গ্রামের ভোটে প্রার্থী ও এজেন্টদের নিরাপত্তা দিতে বললো কলকাতা হাইকোর্ট

- আপডেট : ৫ জুলাই ২০২৩, বুধবার
- / 8
পারিজাত মোল্লা: কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাস প্রার্থী ও এজেন্টদের নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ জারি করল। এর পাশাপাশি গণনাকেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্ব দিতে হবে আধাসেনাকেও। এদিন এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাতে আর মাত্র দুটো দিন। আগামী শনিবারই রাজ্যে এক দফায় হতে চলেছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ভোটের আগে যে ভাবে রাজ্যে হানাহানি চলছে, প্রাণ যাচ্ছে, তাতেই উদ্বিগ্ন কলকাতা হাইকোর্ট। দশের বেশি মামলা চলছে হাইকোর্টে। এদিন মামলাকারীর তরফে গত পঞ্চায়েত নির্বাচন ভোট নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ জানানো হয়।
মামলাকারী জানান, ঠাকুরপুকুরের মহেশতলা ব্লকে আগে ভোটের সময় গণনা কেন্দ্রে বিরোধী এজেন্ট ও প্রার্থীদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাঁদের উপর হামলাও হয়’। এই মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি অমৃতা সিনহা গণনাকেন্দ্রে যেমন আধাসেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেন তেমনই এজেন্ট ও প্রার্থীদেরও নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার নির্দেশ দেন। এদিকে এর আগে নির্বাচন কমিশনে একই দাবিতে হাজির হয়েছিলেন মামলাকারী। যদিও নির্বাচন কমিশন কোনও পদক্ষেপ না করায় ২১ জুন তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই সময়ই রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে গোটা বিষয়টি দেখার কথা বলেছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। তারপরেও নির্বাচন কমিশনের তরফে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সে বিষয়েই এদিন আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মামলাকারী। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রার্থী ও কাউন্টিং এজেন্টদেরও দিতে হবে নিরাপত্তা।
নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অমৃতা সিনহার। হাইকোর্ট সূত্রে প্রকাশ ‘ ঠাকুরপুকুর মহেশতলা ব্লকের আগে গণনা হত সাধারণত বরিষা হাইস্কুলে। যেহেতু তা কলকাতা কর্পোরেশনের আওতায় তাই ২০১৮ সালে বদল হয়ে যায় গণনাকেন্দ্র । পরিবর্তে ব্রতচারী বৃদ্ধাশ্রমে গণনাকেন্দ্র করা হয়। ২০১৮-তে কোনও বিরোধীকে গণনার সময় থাকতে দেওয়া হয়নি বলে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন মামলাকারী আইনজীবী।পরবর্তী কালে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়, যাতে চলতি নির্বাচনে গণনাকেন্দ্র বদল করে চাট্টা সুবিধ আলি ইন্সটিটিউটে স্থানান্তর করা হয়।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে মামলাকারী কোনও জবাব না পাওয়ার জেরেই কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা। গত ২১ জুন হাইকোর্ট সরাসরি রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে সদর্থক সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দেয়। তবে আদালতের নির্দেশের পরও কমিশন মামলাকারীদের বক্তব্য শুনলেও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে ফের অভিযোগ ওঠে। আবারও আদালতের দ্বারস্থ হয় মামলাকারীরা। রাজ্য নির্বাচন কমিশন রিপোর্ট দিয়ে জানায় -‘রসপুঞ্জ পি কে হাইস্কুলে হবে মহেশতলা ব্লকের ভোট গণনা’।
বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, -‘রসপুঞ্জ গণনা কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে কমিশনকে।
পাশাপাশি সমস্ত প্রার্থী ও গণনার কাজে যুক্ত রাজনৈতিকদলের এজেন্টদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে কমিশন’।প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্র সরকার প্রায় ৬৫ হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনীর অনুমোদন দিয়েছে রাজ্যে।
পাশাপাশি ৭০ হাজার সশস্ত্র রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তাও থাকছে চলতি নির্বাচনে। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার ভোট কর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ৫০ শতাংশ অনুপাতে রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছে গত মঙ্গলবার।