১৮ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার, ৩১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নকশালমুক্ত হবে ভারত: মাও আত্মসমর্পণ নিয়ে কৃতিত্ব দাবি প্রধানমন্ত্রীর

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার
  • / 80

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: গত কয়েকদিনে আত্মসমর্পণ করেছেন বহু মাওবাদী। এবার মাও আত্মসমর্পণ নিয়ে মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, “১১ বছর আগে দেশের প্রায় ১২৫টি জেলা মাওবাদী অধ্যুষিত ছিল। আজ সেই সংখ্যাটা কমে ১১টি জেলায় নেমে এসেছে। এর মধ্যে মাত্র ৩টি জেলায় তাদের শক্ত ঘাঁটি। বিগত ৭৫ ঘণ্টাতেই ৩০৩ জন নকশাল আত্মসমর্পণ করেছে, এরা কেউ সাধারণ নয়, কারোর মাথায় ১ কোটি, কারোর মাথায় ১৫ লক্ষ, ৫ লক্ষের পুরস্কার ছিল।” একইসঙ্গে মোদি বলেছেন, নকশালমুক্ত হবে ভারত, সেই দিন আর বেশি দূরে নয়।

এক সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানেই তিনি বলেন, বিগত ৭৫ ঘণ্টায় ৩০৩ জন নকশাল আত্মসমর্পণ করেছেন। দেশের মধ্যে মাত্র তিনটি রাজ্যে বামপন্থী চরমপন্থার কবলে রয়েছে। একইসঙ্গে দেশে মাওবাদীদের উৎপাত নিয়ে কংগ্রেসকে তোপ দাগেন প্রধানমন্ত্রী। মোদির বক্তব্য, “কংগ্রেস সরকারে থাকাকালীন শহুরে নকশালের প্রভাব এতটাই বেশি ছিল যে বাকি দেশ মাওবাদী ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে জানতেই পারত না। নিরাপরাধ মানুষেরা মাওবাদী সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েছেন। বিগত ৫০-৫৫ বছরে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে মাওবাদী হামলায়। এই নকশালরা স্কুস, হাসপাতাল তৈরি হতে দিত না…চিকিৎসকদের ক্লিনিকে ঢুকতে দিত না, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বোমা মারত। তারপরও বিরোধী দল যে তাদের দুর্দশার প্রতি খুব কম মনোযোগ দিয়েছে।”

উল্লেখ্য, কদিন আগেই ৬০ জন মাও সদস্যদের নিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন মাওবাদী নেতা মাল্লোজুলা বেণুগোপাল রাও ওরফে ভূপতি। সেই ঘটনার একদিন পরই ছত্তিসগড়ের সুকমা জেলায় আত্মসমর্পণ করেন আরও ২৭ জন মাওবাদী সদস্য। তাঁদের মধ্যে ১৬ জনকে জীবিত বা মৃত অবস্থায় ধরিয়ে দেওয়া জন্য অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেছিল সরকার। বুধবার ছত্তিসগড়ের সুকমা জেলায় প্রশাসনের কাছে আত্মসমর্পণ করেন মাওবাদীরা। ওই দিন পুলিশ জানায়, ২৭ জনের মাও নেতার মধ্যে ১০ জন মহিলা। সুকমার পুলিশ সুপার কিরণ চৌহানের বলেন, এতদিন ধরে মাওবাদী আদর্শের পথে চললেও, এখন তাঁরা এই আদর্শ ফাঁপা বলে মনে করছেন। এ ছাড়া নিরীহ আদিবাসীদের উপরে মাওবাদীদের নৃশংসতা এবং এই অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রভাব যে ভাবে বাড়ছে তাতে হতাশ। পাশাপাশি প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে ছত্তিসগড় সরকার যে উন্নয়নমূলক কাজ করছে তাতে মুগ্ধ তাঁরা। তাই অস্ত্র ছেড়ে সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে আগ্রহী হয়েছেন তাঁরা।

এদিকে মঙ্গলবার মহারাষ্ট্র পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন নিহত মাওবাদী নেতার ভাই ভূপতি। পুলিশের দাবি, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়ের বহু মাওবাদী হামলার আসল ‘চাঁই’ এই মাও নেতা। বাণিজ্যে স্নাতক ৬৯ বছরের এই নেতা গত ৪০ বছর ধরে মাওবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর মাথার দাম ছিল ৬ কোটি টাকা। সূত্রের খবর, সম্প্রতি মাওবাদী সংগঠনের মধ্যে ভূপতিকে সুর নরম করতে দেখা গিয়েছিল। তাঁর দাবি ছিল, ক্রমশ এদেশে আরও জনপ্রিয়তা হারিয়েছে মাওবাদী সংগঠনগুলি। পাশাপাশি লাগাতার নিরাপত্তা বাহিনীর অপারেশনেও বহু মাও নেতার মৃত্যু হয়েছে। এহেন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এবার আত্মসমর্পণ করেন ভূপতি।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নকশালমুক্ত হবে ভারত: মাও আত্মসমর্পণ নিয়ে কৃতিত্ব দাবি প্রধানমন্ত্রীর

আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: গত কয়েকদিনে আত্মসমর্পণ করেছেন বহু মাওবাদী। এবার মাও আত্মসমর্পণ নিয়ে মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, “১১ বছর আগে দেশের প্রায় ১২৫টি জেলা মাওবাদী অধ্যুষিত ছিল। আজ সেই সংখ্যাটা কমে ১১টি জেলায় নেমে এসেছে। এর মধ্যে মাত্র ৩টি জেলায় তাদের শক্ত ঘাঁটি। বিগত ৭৫ ঘণ্টাতেই ৩০৩ জন নকশাল আত্মসমর্পণ করেছে, এরা কেউ সাধারণ নয়, কারোর মাথায় ১ কোটি, কারোর মাথায় ১৫ লক্ষ, ৫ লক্ষের পুরস্কার ছিল।” একইসঙ্গে মোদি বলেছেন, নকশালমুক্ত হবে ভারত, সেই দিন আর বেশি দূরে নয়।

এক সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানেই তিনি বলেন, বিগত ৭৫ ঘণ্টায় ৩০৩ জন নকশাল আত্মসমর্পণ করেছেন। দেশের মধ্যে মাত্র তিনটি রাজ্যে বামপন্থী চরমপন্থার কবলে রয়েছে। একইসঙ্গে দেশে মাওবাদীদের উৎপাত নিয়ে কংগ্রেসকে তোপ দাগেন প্রধানমন্ত্রী। মোদির বক্তব্য, “কংগ্রেস সরকারে থাকাকালীন শহুরে নকশালের প্রভাব এতটাই বেশি ছিল যে বাকি দেশ মাওবাদী ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে জানতেই পারত না। নিরাপরাধ মানুষেরা মাওবাদী সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েছেন। বিগত ৫০-৫৫ বছরে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে মাওবাদী হামলায়। এই নকশালরা স্কুস, হাসপাতাল তৈরি হতে দিত না…চিকিৎসকদের ক্লিনিকে ঢুকতে দিত না, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বোমা মারত। তারপরও বিরোধী দল যে তাদের দুর্দশার প্রতি খুব কম মনোযোগ দিয়েছে।”

উল্লেখ্য, কদিন আগেই ৬০ জন মাও সদস্যদের নিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন মাওবাদী নেতা মাল্লোজুলা বেণুগোপাল রাও ওরফে ভূপতি। সেই ঘটনার একদিন পরই ছত্তিসগড়ের সুকমা জেলায় আত্মসমর্পণ করেন আরও ২৭ জন মাওবাদী সদস্য। তাঁদের মধ্যে ১৬ জনকে জীবিত বা মৃত অবস্থায় ধরিয়ে দেওয়া জন্য অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেছিল সরকার। বুধবার ছত্তিসগড়ের সুকমা জেলায় প্রশাসনের কাছে আত্মসমর্পণ করেন মাওবাদীরা। ওই দিন পুলিশ জানায়, ২৭ জনের মাও নেতার মধ্যে ১০ জন মহিলা। সুকমার পুলিশ সুপার কিরণ চৌহানের বলেন, এতদিন ধরে মাওবাদী আদর্শের পথে চললেও, এখন তাঁরা এই আদর্শ ফাঁপা বলে মনে করছেন। এ ছাড়া নিরীহ আদিবাসীদের উপরে মাওবাদীদের নৃশংসতা এবং এই অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রভাব যে ভাবে বাড়ছে তাতে হতাশ। পাশাপাশি প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে ছত্তিসগড় সরকার যে উন্নয়নমূলক কাজ করছে তাতে মুগ্ধ তাঁরা। তাই অস্ত্র ছেড়ে সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে আগ্রহী হয়েছেন তাঁরা।

এদিকে মঙ্গলবার মহারাষ্ট্র পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন নিহত মাওবাদী নেতার ভাই ভূপতি। পুলিশের দাবি, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়ের বহু মাওবাদী হামলার আসল ‘চাঁই’ এই মাও নেতা। বাণিজ্যে স্নাতক ৬৯ বছরের এই নেতা গত ৪০ বছর ধরে মাওবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর মাথার দাম ছিল ৬ কোটি টাকা। সূত্রের খবর, সম্প্রতি মাওবাদী সংগঠনের মধ্যে ভূপতিকে সুর নরম করতে দেখা গিয়েছিল। তাঁর দাবি ছিল, ক্রমশ এদেশে আরও জনপ্রিয়তা হারিয়েছে মাওবাদী সংগঠনগুলি। পাশাপাশি লাগাতার নিরাপত্তা বাহিনীর অপারেশনেও বহু মাও নেতার মৃত্যু হয়েছে। এহেন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এবার আত্মসমর্পণ করেন ভূপতি।