পঞ্চায়েতে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসবে তৃণমূল: অভিষেক

- আপডেট : ৭ জুলাই ২০২৩, শুক্রবার
- / 14
পুবের কলম প্রতিবেদক: শনিবারেই রাজ্যজুড়ে অনুষ্ঠিত হবে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোট। গ্রামবাংলার ক্ষমতা কার হাতে থাকবে, ঠিক করবেন আমজনতা। সব রাজনৈতিক দলই নিজেদের মতো করে প্রচার করছে। কোনও রাজনৈতিক দল অভিযোগ করছে শাসকদলের নামে দুর্নীতির, কোনও দল আবার বিকল্পধারার রাজনীতি প্রবর্তনের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। এরই মধ্যে জয়ের ব্যাপারে ভীষণভাবে আশাবাদী রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। বিগত বছরগুলিতে করে আসা রাজ্যের উন্নয়নের উপর ভর করেই ভোট বৈতরণি পার হবে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার কলকাতা প্রেস ক্লাব আয়োজিত ‘মিট-দ্য-প্রেস’ অনুষ্ঠানে এমনই প্রত্যয়ের কথা ব্যক্ত করলেন দলের সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন প্রেস ক্লাবের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার জন্য উপস্থিত ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই পঞ্চায়েত ভোট থেকে শুরু করে কেন্দ্রের বঞ্চনা, রাজ্যপাল প্রসঙ্গ থেকে ভোট সন্ত্রাস নানান, বিষয়ে দলের অবস্থানের কথা জানান তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়ে অভিযোগ করেন, একুশের ভোটে বাংলায় হেরে বিজেপি এখন প্রতিশোধের রাজনীতি শুরু করেছে। জিএসটি হিসাবে বাংলা থেকে টাকা তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অথচ সেই টাকার অংশ বাংলাকে দেওয়া হচ্ছে না। টাকা দেওয়া হচ্ছে গুজরাত, ইউপিকে। ১০০ দিনের প্রকল্পের টাকা, আবাস যোজনার টাকা, রাস্তা তৈরির টাকা আটকে রাখা হচ্ছে। তাই ভোটে মানুষ জবাব দেবেন বলে প্রত্যয়ী অভিষেক। তিনি আরও বলেন, রাজ্যে প্রায় ১৮৬টি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল এসেছে, কোথাও ত্রুটি পায়নি। তাতেও বঞ্চনা কেন?প্রশ্ন অভিষেকের।
অভিষেক বলেন, যারা বাংলার টাকা আটকে রেখেছে, তাদের উচিত জবাব দিতে হবে। অনেক সৌজন্যের রাজনীতি হয়েছে, এবার দিল্লি থেকে ছিনিয়ে আনব। আগামী দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে দিল্লিতে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। ১০০ দিনের বকেয়া টাকা আদায় করবই। অভিষেক অভিযোগ করেন, কেন্দ্র সরকার বাংলার ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। ভোটে হেরে গিয়ে প্রতিহিংসার জন্য রাজনৈতিকভাবে না পেরে বাংলার মানুষের হকের টাকা আটকে রাখছে কেন্দ্র।
তিনি আরও বলেন, আমরা মানুষের সঙ্গে থাকি। কে কোন প্রকল্প থেকে বঞ্চিত আমরা খোঁজ নিই, কারও সমস্যা হলে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে গিয়ে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করে তৃণমূল। নবজোয়ার যাত্রায় আমরা মানুষের উৎসাহ, উদ্দীপনা দেখেছি, ভোট প্রচারে গিয়েও মানুষের সমর্থন ও উপস্থিতি বলে দিচ্ছে মানুষ উন্নয়নের পক্ষে ভোট দেবেন। মানুষের দাবিকে প্রাধান্য দিয়ে প্রার্থী বাছাই করেছে তৃণমূল। আর বিজেপির আছে ইডি-সিবিআই, কথায় কথায় কোর্টে যাচ্ছে, তাঁরা ১০০ দিনের টাকা নিয়ে একটা জনস্বার্থ মামলা করুক!
অভিষেক আরও বলেন, বাংলার ২ কোটি ৬৪ লক্ষ মানুষের রুটিরুজি নির্ভর করে ১০০ দিনের কাজের ওপর। তাঁদের টাকা কেন আটকে রেখেছে বিজেপি? বাজেটে বাংলার জন্য ১ টাকাও দেয়নি।
অন্য সব রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের জন্য টাকা দিচ্ছেন। কিন্তু বাংলার জন্য বরাদ্দ শূন্য! আমাফান, ফনি, যশ ও আবাসের টাকা আটকে রাখছে কেন্দ্র। তারপরও নিজস্ব প্রকল্প চালু করে মানুষের কাজ করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
দুর্নীতি নিয়ে অভিষেক বলেন, কেউ দু-একজন দোষী হলে শাস্তি হোক, তাই বলে হাজার হাজার মানুষের টাকা কেন আটকে রাখা রয়েছে? বিজেপি বলছে বাংলায় ভুয়ো জবকার্ড হোল্ডার রয়েছে। কিন্তু দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি ভুয়ো জবকার্ড হোল্ডার পাওয়া গিয়েছে উত্তরপ্রদেশে। তারপর মধ্যপ্রদেশ, তারপর মহারাষ্ট্র, রাজস্থান ও গুজরাত।
এই রাজ্যগুলোর দায়িত্বেকে ছিল, সব ডবল ইঞ্জিন সরকার। ওরা বলছে মাসে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে মাসে ২ হাজার টাকা দেবে, তাহলে ডবল ইঞ্জিন সরকার যেখানে আছে, সেখানে মাসে ১ হাজার টাকা করে দেওয়া হোক, আমি পদত্যাগ করব। কেন্দ্র নাকি টাকা দিচ্ছে, আমরা মিথ্যা বলছি। তাহলে শুভেন্দু-সুকান্ত মজুমদারদের চ্যালেঞ্জ করছি প্রেস ক্লাবে আসুন, তথ্য পরিসংখ্যান নিয়ে আমি বসতে চাই। পারবেন ওঁরা?
রাজ্যপালের অতি-সক্রিয়তা নিয়ে তিনি বলেন, উনি নাকি সংবিধান রক্ষা করছেন, আগুন নেভাতে পারেন। তাহলে ওনাকে যাতে অশান্ত মণিপুরে শান্তির জন্য পাঠানো হয়, কেন্দ্রকে সেই অনুরোধ করব। অন্যদিকে, বিরোধীদের বেশি মনোনয়ন পেশ করার পরিসংখ্যান তুলে ধরে বাধাপ্রদানের দাবি খারিজ করেন অভিষেক। আর হিংসা যাতে না হয়, তার তার জন্য সবাইকে অনুরোধও করেন তৃণমূল সাংসদ।