বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউয়ের মুক্তিতে খুশির হাওয়া রিষড়ার সাউ পরিবারে
- আপডেট : ১৪ মে ২০২৫, বুধবার
- / 194
নসিবুদ্দিন সরকার, হুগলি: পাঞ্জাবের পঠানকোটে কর্মরত অবস্থায় ভুল করে পাকিস্তানে ঢুকে পাক রেঞ্জার্সের হাতে আটক হয়েছিল বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম সাউ। দীর্ঘ টালবাহানা শেষে বুধবার তাঁকে মুক্তি দিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানে আটক স্বামীর মুক্তির জন্য হুগলি থেকে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ছুটে গিয়েছেন হিমাচল প্রদেশের কাংড়ায় বিএসএফের দফতরে। জওয়ান পূর্ণমের মুক্তিতে জওয়ানের রিষড়ার বাড়িতে খুশির হাওয়া। ভারতের ফেরার পর পূর্ণমের সঙ্গে তার স্ত্রী রজনী সাউয়ের ভিডিয়ো কলে কথা হয়। পূর্নম ভালো আছেন বলে তাকে জানান। বেশ কয়েকদিন ধরে গভীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা এবং নিদ্রাহীনভাবে দিন কাটানোর পর অবশেষে স্বামীর মুক্তির খবরে স্ত্রী রজনী সাউ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে দেশের বীর সেনানিদের করজোড়ে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রিষড়া পুরসভার চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সংবাদমাধ্যম ও দেশবাসীকে।
পূর্ণম কুমার সাউয়ের মুক্তিতে আনন্দ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নিয়মিত পূর্ণম কুমার সাউয়ের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী তার এক্স-হ্যান্ডেলে লিখেছেন,‘আমাদের বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউকে মুক্তি দেওয়ার খবর পেয়ে আমি আনন্দিত। আমি তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলাম। তার স্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। আজও আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। আমার ভাইয়ের মতো জওয়ান, তার স্ত্রী রজনী সাউসহ তার পুরো পরিবারের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।’
উল্লেখ্য, গত ২৩ এপ্রিল পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সীমান্ত থেকে পূর্ণম কুমার সাউকে আটক করে পাকিস্তানি রেঞ্জার্সরা। দু’দেশের মধ্যে তার মুক্তি নিয়ে একাধিকবার ফ্ল্যাগ মিটিং হলেও তার মুক্তি মেলেনি। দু’দেশের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর আরও চাপে পড়ে গিয়েছিলেন পূর্ণমের পরিবার। কিন্তু রাজস্থানের জয়সলীম সীমান্তে এক পাক রেঞ্জার্স বিএসএফের হাতে আটক হয়। তারপর থেকেই পূর্ণমের মুক্তির বিষয়ে আশার আলো দেখতে পায় পরিবারের সদস্যরা। গত সোমবার ভারত-পাকিস্তানের ডিজিএমও পর্যায়ে বৈঠক হয়। সেখানে পূর্ণম কুমার সাউয়ের বিষয়টি তোলা হয়েছিল। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই জওয়ান কোনও নিয়ম ভঙ্গ করেননি। তাই তাকে ফেরত দেওয়া হোক। ভারতের সেই দাবি মেনে নেয় পাকিস্তান। অবশেষে বুধবার আটারি-ওয়াঘা সীমান্তে পূর্ণম কুমার সাউকে দীর্ঘ ২৩ দিনের মাথায় ভারতের হাতে অর্পণ করা হয়।
বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রজনী সাউকে ফোন করে বলেন, ‘আমি তো বলে দিয়েছিলাম ও ভালো আছে। রজনী মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আপনিতো আমাকে বলেছিলেন, আপনার কোথাও যাওয়ার দরকার নেই। আপনি ঘরে থাকুন। আমি ঠিক ওনাকে নিয়ে আসব। আপনি তিনদিন আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। আজ ফোর্থ ডে উনি চলে এসেছেন।’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভগবান আপনাদের ভালো রাখুন। আপনাদের বাচ্চাদের ভালো রাখুন। এখন সকলে হাসিমুখে থাকুন।’
পূর্ণম কুমার সাউয়ের বাবা ভোলানাথ সাউ জানান, সকাল আটটার মধ্যে ছেলের মুক্তির খবর পাই। ছেলে মুক্তি পাওয়ায় আমরা খুশি। তিনিও প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীকে শুভেচ্ছা জানান। বাড়ি ফিরে আসার পর পূর্ণম কুমার সাউ আবারও বিএসএফের জওয়ান হিসেবে কাজ করবেন কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ভোলানাথ বাবু বলেন, ‘আমি আবারও ছেলেকে দেশ রক্ষার কাজে পাঠাব।’





























