হাতি মৃত্যু ঠেকাতে এআই প্রযুক্তির ব্যবহার রেলের

- আপডেট : ২৩ জুন ২০২৫, সোমবার
- / 18
রাঁচি: ট্রেনের ধাক্কায় হাতি মৃত্যু রুখতে অভিনব পন্থা নিচ্ছে ভারতীয় রেল। ঝাড়খণ্ডে হাতি মৃত্যু রুখতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সাহায্য নিতে চলেছে রেল। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের চক্রধরপুর (সিকেপি) বিভাগ দ্রুত এআই ভিত্তিক এলিফ্যান্ট ইনট্রুশন ডিটেকশন সিস্টেম (ইআইডিএস) স্থাপন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। দ্রুতগামী ট্রেনগুলি যাতে হাতিগুলিকে পিষে না দেয়, যে কারণেই এআই প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে রেল। ইনট্রুশন ডিটেকশন সিস্টেম প্রস্তুত করে সম্প্রতি বরাবাম্বু-চক্রধরপুর-লোটাপাহাড় বিভাগে একটি সফল পরীক্ষা চালানো হয়েছে। তাতে সাফল্যও মিলেছে। ঠিক কি ভাবে কাজ করবে এআই প্রযুক্তি? এবিষয়ে রেলের এক কর্তা জানিয়েছেন, রেললাইনের কাছাকাছি হাতির উপস্থিতি সনাক্ত করবে ইআইডিএস। তারপর সেই বার্তা সোজা লোকো পাইলটের কাছে পৌঁছে যাবে। আগাম বার্তা পাওয়ার ফলে দ্রুতগামী ট্রেনকে ‘ধীর’ করা সম্ভব হবে। প্রযুক্তির পরীক্ষা চালানোর জন্য ভানতারা থেকে জ্যোতি ও সোনু নামে দুটি হাতিকে নিয়ে আসা হয়েছিল।
রেল সূত্রে খবর, সিস্টেমটি ফাইবার অপটিক্স এবং সেন্সরের মাধ্যমে কাজ করবে। এই পদক্ষেপটি কোলহান অঞ্চলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হবে, যেখানে প্রচুর সংখ্যক হাতি নিয়মিত রেললাইন অতিক্রম করে এবং তাদের মধ্যে অনেকগুলি ট্রেনের ধাক্কায় মারা যায়। বন বিভাগের সহযোগিতায় ভারতীয় রেলওয়ে এই সিস্টেমটি তৈরি করেছে। রেলওয়ে কর্মকর্তারা এমন জায়গাগুলি চিহ্নিত করেছেন যেখানে হাতিগুলি ঘন ঘন চলাচল করে এবং এই জাতীয় জায়গাগুলিতে সিস্টেমটি ইনস্টল করবে। রেললাইনের দু’পাশে ৩০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে কাজ করবে এই ব্যবস্থা। যখন হাতির একটি দল ব্যাসার্ধের মধ্যে আসবে, সিস্টেমটি তত্ক্ষণাত নিকটতম স্টেশন মাস্টারকে একটি সতর্কতা প্রেরণ করবে। সিনিয়র ডিসিএম আদিতা কুমার চৌধুরী বলেন, “স্টেশন মাস্টার ওয়্যারলেস সিস্টেমের মাধ্যমে ট্রেন চালককে জানাবেন, তারপরে ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হবে। হাতিরা লাইন পার হওয়ার পর ট্রেনের গতি স্বাভাবিক হবে।” উল্লেখ্য, ঝাড়খণ্ডের প্রায় ১৮ টি জেলায় বন্য হাতির একটি দল ঘুরে বেড়ায়। যার ফলে অনেক সময় তারা রেললাইনে ট্রেনের ধাক্কায় মারা যায়। বন দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঝাড়খণ্ডে প্রতি বছর ট্রেন দুর্ঘটনায় গড়ে ১২ থেকে ২০টি হাতির মৃত্যু হয়। রেল কর্তার কথায়, বেশিরভাগ দুর্ঘটনা চক্রধরপুর রেলওয়ে ডিভিশনে ঘটে। রাঁচি রেলওয়ে ডিভিশনে গত পাঁচ বছরে অর্ধ ডজন হাতি মারা গিয়েছে। অনেক সময় রেললাইনে হাতির দল জড়ো হয়ে রেল পরিষেবা ব্যাহত করে। শুধু হাতি নয়, ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা থাকায় এ ধরনের ঘটনায় রেলেরও ক্ষতি হয়। হাতি মৃত্যু রোধ করতে এবং হাতিদের ট্রেনের ধাক্কা থেকে বাঁচাতে রেলওয়ে ১৫ কোটি টাকার জন্য এই এলিফ্যান্ট ইনটিউশন ডিটেকশন সিস্টেম ডিভাইসটি প্রস্তুত করেছে। দ্রুত সেটি বাস্তবায়ন করা হবে।