২৫ জুন ২০২৫, বুধবার, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কারও প্রশংসা কিংবা সমালোচনা করবেন কীভাবে? জানুন কী বলছে ইসলাম ?

পুবের কলম
  • আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২১, মঙ্গলবার
  • / 42

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : গুণের প্রশংসা ও দোষের সমালোচনা স্বাভাবিক একটি বিষয়।ইসলাম মানুষের প্রশংসা বা সমালোচনা উভয় ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষার নির্দেশ দিয়েছে। গুণীর গুণের প্রশংসা করা, সততা ও নৈতিকতার দাবি।

রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও সাহাবিগণের প্রশংসা করেছেন। হজরত উমর (রা.) সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘তুমি যে পথে চলো শয়তান কখনো সে পথে চলে না, বরং সে তোমার পথ ছেড়ে অন্য পথে চলে।’(বুখারি, হাদিস: ৩২৯৪)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মানুষের মধ্যে ভালো লোক আবু বকর, ভালো লোক উমর, ভালো লোক আবু উবাইদা, ভালো লোক উসআদ ইবনে উজাইর, ভালো লোক সাবিত ইবনু কায়স, ভালো লোক আমর ইবনুল জামুহ ও ভালো লোক মুআজ ইবনু জাবাল!’ (আদাবুল মুফরাদ)।

আরও পড়ুন: বাক্-স্বাধীনতা থাকলেই ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা যায় না– শর্মিষ্ঠার অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন খারিজ

 রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যারা মানুষের কৃতজ্ঞতা আদায় করে না, সে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারে না।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২১৩৩১)। প্রশংসায় ভালো কাজে উৎসাহিত করা হয়। নবীজি (সা.) বলেছিলেন, ‘আবদুল্লাহ কতই না উত্তম ব্যক্তি যদি সে তাহাজ্জুদ আদায় করত।’ (বুখারি, হাদিস: ১১৫৬)। প্রশংসায় অধিকার লাভ করা যায়। হজরত শোয়াইব (আ.)-এর কন্যা মুসা (আ.) সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘হে পিতা! আপনি একে কর্মে নিযুক্ত করুন। কেননা আপনার কর্মী হিসেবে উত্তম হবে সেই ব্যক্তি, যে শক্তিশালী, বিশ্বস্ত।’ (সুরা-২৮ কাসাস, আয়াত: ২৬)।

আরও পড়ুন: ইসলামের দাওয়াত সবার জন্য

তবে আত্মপ্রশংসা দোষের। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতএব তোমরা আত্মপ্রশংসা কোরো না, তিনিই সম্যক জানেন কে আল্লাহভীরু।’ (সুরা-৫৩ নাজম, আয়াত: ৩২)। অপরাধী, পাপাচারী ও অসৎ লোকের প্রশংসা করা নিষিদ্ধ।

আরও পড়ুন: ইসলাম: শান্তির পয়গাম

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা মুনাফিককে “আমাদের নেতা” বলে সম্বোধন কোরো না। কেননা, সে যদি নেতা হয়, তবে তোমরা তোমাদের মহামহিম আল্লাহকে ক্রোধান্বিত করলে।’ (আবুদাউদ, হাদিস: ৪৯৭৭)।

প্রশংসাপ্রত্যাশীদের প্রশংসা থেকে বিরত থাকতে হবে। পবিত্র কুরআনে এদের নিন্দা করে বলা হয়েছে, ‘যারা নিজেরা যা করেছে, তাতে আনন্দ প্রকাশ করে এবং যা নিজেরা করেনি এমন কাজের জন্য প্রশংসিত হতে ভালোবাসে, “তারা শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে” তুমি কখনো এমন মনে কোরো না। তাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে।’ (সুরা-৩ আলে ইমরান, আয়াত: ১৮৮)।

প্রশংসার মুখোমুখি হলে করণীয় হলো নিজের গোপন ত্রুটির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া। সাহাবিগণের প্রশংসা করা হলে তাঁরা বলতেন, ‘হে আল্লাহ! তারা যা জানে না, সে বিষয়ে আমাকে ক্ষমা করুন, তারা যা বলেছে সে ব্যাপারে আমাকে পাকড়াও করবেন না এবং তারা যেমন ধারণা করে, আমাকে তার চেয়ে উত্তম বানিয়ে দিন।’ (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস: ৭৬১)।

কখনও কখনও অতি প্রশংসা তোষামোদে পরিণত হয়। কেউ সুবিধা আদায়ের জন্য, কেউ পরিস্থিতির শিকার হয়ে কিংবা অসুবিধায় পড়ে অযাচিত প্রশংসায় লিপ্ত হয়। একদিকে চলে পেছনে পেছনে চরম পরচর্চা, অন্যদিকে চলে মুখোমুখি অতি প্রশংসা। পরচর্চা ও অতি প্রশংসা মানুষের ব্যক্তিত্বকে ক্ষুণ্ন করে, সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। ইসলাম এমন বাড়াবাড়িমূলক কাজকে খুবই নিন্দনীয় ও হারাম ঘোষণা করেছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

কারও প্রশংসা কিংবা সমালোচনা করবেন কীভাবে? জানুন কী বলছে ইসলাম ?

আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২১, মঙ্গলবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : গুণের প্রশংসা ও দোষের সমালোচনা স্বাভাবিক একটি বিষয়।ইসলাম মানুষের প্রশংসা বা সমালোচনা উভয় ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষার নির্দেশ দিয়েছে। গুণীর গুণের প্রশংসা করা, সততা ও নৈতিকতার দাবি।

রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও সাহাবিগণের প্রশংসা করেছেন। হজরত উমর (রা.) সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘তুমি যে পথে চলো শয়তান কখনো সে পথে চলে না, বরং সে তোমার পথ ছেড়ে অন্য পথে চলে।’(বুখারি, হাদিস: ৩২৯৪)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মানুষের মধ্যে ভালো লোক আবু বকর, ভালো লোক উমর, ভালো লোক আবু উবাইদা, ভালো লোক উসআদ ইবনে উজাইর, ভালো লোক সাবিত ইবনু কায়স, ভালো লোক আমর ইবনুল জামুহ ও ভালো লোক মুআজ ইবনু জাবাল!’ (আদাবুল মুফরাদ)।

আরও পড়ুন: বাক্-স্বাধীনতা থাকলেই ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা যায় না– শর্মিষ্ঠার অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন খারিজ

 রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যারা মানুষের কৃতজ্ঞতা আদায় করে না, সে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারে না।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২১৩৩১)। প্রশংসায় ভালো কাজে উৎসাহিত করা হয়। নবীজি (সা.) বলেছিলেন, ‘আবদুল্লাহ কতই না উত্তম ব্যক্তি যদি সে তাহাজ্জুদ আদায় করত।’ (বুখারি, হাদিস: ১১৫৬)। প্রশংসায় অধিকার লাভ করা যায়। হজরত শোয়াইব (আ.)-এর কন্যা মুসা (আ.) সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘হে পিতা! আপনি একে কর্মে নিযুক্ত করুন। কেননা আপনার কর্মী হিসেবে উত্তম হবে সেই ব্যক্তি, যে শক্তিশালী, বিশ্বস্ত।’ (সুরা-২৮ কাসাস, আয়াত: ২৬)।

আরও পড়ুন: ইসলামের দাওয়াত সবার জন্য

তবে আত্মপ্রশংসা দোষের। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতএব তোমরা আত্মপ্রশংসা কোরো না, তিনিই সম্যক জানেন কে আল্লাহভীরু।’ (সুরা-৫৩ নাজম, আয়াত: ৩২)। অপরাধী, পাপাচারী ও অসৎ লোকের প্রশংসা করা নিষিদ্ধ।

আরও পড়ুন: ইসলাম: শান্তির পয়গাম

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা মুনাফিককে “আমাদের নেতা” বলে সম্বোধন কোরো না। কেননা, সে যদি নেতা হয়, তবে তোমরা তোমাদের মহামহিম আল্লাহকে ক্রোধান্বিত করলে।’ (আবুদাউদ, হাদিস: ৪৯৭৭)।

প্রশংসাপ্রত্যাশীদের প্রশংসা থেকে বিরত থাকতে হবে। পবিত্র কুরআনে এদের নিন্দা করে বলা হয়েছে, ‘যারা নিজেরা যা করেছে, তাতে আনন্দ প্রকাশ করে এবং যা নিজেরা করেনি এমন কাজের জন্য প্রশংসিত হতে ভালোবাসে, “তারা শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে” তুমি কখনো এমন মনে কোরো না। তাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে।’ (সুরা-৩ আলে ইমরান, আয়াত: ১৮৮)।

প্রশংসার মুখোমুখি হলে করণীয় হলো নিজের গোপন ত্রুটির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া। সাহাবিগণের প্রশংসা করা হলে তাঁরা বলতেন, ‘হে আল্লাহ! তারা যা জানে না, সে বিষয়ে আমাকে ক্ষমা করুন, তারা যা বলেছে সে ব্যাপারে আমাকে পাকড়াও করবেন না এবং তারা যেমন ধারণা করে, আমাকে তার চেয়ে উত্তম বানিয়ে দিন।’ (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস: ৭৬১)।

কখনও কখনও অতি প্রশংসা তোষামোদে পরিণত হয়। কেউ সুবিধা আদায়ের জন্য, কেউ পরিস্থিতির শিকার হয়ে কিংবা অসুবিধায় পড়ে অযাচিত প্রশংসায় লিপ্ত হয়। একদিকে চলে পেছনে পেছনে চরম পরচর্চা, অন্যদিকে চলে মুখোমুখি অতি প্রশংসা। পরচর্চা ও অতি প্রশংসা মানুষের ব্যক্তিত্বকে ক্ষুণ্ন করে, সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। ইসলাম এমন বাড়াবাড়িমূলক কাজকে খুবই নিন্দনীয় ও হারাম ঘোষণা করেছে।