উৎসব সকলের মনে আনন্দের বার্তা বয়ে নিয়ে আসে। তার মধ্যে অন্যতম হল দীপাবলি বা কালীপুজো উৎসব। আর এই উৎসবে সবচেয়ে বেশি খুশি হয় শিশুরা। কারণ একমাত্র এ সময়েই বাবা-মায়ের থেকে বাজি পোড়ানোর ছাড়পত্র মেলে। আবার এই সময়েই প্রতি বছর সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তারা। এর প্রধান কারণ অসাবধানতা বা অসচেতনতা। কাজেই বাবা-মায়ের এ সময়ে বিশেষ সতর্ক থাকা উচিত। কীভাবে শিশুদের এ সময়ে নিরাপদে রাখবেন সে বিষয়ে কিছু সহজ টিপস দিলেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নন্দিতা সাহা।

ভালো মানের বাজি কিনবেন। দাম বেশি হলেও এতে কিছুটা হলেও নিশ্চিন্ত থাকা যায়। এখন ইকো ফ্রেন্ডলি বাজিও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। তাই কেনার চেষ্টা করুন। এতে কম শধ হবে। বিপদও কম হবে।
বাচ্চাদের বাজি পোড়ানোর সময় বড়রা অবশ্যই সঙ্গে থাকুন। কোনও খোলা জায়গায় যেমন বাড়ির উঠোনে বা ছাদে বাজি পোড়াতে দিন। আর কাছে কোনও দাহ্য পদার্থ না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন। আগুনের ফুলকি পড়ে নয়তো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
শিশুরা দেশলাই দিয়ে যেন বাজিতে আগুন না ধরায় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
ঘরের এমন জায়গায় প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালাবেন না, যাতে পর্দায় আগুন লাগার আশঙ্কা থাকে। সবচেয়ে ভালো হয় কোনও প্রদীপ বা মোমবাতির বদলে ভালো মানের বৈদ্যুতিক আলো দিয়ে ঘর সাজালে।

শিশুকে সুতির পোশাক পরান। পায়ে যেন ঢাকা জুতো থাকে। এতে বাজির ফুলকি উড়ে এসে সমস্যা তৈরি করতে পারবে না। সিন্থেটিক বা সিল্কের পোশাক একদম পরানো উচিত নয়। কারণ এতে সহজে আগুন লাগার চান্স থাকে। শুধু বাচ্চাদের নয়– সঙ্গে যারা বড়রা থাকবেন তাঁরাও সুতির পোশাক পরবেন। চুল বড় থাকলে অবশ্যই বেঁধে দেবেন। নয়তো চোখে– মুখে চুল পড়লে শিশু হাত দিয়ে তা সরাতে গেলে বাজির রাসায়নিক লেগে সমস্যা হতে পারে।
যেখানে বাজি পোড়ানো হবে তার কাছে এক বালতি জল ও কিছু বালি রেখে দিন। বিপদের কথা তো বলা যায় না। আচমকা বিপদ এলে কাজে লাগবে।
দীপাবলির আগেই ফার্স্ট এড বক্সে সব কিছু ঠিকঠাক আছে, কিনা দেখে নিন। কোনও ওষুধের মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়ে থাকলে নতুন এনে রাখুন। আর বাক্সটা রাখুন হাতের কাছে। আগুন থেকে বা অন্য কোনও ছোটোখাটো সমস্যা হলে কাজে লাগবে। শিশুর চোখে চশমা থাকলে দেখে নিন– তা টাইট আছে কিনা। অল্পস্বল্প পুড়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে জায়গাটা ধুয়ে দিন। আর বেশি পুড়লে অযথা সময় নষ্ট না করে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

এ বছর দু’ ঘণ্টার জন্য বাজি পোড়ানোর সুযোগ দিয়েছে আদালত। সেই সময়ে যাদের শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানির সমস্যা আছে তাঁদের সাবধানে রাখুন। বাজির ধোঁয়ার থেকে একেবারে নিরাপদ দূরত্বে রাখুন।
কোনও শিশু যদি করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠে, তাহলেও বাজি পোড়াতে দেবেন না। এমনকী বাজি পোড়ানোর জায়গায় যেতেও দেবেন না। কারণ ধোঁয়া থেকে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
হাউজ ফিজিশিয়ান ছাড়াও কিছু হাসপাতাল, নার্সিংহোম ও অ্যাম্বুলেন্সের নম্বর হাতের কাছে রেখে দিন।




























