২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুসলিম পরিবারের গাড়ি আটকে খুনের হুমকি ও শারীরিক নিগৃহ বিজেপি সাংসদের

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার
  • / 20

বেঙ্গালুরু: গাড়ি আটকে একটি মুসলিম পরিবারের সদস্যদের মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠল কর্নাটকের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ অনন্ত কুমার হেগড়ের বিরুদ্ধে। সোমবার হালিয়ানাহাল্লির বাসিন্দা সইফ খানের অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করেছে তুমাকুরুর দাবাসপেট থানা। পুলিশের দায়ের করা এফআইআরে বলা হয়েছে, সোমবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। যখন সইফ ও তাঁর পরিবার তুমাকুরুতে একটি ইনোভা ক্রিস্টায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন। ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে নিজাগালের কাছে একটি সাদা এক্সইউভি ৭০০ গাড়ি তাদের গাড়ি আটকায় বলে অভিযোগ। ওই সাদা গাড়িটি থেকে তিনজন নেমে এসে তাঁদের গাড়িটিকে রাস্তার পাশে দাঁড় করাতে বাধ্য করেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, বন্দুকধারী পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি সাইফকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। আরেকজন তার ভাই সালমান খানকে গাড়ি থেকে টেনে বের করে আক্রমণ করলে তার তিনটি দাঁত ভেঙে যায়। তৃতীয় হামলাকারীকে অনন্তকুমার হেগড়ে বলে চিহ্নিত করে সইফ অভিযোগ করেন, হেগড়ে হামলা চালিয়েছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, “সাবরু” শব্দটি কর্ণাটকের মুসলমানদের জন্য ব্যবহৃত একটি অবমাননাকর গালি। এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে যে আক্রমণের সময় “নিম্ন সাব্রু বর্ণ” এবং আপত্তিজনক ভাষার মতো বর্ণভিত্তিক গালি ব্যবহার করা হয়েছিল। অভিযোগকারীর জানিয়েছেন, ওই তিনজনের মধ্যে একজন তাঁকে মারধর করতে শুরু করেন। তাঁর ভাই সলমন খানকে গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে মারধর করা হয়। এরই মধ্যে প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ অনন্তকুমার হেগড়ে বিষয়টিকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেন। অভিযোগ, বন্দুকধারী পিস্তল উঁচিয়ে পরিবারটিকে গুলি করার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। হেনস্থার শিকার পরিবারটির বক্তব্য, তাঁর মা এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাঁকে ঘাড় ধরে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করা হয়। এমনকী সইফের মায়ের পোশাক ধরেও টানাটানি করা হয় বলে অভিযোগ।

গুরুতর জখম অবস্থায় আহতদের দাবাসপেট সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। থানায় নিয়ে যাওয়ার আগে হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে সইফ খানের বয়ান রেকর্ড করা হয়। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) বিভিন্ন ধারায় এফআইআর দায়ের করেছে দাবাসপেট পুলিশ। হেগড়েকে সহ তাঁর দেহরক্ষী ও গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। এদিকে কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর জানিয়েছেন, “হেগড়ের গাড়িকে অন্য একটি গাড়ি ওভারটেক করার পর বচসা শুরু হয়। জবাবে হেগড়ের বন্দুকধারী ও চালক গাড়ি থামিয়ে ওই ব্যক্তিকে মারধর করেন। পুলিশ আমাকে জানিয়েছে যে অনন্ত কুমার হেগড়ে নিজে কাউকে মারধর করেননি। তদন্ত চলছে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হেগড়ে জড়িত ছিলেন কি না, তা তদন্তের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে।”

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মুসলিম পরিবারের গাড়ি আটকে খুনের হুমকি ও শারীরিক নিগৃহ বিজেপি সাংসদের

আপডেট : ২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার

বেঙ্গালুরু: গাড়ি আটকে একটি মুসলিম পরিবারের সদস্যদের মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠল কর্নাটকের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ অনন্ত কুমার হেগড়ের বিরুদ্ধে। সোমবার হালিয়ানাহাল্লির বাসিন্দা সইফ খানের অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করেছে তুমাকুরুর দাবাসপেট থানা। পুলিশের দায়ের করা এফআইআরে বলা হয়েছে, সোমবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। যখন সইফ ও তাঁর পরিবার তুমাকুরুতে একটি ইনোভা ক্রিস্টায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন। ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে নিজাগালের কাছে একটি সাদা এক্সইউভি ৭০০ গাড়ি তাদের গাড়ি আটকায় বলে অভিযোগ। ওই সাদা গাড়িটি থেকে তিনজন নেমে এসে তাঁদের গাড়িটিকে রাস্তার পাশে দাঁড় করাতে বাধ্য করেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, বন্দুকধারী পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি সাইফকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। আরেকজন তার ভাই সালমান খানকে গাড়ি থেকে টেনে বের করে আক্রমণ করলে তার তিনটি দাঁত ভেঙে যায়। তৃতীয় হামলাকারীকে অনন্তকুমার হেগড়ে বলে চিহ্নিত করে সইফ অভিযোগ করেন, হেগড়ে হামলা চালিয়েছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, “সাবরু” শব্দটি কর্ণাটকের মুসলমানদের জন্য ব্যবহৃত একটি অবমাননাকর গালি। এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে যে আক্রমণের সময় “নিম্ন সাব্রু বর্ণ” এবং আপত্তিজনক ভাষার মতো বর্ণভিত্তিক গালি ব্যবহার করা হয়েছিল। অভিযোগকারীর জানিয়েছেন, ওই তিনজনের মধ্যে একজন তাঁকে মারধর করতে শুরু করেন। তাঁর ভাই সলমন খানকে গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে মারধর করা হয়। এরই মধ্যে প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ অনন্তকুমার হেগড়ে বিষয়টিকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেন। অভিযোগ, বন্দুকধারী পিস্তল উঁচিয়ে পরিবারটিকে গুলি করার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। হেনস্থার শিকার পরিবারটির বক্তব্য, তাঁর মা এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাঁকে ঘাড় ধরে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করা হয়। এমনকী সইফের মায়ের পোশাক ধরেও টানাটানি করা হয় বলে অভিযোগ।

গুরুতর জখম অবস্থায় আহতদের দাবাসপেট সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। থানায় নিয়ে যাওয়ার আগে হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে সইফ খানের বয়ান রেকর্ড করা হয়। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) বিভিন্ন ধারায় এফআইআর দায়ের করেছে দাবাসপেট পুলিশ। হেগড়েকে সহ তাঁর দেহরক্ষী ও গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। এদিকে কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর জানিয়েছেন, “হেগড়ের গাড়িকে অন্য একটি গাড়ি ওভারটেক করার পর বচসা শুরু হয়। জবাবে হেগড়ের বন্দুকধারী ও চালক গাড়ি থামিয়ে ওই ব্যক্তিকে মারধর করেন। পুলিশ আমাকে জানিয়েছে যে অনন্ত কুমার হেগড়ে নিজে কাউকে মারধর করেননি। তদন্ত চলছে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হেগড়ে জড়িত ছিলেন কি না, তা তদন্তের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে।”