০৭ অগাস্ট ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংসদে সরব খলিলুর

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বসবাসকারী নাগরিকদের ওপর নির্মম অত্যাচার

মারুফা খাতুন
  • আপডেট : ৭ অগাস্ট ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 30

আবদুল ওদুদ : রাজ্যের বিভিন্ন সীমান্তে বাড়ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের নির্মম অত্যাচার। এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে একাধিকবার লোকসভায় সরব হয়েছেন জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আরও একটি নির্মম অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংসদে স্পিকারকে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানালেন তিনি।

বুধবার সংসদে তিনি প্রশ্ন তোলেন কেন বারবার ভারত – বাংলাদেশ সীমান্ত অঞ্চলে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের ওপর বিএসএফ অত্যাচার চালাবে? কবে এই অত্যাচার বন্ধ হবে? ঘটনার বিবরণ দিয়ে খলিলুর রহমান স্পিকার কে বলেন, মুর্শিদাবাদের মিঠিপুর পঞ্চায়েতের ষষ্ঠীতলা গ্রামে সম্প্রতি ১১৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের পাঁচজন বিএসএফ জওয়ান গ্রামে প্রবেশ করে প্রায় ৫০ জন নিরপরাধ গ্রামবাসীর উপর নৃশংসভাবে লাঠিচার্জ করেন। আহতদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং সাধারণ গৃহবধূও বাদ যায়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ-মহিলাদের উপর কুরুচিকর ভাষায় গালিগালাজ ও শারীরিক নিগ্রহ চালানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলাকে সমর্থন করেন ৭১ শতাংশ রুশ নাগরিক

তিনি আরো বলেন, এই ঘটনা এখানেই শেষ নয়। মাছ ধরতে নদীতে মৎস্যজীবীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে, কৃষকদের ক্ষেতের কাজে বাধা দিচ্ছে বিএসএফ । আটকে রাখা সাধারণ নাগরিকদের জোর করে ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে বিনা পারিশ্রমিকে খাটানো হচ্ছে, সন্ধ্যার পর দোকান খোলা বা বাইরে বের হওয়াকেও বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছে প্রায়  ২৭ লক্ষ মানুষ

সাংসদ খলিলুর রহমান প্রশ্ন তোলেন, কার নির্দেশে এই নির্লজ্জ অত্যাচার? দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন নীরব? দেশের অন্য প্রান্তে, বিশেষ করে বিজেপি -শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের “ভারতীয় নয়” বলে হেনস্থা করা হচ্ছে। আর সীমান্তে, যাঁদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা, তাঁদের হাতেই চলছে নির্যাতন।
সংসদে এদিন তিনি দাবী তুলে আরও বলেন, অবিলম্বে একটি উচ্চপর্যায়ের নিরপেক্ষ এবং স্বতন্ত্র তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক। এই কমিটি এলাকায় ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে এবং এর সুষ্ঠু সমাধানের ব্যবস্থা করবে। বারবার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ সীমান্তে বসবাসকারী মানুষদের উপর নির্মম এবং নৃশংস অত্যাচার দ্রুত বন্ধ করতে হবে।

সীমান্ত এলাকায় যে সমস্ত বিএসএফ সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে ,তাদের শনাক্ত করে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে । যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সেই সমস্ত বিএসএফদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিরও দাবি করেন তিনি। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কাছে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন,আপনি আপনার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করুন, এই ধরনের ঘটনা যাতে সীমান্ত এলাকায় পুনরায় না ঘটে সে ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করুন।

সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, অন্যান্য রাজ্যের মত এই বাংলার মানুষ এই দেশেরই সন্তান, এই দেশেরই নাগরিক। কেন এই বাংলার মানুষকে অবজ্ঞা ও সন্দেহের চোখে দেখা হবে। সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী মানুষদেরও সমান মর্যাদার সঙ্গে দেখা হোক-এই দাবি আমাদের সংবিধানের, এই দাবি একবিংশ শতাব্দীর ভারতের। কাজেই সংবিধান যখন তাদের মর্যাদার কথা বলেছে, তখন কি করে সীমান্তরক্ষী বাহিনী সীমান্ত সুরক্ষার নামে সাধারণ নাগরিকদের উপর নির্মম অত্যাচার চালাবে?

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সংসদে সরব খলিলুর

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বসবাসকারী নাগরিকদের ওপর নির্মম অত্যাচার

আপডেট : ৭ অগাস্ট ২০২৫, বৃহস্পতিবার

আবদুল ওদুদ : রাজ্যের বিভিন্ন সীমান্তে বাড়ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের নির্মম অত্যাচার। এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে একাধিকবার লোকসভায় সরব হয়েছেন জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আরও একটি নির্মম অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংসদে স্পিকারকে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানালেন তিনি।

বুধবার সংসদে তিনি প্রশ্ন তোলেন কেন বারবার ভারত – বাংলাদেশ সীমান্ত অঞ্চলে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের ওপর বিএসএফ অত্যাচার চালাবে? কবে এই অত্যাচার বন্ধ হবে? ঘটনার বিবরণ দিয়ে খলিলুর রহমান স্পিকার কে বলেন, মুর্শিদাবাদের মিঠিপুর পঞ্চায়েতের ষষ্ঠীতলা গ্রামে সম্প্রতি ১১৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের পাঁচজন বিএসএফ জওয়ান গ্রামে প্রবেশ করে প্রায় ৫০ জন নিরপরাধ গ্রামবাসীর উপর নৃশংসভাবে লাঠিচার্জ করেন। আহতদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং সাধারণ গৃহবধূও বাদ যায়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ-মহিলাদের উপর কুরুচিকর ভাষায় গালিগালাজ ও শারীরিক নিগ্রহ চালানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলাকে সমর্থন করেন ৭১ শতাংশ রুশ নাগরিক

তিনি আরো বলেন, এই ঘটনা এখানেই শেষ নয়। মাছ ধরতে নদীতে মৎস্যজীবীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে, কৃষকদের ক্ষেতের কাজে বাধা দিচ্ছে বিএসএফ । আটকে রাখা সাধারণ নাগরিকদের জোর করে ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে বিনা পারিশ্রমিকে খাটানো হচ্ছে, সন্ধ্যার পর দোকান খোলা বা বাইরে বের হওয়াকেও বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছে প্রায়  ২৭ লক্ষ মানুষ

সাংসদ খলিলুর রহমান প্রশ্ন তোলেন, কার নির্দেশে এই নির্লজ্জ অত্যাচার? দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন নীরব? দেশের অন্য প্রান্তে, বিশেষ করে বিজেপি -শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের “ভারতীয় নয়” বলে হেনস্থা করা হচ্ছে। আর সীমান্তে, যাঁদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা, তাঁদের হাতেই চলছে নির্যাতন।
সংসদে এদিন তিনি দাবী তুলে আরও বলেন, অবিলম্বে একটি উচ্চপর্যায়ের নিরপেক্ষ এবং স্বতন্ত্র তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক। এই কমিটি এলাকায় ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে এবং এর সুষ্ঠু সমাধানের ব্যবস্থা করবে। বারবার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ সীমান্তে বসবাসকারী মানুষদের উপর নির্মম এবং নৃশংস অত্যাচার দ্রুত বন্ধ করতে হবে।

সীমান্ত এলাকায় যে সমস্ত বিএসএফ সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে ,তাদের শনাক্ত করে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে । যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সেই সমস্ত বিএসএফদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিরও দাবি করেন তিনি। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কাছে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন,আপনি আপনার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করুন, এই ধরনের ঘটনা যাতে সীমান্ত এলাকায় পুনরায় না ঘটে সে ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করুন।

সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, অন্যান্য রাজ্যের মত এই বাংলার মানুষ এই দেশেরই সন্তান, এই দেশেরই নাগরিক। কেন এই বাংলার মানুষকে অবজ্ঞা ও সন্দেহের চোখে দেখা হবে। সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী মানুষদেরও সমান মর্যাদার সঙ্গে দেখা হোক-এই দাবি আমাদের সংবিধানের, এই দাবি একবিংশ শতাব্দীর ভারতের। কাজেই সংবিধান যখন তাদের মর্যাদার কথা বলেছে, তখন কি করে সীমান্তরক্ষী বাহিনী সীমান্ত সুরক্ষার নামে সাধারণ নাগরিকদের উপর নির্মম অত্যাচার চালাবে?