায়দান স্থগিত রাখেন কিছুক্ষণের জন্য। এরপর বিকেল ৪:৩০টে নাগাদ শর্ত সাপেক্ষে কংগ্রেস নেতাকে জামিন দেয় ব্যাঙ্কশাল আদালত।