০১ জুন ২০২৫, রবিবার, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চাকরিহারা ইংরেজি শিক্ষকের মৃত্যু  

আবুল খায়ের
  • আপডেট : ২৯ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 44

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদের চাকরিহারা এক  শিক্ষকের। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোরে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরিবারের লোকজন তাঁকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে বাঁচাতে পারেননি। প্রবীণ কর্মকার (৩৩) নামে ওই শিক্ষক জিয়াগঞ্জের আমাইপাড়া বিদ্যাপীঠে পড়াতেন।

স্কুলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৯ সালে নবম-দশম শ্রেণির ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে ওই স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন প্রবীণ। ২০১৬ সালের এসএসসি-র প্যানেলে তাঁর নাম ছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর প্রবীণ-সহ ওই স্কুলের চার জন শিক্ষক চাকরিহারা হন। এরপর নতুন করে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ জারি করলে ফের স্কুলে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। মুর্শিদাবাদ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দফতরে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পাঠানো যোগ্য শিক্ষকের তালিকাতেও তাঁর নাম ছিল।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে শোকপ্রকাশ করেন আন্দোলনরত চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এ দিন চাকরিহারাদের প্রতিনিধি চিন্ময় মণ্ডল বলেন , ‘তিনি জিয়াগঞ্জের একজন শিক্ষক ছিলেন। ইংরেজির শিক্ষক। তিনি গতকাল রাত দেড়টার সময়,  পরলোকগমন করেন। তাঁর বাড়ি রঘুনাথগঞ্জে।  তিনি আমাদেরই একজন সহযোদ্ধা ছিলেন। অবশ্যই কিছু রোগে তিনি ভুগছিলেন, কিন্তু বিগত কয়েকদিন ধরে, তিনি প্রচন্ড দুশ্চিন্তায় ছিলেন।  এবং যেহেতু এই প্যানেলটা বাতিল হয়েছে এবং দুর্নীতির কারণে, চাকরিটা গেছে। তাই তিনি সেই মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে পারেননি। স্ট্রোকে তিনি মারা গেছেন। তাঁর আত্মার শান্তির উদ্দেশ্যে অবশ্যই আমরা নীরবতা পালন করব পরে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এটুকু জানাই, মুখ্যমন্ত্রী দুই-তিনদিন আগে সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করেছেন, যে নতুন পরীক্ষা হবে। উনি দুটো পদ্ধতির কথা বলেছেন। প্রথমেই বলেছেন পরীক্ষা। দ্বিতীয়ত বলেছেন, রিভিউ। আমরা তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করছি না। কারণ রাজ্যের একজন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তিনি জানেন কতবড় দুর্নীতি হয়েছে। যার জন্য আজকে আমাদেরকে রাস্তায় বসে থাকতে হচ্ছে। ঘুমোতে হচ্ছে। শুধুমাত্র দুর্নীতির কারণে। কিন্তু আজকে তিনি বলছেন, রিভিউটা দুই নাম্বারে , এক নম্বরে পরীক্ষা। এক নম্বরে রিভিউ হওয়া উচিত। আবার পরীক্ষা না দিয়ে, যোগ্য যারা তাঁদেরকে পুনর্বহাল করা যায়, সেই ব্যবস্থাই কিন্তু সরকারকে করতে হবে। কোনওভাবেই ১০ বছর পরে এসে, সেই মেন্টালিটি থাকে না।’

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রবীণেরা তিন ভাই। তাঁদের মধ্যে প্রবীণ মেজ। বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মা রয়েছেন। তবে, প্রবীণের মৃত্যুতে রঘুনাথগঞ্জ থানায় পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

 

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চাকরিহারা ইংরেজি শিক্ষকের মৃত্যু  

আপডেট : ২৯ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদের চাকরিহারা এক  শিক্ষকের। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোরে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরিবারের লোকজন তাঁকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে বাঁচাতে পারেননি। প্রবীণ কর্মকার (৩৩) নামে ওই শিক্ষক জিয়াগঞ্জের আমাইপাড়া বিদ্যাপীঠে পড়াতেন।

স্কুলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৯ সালে নবম-দশম শ্রেণির ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে ওই স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন প্রবীণ। ২০১৬ সালের এসএসসি-র প্যানেলে তাঁর নাম ছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর প্রবীণ-সহ ওই স্কুলের চার জন শিক্ষক চাকরিহারা হন। এরপর নতুন করে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ জারি করলে ফের স্কুলে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। মুর্শিদাবাদ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দফতরে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পাঠানো যোগ্য শিক্ষকের তালিকাতেও তাঁর নাম ছিল।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে শোকপ্রকাশ করেন আন্দোলনরত চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এ দিন চাকরিহারাদের প্রতিনিধি চিন্ময় মণ্ডল বলেন , ‘তিনি জিয়াগঞ্জের একজন শিক্ষক ছিলেন। ইংরেজির শিক্ষক। তিনি গতকাল রাত দেড়টার সময়,  পরলোকগমন করেন। তাঁর বাড়ি রঘুনাথগঞ্জে।  তিনি আমাদেরই একজন সহযোদ্ধা ছিলেন। অবশ্যই কিছু রোগে তিনি ভুগছিলেন, কিন্তু বিগত কয়েকদিন ধরে, তিনি প্রচন্ড দুশ্চিন্তায় ছিলেন।  এবং যেহেতু এই প্যানেলটা বাতিল হয়েছে এবং দুর্নীতির কারণে, চাকরিটা গেছে। তাই তিনি সেই মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে পারেননি। স্ট্রোকে তিনি মারা গেছেন। তাঁর আত্মার শান্তির উদ্দেশ্যে অবশ্যই আমরা নীরবতা পালন করব পরে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এটুকু জানাই, মুখ্যমন্ত্রী দুই-তিনদিন আগে সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করেছেন, যে নতুন পরীক্ষা হবে। উনি দুটো পদ্ধতির কথা বলেছেন। প্রথমেই বলেছেন পরীক্ষা। দ্বিতীয়ত বলেছেন, রিভিউ। আমরা তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করছি না। কারণ রাজ্যের একজন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তিনি জানেন কতবড় দুর্নীতি হয়েছে। যার জন্য আজকে আমাদেরকে রাস্তায় বসে থাকতে হচ্ছে। ঘুমোতে হচ্ছে। শুধুমাত্র দুর্নীতির কারণে। কিন্তু আজকে তিনি বলছেন, রিভিউটা দুই নাম্বারে , এক নম্বরে পরীক্ষা। এক নম্বরে রিভিউ হওয়া উচিত। আবার পরীক্ষা না দিয়ে, যোগ্য যারা তাঁদেরকে পুনর্বহাল করা যায়, সেই ব্যবস্থাই কিন্তু সরকারকে করতে হবে। কোনওভাবেই ১০ বছর পরে এসে, সেই মেন্টালিটি থাকে না।’

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রবীণেরা তিন ভাই। তাঁদের মধ্যে প্রবীণ মেজ। বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মা রয়েছেন। তবে, প্রবীণের মৃত্যুতে রঘুনাথগঞ্জ থানায় পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।