১৩ অগাস্ট ২০২৫, বুধবার, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অতিরিক্ত বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতি সবজি ও মাছ চাষে মহাবিপদে স্বরূপনগরের চাষীরা, এগিয়ে এলেন বিডিও

মারুফা খাতুন
  • আপডেট : ১৩ অগাস্ট ২০২৫, বুধবার
  • / 15

ইনামুল হক, বসিরহাট : উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মধ্যে স্বরুপনগর ব্লককে বলা হয় কৃষি ভান্ডার। এই ব্লকের হাজার হাজার একর সবজি চাষের জমি, অন্যদিকে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষের ঘেরি ও পুকুর। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে সবজি ফসলের গোড়ায় জমে রয়েছে জল। তা থেকে গাছের গোড়ায় পচন ধরে এখন শুকনো হওয়া শুরু হয়েছে।

বাজারে সবজি অমিল হতে দাম আকাশছোঁয়া। ব্লকের চারঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁতুয়া, মোল্লাডাঙ্গা, চারঘাট, সলুয়া, রসুই, বারঘরিয়া, ঘোড়াগাছা সহ একাধিক গ্রামের চাষের জমি জলের তলায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাট, ধান, উচ্ছে,পটল, বরবটি, ঝিঙে, পুঁইশাক, ওল, সিকসিন্দে,কুদরী, কাকরোল, কাঁচকলা, পেঁপে, কাঁচা লঙ্কা, ঢেঁড়স ইত্যাদি সাথে ঘেরি ও পুকুরের মাছচাষ।

টানা বর্ষণের ফলে যমুনা, পদ্মা, ইছামতি নদীর দুকুল ছাপিয়ে জল ঢুকে পড়েছে গ্রামের মধ্যে। স্তব্ধ হয়েছে জনজীবনও। পাশাপাশি বল্লিরবিল সহ স্বরুপনগরের একাধিক গ্রামে রয়েছে ছোটো-বড় মিলিয়ে ৩৮টি ঘেরি।রয়েছে শয়ে শয়ে পুকুর। অত্যাধিক পরিমাণে জল ঢুকে পড়ার কারণে পুকুর ও মাছের ঘেরি থেকে মাছ বেরিয়ে বিভিন্ন নদী-নালায় ঢুকে পড়েছে। সব মিলিয়ে চাষিরা মহা বিপদে।

অতিরিক্ত বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতি সবজি ও মাছ চাষে মহাবিপদে স্বরূপনগরের চাষীরা, এগিয়ে এলেন বিডিও

বেশিরভাগ চাষি চড়া সুদে বাজার থেকে ঋণ নিয়ে সবজি থেকে মাছ চাষ করেছিল লাভের আশায়। সেই আশায় একেবারেই জল ঢেলে দিল শ্রাবণ মাসের অতিবৃষ্টি। কৃষক আব্দুল খালেক, শাহজাহান মন্ডল, আনোয়ারা বিবি, ইলিয়াস মন্ডল মন্টু আকুঞ্জি,কাইয়ুম মণ্ডলরা বলছেন, জলের তলায় ফসলের জমি, বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। সরকারি সাহায্য সেই ভাবে পাওয়া যায় না। তাই কীভাবে চাষিরা বেঁচে থাকবে তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

একজন মৎস্য চাষি বলেন’ আমাদের জলকরে প্রচুর মাছ ছিল। সব মাছ বেরিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। কিভাবে তিনি আবার নতুন করে চাষ করবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না। আরো একজন সবজি চাষী বলেন, আমি সাত বিঘা জমিতে সবজি ফসল করেছিলাম। ঠিক ঘরে তোলার সময় সমস্ত ফসল জলের কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। আমি চড়া সুদে বাজার থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলাম। এখন সেই টাকা মহাজনকে কিভাবে শোধ করবো। তাই সরকার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিক তা না হলে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হবে বলে তিনি জানান।

পুরো বিষয়টি স্বরূপনগর সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বিষ্ণুপদ রায়কে জানানো হলে তিনি পুরোটাই স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ব্যাপক পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবজি ও মাছ চাষে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের উদ্দেশ্যে তিনি জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে ব্লকের প্রতিটি অঞ্চলে ক্যাম্প করা হবে। চাষী ভাইদের সমস্যার সুরাহা ওই ক্যাম্প থেকে করা হবে। তিনি আরো বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সর্বদাই কৃষকের পাশে ছিল এবং থাকবে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

অতিরিক্ত বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতি সবজি ও মাছ চাষে মহাবিপদে স্বরূপনগরের চাষীরা, এগিয়ে এলেন বিডিও

আপডেট : ১৩ অগাস্ট ২০২৫, বুধবার

ইনামুল হক, বসিরহাট : উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মধ্যে স্বরুপনগর ব্লককে বলা হয় কৃষি ভান্ডার। এই ব্লকের হাজার হাজার একর সবজি চাষের জমি, অন্যদিকে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষের ঘেরি ও পুকুর। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে সবজি ফসলের গোড়ায় জমে রয়েছে জল। তা থেকে গাছের গোড়ায় পচন ধরে এখন শুকনো হওয়া শুরু হয়েছে।

বাজারে সবজি অমিল হতে দাম আকাশছোঁয়া। ব্লকের চারঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁতুয়া, মোল্লাডাঙ্গা, চারঘাট, সলুয়া, রসুই, বারঘরিয়া, ঘোড়াগাছা সহ একাধিক গ্রামের চাষের জমি জলের তলায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাট, ধান, উচ্ছে,পটল, বরবটি, ঝিঙে, পুঁইশাক, ওল, সিকসিন্দে,কুদরী, কাকরোল, কাঁচকলা, পেঁপে, কাঁচা লঙ্কা, ঢেঁড়স ইত্যাদি সাথে ঘেরি ও পুকুরের মাছচাষ।

টানা বর্ষণের ফলে যমুনা, পদ্মা, ইছামতি নদীর দুকুল ছাপিয়ে জল ঢুকে পড়েছে গ্রামের মধ্যে। স্তব্ধ হয়েছে জনজীবনও। পাশাপাশি বল্লিরবিল সহ স্বরুপনগরের একাধিক গ্রামে রয়েছে ছোটো-বড় মিলিয়ে ৩৮টি ঘেরি।রয়েছে শয়ে শয়ে পুকুর। অত্যাধিক পরিমাণে জল ঢুকে পড়ার কারণে পুকুর ও মাছের ঘেরি থেকে মাছ বেরিয়ে বিভিন্ন নদী-নালায় ঢুকে পড়েছে। সব মিলিয়ে চাষিরা মহা বিপদে।

অতিরিক্ত বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতি সবজি ও মাছ চাষে মহাবিপদে স্বরূপনগরের চাষীরা, এগিয়ে এলেন বিডিও

বেশিরভাগ চাষি চড়া সুদে বাজার থেকে ঋণ নিয়ে সবজি থেকে মাছ চাষ করেছিল লাভের আশায়। সেই আশায় একেবারেই জল ঢেলে দিল শ্রাবণ মাসের অতিবৃষ্টি। কৃষক আব্দুল খালেক, শাহজাহান মন্ডল, আনোয়ারা বিবি, ইলিয়াস মন্ডল মন্টু আকুঞ্জি,কাইয়ুম মণ্ডলরা বলছেন, জলের তলায় ফসলের জমি, বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। সরকারি সাহায্য সেই ভাবে পাওয়া যায় না। তাই কীভাবে চাষিরা বেঁচে থাকবে তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

একজন মৎস্য চাষি বলেন’ আমাদের জলকরে প্রচুর মাছ ছিল। সব মাছ বেরিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। কিভাবে তিনি আবার নতুন করে চাষ করবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না। আরো একজন সবজি চাষী বলেন, আমি সাত বিঘা জমিতে সবজি ফসল করেছিলাম। ঠিক ঘরে তোলার সময় সমস্ত ফসল জলের কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। আমি চড়া সুদে বাজার থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলাম। এখন সেই টাকা মহাজনকে কিভাবে শোধ করবো। তাই সরকার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিক তা না হলে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হবে বলে তিনি জানান।

পুরো বিষয়টি স্বরূপনগর সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বিষ্ণুপদ রায়কে জানানো হলে তিনি পুরোটাই স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ব্যাপক পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবজি ও মাছ চাষে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের উদ্দেশ্যে তিনি জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে ব্লকের প্রতিটি অঞ্চলে ক্যাম্প করা হবে। চাষী ভাইদের সমস্যার সুরাহা ওই ক্যাম্প থেকে করা হবে। তিনি আরো বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সর্বদাই কৃষকের পাশে ছিল এবং থাকবে।