০৬ নভেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানিকে ট্রাম্পের কটাক্ষ

মোক্তার হোসেন মন্ডল
  • আপডেট : ৬ নভেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 77

 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচনা করেছেন জোহরান মামদানি। গত মঙ্গলবারের নির্বাচনে তিনি নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন,যা শুধু শহরের নয়, গোটা আমেরিকার রাজনীতিতেই এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

মাত্র ৩৪ বছর বয়সে মেয়র নির্বাচিত হয়ে মামদানি হয়েছেন গত এক শতাব্দীর মধ্যে নিউইয়র্কের সবচেয়ে কমবয়সী মেয়র। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং নিজ দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রভাবশালী অংশের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও তিনি তরুণ ও স্বল্প আয়ের ভোটারদের জোরালো সমর্থনে জয় ছিনিয়ে নেন।

এ জয় এসেছে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মাত্র ১০ মাস পর, যা অনেকের মতে মার্কিন রাজনীতিতে উদার মূল্যবোধের পুনর্জাগরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বিজয়ের পরদিনই বুধবার কুইন্সের ফ্লাশিং মিডোস করোনা পার্কে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন মামদানি। সেখানে তিনি ঘোষণা করেন, ক্ষমতা গ্রহণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে একটি ‘ট্রানজিশন টিম’ গঠন করা হয়েছে।

মামদানি বলেন, “নিউইয়র্কবাসীর প্রতিটি ডলার সুরক্ষিত রাখতে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। প্রয়োজনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধেও আদালতে যাব।”
তবে তাঁর এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ট্রাম্প। নিউইয়র্কের উন্নয়ন তহবিল বন্ধের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি তিনি বলেছেন, শহরের নিরাপত্তা অজুহাতে সেনা মোতায়েনের কথাও বিবেচনা করবেন।

ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “তাকে ওয়াশিংটনের প্রতি একটু শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। না হলে তার সফল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।” যদিও পরে নিজের বক্তব্য খানিকটা নরম করে বলেন, “আমি চাই নিউইয়র্ক শহর সফল হোক, মামদানি নয়।”

ফ্লোরিডার মিয়ামিতে এক বক্তৃতায় ট্রাম্প আরও একধাপ এগিয়ে বলেন, “একজন কমিউনিস্ট এখন নিউইয়র্কের মেয়র। দেখা যাক, সে শহর চালাতে পারে কি না। আমেরিকা তার সার্বভৌমত্ব হারাচ্ছে।”

বিশ্লেষকদের মতে, মামদানির এই ঐতিহাসিক বিজয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের এই আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া মার্কিন রাজনীতিতে নতুন এক আদর্শিক মুখোমুখির সূচনা করেছে,যেখানে উদার মূল্যবোধ, বহুত্ববাদ ও ইসলামভীতির রাজনীতি আবারও সরাসরি সংঘর্ষে জড়াতে চলেছে।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানিকে ট্রাম্পের কটাক্ষ

আপডেট : ৬ নভেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার

 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচনা করেছেন জোহরান মামদানি। গত মঙ্গলবারের নির্বাচনে তিনি নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন,যা শুধু শহরের নয়, গোটা আমেরিকার রাজনীতিতেই এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

মাত্র ৩৪ বছর বয়সে মেয়র নির্বাচিত হয়ে মামদানি হয়েছেন গত এক শতাব্দীর মধ্যে নিউইয়র্কের সবচেয়ে কমবয়সী মেয়র। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং নিজ দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রভাবশালী অংশের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও তিনি তরুণ ও স্বল্প আয়ের ভোটারদের জোরালো সমর্থনে জয় ছিনিয়ে নেন।

এ জয় এসেছে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মাত্র ১০ মাস পর, যা অনেকের মতে মার্কিন রাজনীতিতে উদার মূল্যবোধের পুনর্জাগরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বিজয়ের পরদিনই বুধবার কুইন্সের ফ্লাশিং মিডোস করোনা পার্কে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন মামদানি। সেখানে তিনি ঘোষণা করেন, ক্ষমতা গ্রহণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে একটি ‘ট্রানজিশন টিম’ গঠন করা হয়েছে।

মামদানি বলেন, “নিউইয়র্কবাসীর প্রতিটি ডলার সুরক্ষিত রাখতে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। প্রয়োজনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধেও আদালতে যাব।”
তবে তাঁর এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ট্রাম্প। নিউইয়র্কের উন্নয়ন তহবিল বন্ধের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি তিনি বলেছেন, শহরের নিরাপত্তা অজুহাতে সেনা মোতায়েনের কথাও বিবেচনা করবেন।

ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “তাকে ওয়াশিংটনের প্রতি একটু শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। না হলে তার সফল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।” যদিও পরে নিজের বক্তব্য খানিকটা নরম করে বলেন, “আমি চাই নিউইয়র্ক শহর সফল হোক, মামদানি নয়।”

ফ্লোরিডার মিয়ামিতে এক বক্তৃতায় ট্রাম্প আরও একধাপ এগিয়ে বলেন, “একজন কমিউনিস্ট এখন নিউইয়র্কের মেয়র। দেখা যাক, সে শহর চালাতে পারে কি না। আমেরিকা তার সার্বভৌমত্ব হারাচ্ছে।”

বিশ্লেষকদের মতে, মামদানির এই ঐতিহাসিক বিজয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের এই আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া মার্কিন রাজনীতিতে নতুন এক আদর্শিক মুখোমুখির সূচনা করেছে,যেখানে উদার মূল্যবোধ, বহুত্ববাদ ও ইসলামভীতির রাজনীতি আবারও সরাসরি সংঘর্ষে জড়াতে চলেছে।