২৬ জুলাই ২০২৫, শনিবার, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চিনের তৈরি ইনফ্রারেড কন্ট্যাক্ট লেন্স: অন্ধকারেও এখন দেখা সম্ভব!

চামেলি দাস
  • আপডেট : ২ জুন ২০২৫, সোমবার
  • / 312

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: চিনের পূর্বাঞ্চলের হেফেই শহরের ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির গবেষকেরা এমন এক কন্ট্যাক্ট লেন্স তৈরি করেছেন, যা ইনফ্রারেড আলোকে দৃশ্যমান আলোয় রূপান্তর করে ; ফলে মানুষ অন্ধকারেও দেখতে পারবে।এই বিশেষ ‘ইনফ্রারেড কন্ট্যাক্ট লেন্স’-এ আছে সোনার কণা, সোডিয়াম গ্যাডোলিনিয়াম ফ্লোরাইড, ইটার্বিয়াম আর এর্বিয়াম আয়ন ; সব মিলিয়ে মাত্র ৪৫ ন্যানোমিটারের অতি ক্ষুদ্র কণা। এই কণাগুলি ইনফ্রারেড তরঙ্গকে শোষণ করে শক্তি বাড়িয়ে দৃশ্যমান আলোতে রূপান্তর করে, যাতে আমরা সেটা দেখতে পারি।

প্রথমে গবেষকরা ইঁদুরের চোখে এই কণাগুলি ইনজেকশন দিয়ে পরীক্ষা করেন। দেখা যায়, ইঁদুররা অন্ধকারেও চলাফেরা করছে, অর্থাৎ তারা ইনফ্রারেড আলো ‘দেখতে’ পাচ্ছে। তবে মানুষের ক্ষেত্রে ইনজেকশনের ঝুঁকি না নিয়ে গবেষক দল একটি নন-ইনভেসিভ (অর্থাৎ ইনজেকশন ছাড়া) কন্ট্যাক্ট লেন্স তৈরি করে।

আরও পড়ুন: সন্তান জন্ম দিলেই মিলবে টাকা, জন্মহার বাড়াতে অনুদান দিচ্ছে শি জিনপিং-এর সরকার

এই লেন্স পরে মানুষ অন্ধকার ঘরে বসেও আলোর সংকেত, ছবি, অক্ষর এমনকি ফ্ল্যাশিং ইনফ্রারেড সিগন্যাল বুঝতে পেরেছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় ; এই লেন্স চোখ বন্ধ থাকলেও কাজ করে! কারণ ইনফ্রারেড তরঙ্গ সহজেই চোখের পাতার ভেতর দিয়ে প্রবেশ করতে পারে।

আরও পড়ুন: চিনের সতর্কবার্তা: ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা বিশ্বে বিপর্যয় নামিয়ে আনতে পারে

তবে  এই লেন্স এখনো নাইট ভিশন গগলসের মতো স্পষ্ট ছবি দিতে পারে না। কারণ লেন্সে থাকা কণা আলো ছড়িয়ে দেয়, যার ফলে ছবি কিছুটা ঝাপসা হয়।

আরও পড়ুন: চিনের নাগরিকদের ‘যত দ্রুত সম্ভব’ ইসরাইল ছাড়ার পরামর্শ

গবেষকদের মতে, এই লেন্স ভবিষ্যতে কাজে লাগতে পারে; যেমন, অস্ত্রোপচারের সময়, নিরাপত্তা বা গোপন বার্তা আদান-প্রদানে, নকল শনাক্তকরণে (যেখানে ইনফ্রারেড কালি ব্যবহার হয়), ধোঁয়ায় ঢাকা, ঘন কুয়াশায় উদ্ধার কাজে

এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে বাস্তব জীবনে কতটা কার্যকর হবে, সেটা নিয়ে কিছু সন্দেহ থাকছেই। তবুও, বিজ্ঞান যেমন এগোয়, আজকের সীমাবদ্ধতা কালকের সম্ভাবনা হয়ে দাঁড়ায়। ভবিষ্যতে হয়তো এমন সময় আসবে, যখন আর চোখে অন্ধকার থাকবে না ; কেবল একজোড়া লেন্সেই খুলে যাবে রাতের দরজা।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

চিনের তৈরি ইনফ্রারেড কন্ট্যাক্ট লেন্স: অন্ধকারেও এখন দেখা সম্ভব!

আপডেট : ২ জুন ২০২৫, সোমবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: চিনের পূর্বাঞ্চলের হেফেই শহরের ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির গবেষকেরা এমন এক কন্ট্যাক্ট লেন্স তৈরি করেছেন, যা ইনফ্রারেড আলোকে দৃশ্যমান আলোয় রূপান্তর করে ; ফলে মানুষ অন্ধকারেও দেখতে পারবে।এই বিশেষ ‘ইনফ্রারেড কন্ট্যাক্ট লেন্স’-এ আছে সোনার কণা, সোডিয়াম গ্যাডোলিনিয়াম ফ্লোরাইড, ইটার্বিয়াম আর এর্বিয়াম আয়ন ; সব মিলিয়ে মাত্র ৪৫ ন্যানোমিটারের অতি ক্ষুদ্র কণা। এই কণাগুলি ইনফ্রারেড তরঙ্গকে শোষণ করে শক্তি বাড়িয়ে দৃশ্যমান আলোতে রূপান্তর করে, যাতে আমরা সেটা দেখতে পারি।

প্রথমে গবেষকরা ইঁদুরের চোখে এই কণাগুলি ইনজেকশন দিয়ে পরীক্ষা করেন। দেখা যায়, ইঁদুররা অন্ধকারেও চলাফেরা করছে, অর্থাৎ তারা ইনফ্রারেড আলো ‘দেখতে’ পাচ্ছে। তবে মানুষের ক্ষেত্রে ইনজেকশনের ঝুঁকি না নিয়ে গবেষক দল একটি নন-ইনভেসিভ (অর্থাৎ ইনজেকশন ছাড়া) কন্ট্যাক্ট লেন্স তৈরি করে।

আরও পড়ুন: সন্তান জন্ম দিলেই মিলবে টাকা, জন্মহার বাড়াতে অনুদান দিচ্ছে শি জিনপিং-এর সরকার

এই লেন্স পরে মানুষ অন্ধকার ঘরে বসেও আলোর সংকেত, ছবি, অক্ষর এমনকি ফ্ল্যাশিং ইনফ্রারেড সিগন্যাল বুঝতে পেরেছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় ; এই লেন্স চোখ বন্ধ থাকলেও কাজ করে! কারণ ইনফ্রারেড তরঙ্গ সহজেই চোখের পাতার ভেতর দিয়ে প্রবেশ করতে পারে।

আরও পড়ুন: চিনের সতর্কবার্তা: ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা বিশ্বে বিপর্যয় নামিয়ে আনতে পারে

তবে  এই লেন্স এখনো নাইট ভিশন গগলসের মতো স্পষ্ট ছবি দিতে পারে না। কারণ লেন্সে থাকা কণা আলো ছড়িয়ে দেয়, যার ফলে ছবি কিছুটা ঝাপসা হয়।

আরও পড়ুন: চিনের নাগরিকদের ‘যত দ্রুত সম্ভব’ ইসরাইল ছাড়ার পরামর্শ

গবেষকদের মতে, এই লেন্স ভবিষ্যতে কাজে লাগতে পারে; যেমন, অস্ত্রোপচারের সময়, নিরাপত্তা বা গোপন বার্তা আদান-প্রদানে, নকল শনাক্তকরণে (যেখানে ইনফ্রারেড কালি ব্যবহার হয়), ধোঁয়ায় ঢাকা, ঘন কুয়াশায় উদ্ধার কাজে

এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে বাস্তব জীবনে কতটা কার্যকর হবে, সেটা নিয়ে কিছু সন্দেহ থাকছেই। তবুও, বিজ্ঞান যেমন এগোয়, আজকের সীমাবদ্ধতা কালকের সম্ভাবনা হয়ে দাঁড়ায়। ভবিষ্যতে হয়তো এমন সময় আসবে, যখন আর চোখে অন্ধকার থাকবে না ; কেবল একজোড়া লেন্সেই খুলে যাবে রাতের দরজা।