২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, বুধবার, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশে ধর্মনিরপেক্ষতাকে ধ্বংস করছে গেরুয়া শিবির, রেলের অনুষ্ঠানে সংঘের গান নিয়ে তোপ বিজয়নের

পুবের কলম, তিরুবন্তপুরম: দেশে ধর্মনিরপেক্ষতাকে ধ্বংস করছে গেরুয়া শিবির। শনিবার কেন্দ্রকে নিশানা করে বললেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ভারতীয় রেলের এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরএসএস গণগীত গাওয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। বিজয়ন বলেন, “আরএসএসের গানটি সরকারী অনুষ্ঠানে গাওয়া অন্যান্য ধর্মের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো। এটি সাম্প্রদায়িক বিভাজনমূলক রাজনীতির অংশ। এটি সম্পূর্ণ সাংবিধানিক নীতির লঙ্ঘন।” জানা গিয়েছে, এর্নাকুলাম-বেঙ্গালুরু বন্দে ভারত ট্রেন পরিষেবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের আরএসএস গণগীত গাইতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনা চাউর হতেই দক্ষিণ রেলের সমালোচনা করেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সাফ জানান, সরকারী অনুষ্ঠানে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখা উচিত। বন্দে ভারতের উদ্বোধনে আরএসএস গণগীত গাওয়া অত্যন্ত প্রতিবাদমূলক। এই জাতীয় কর্মকাণ্ড সরকারের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকে ক্ষুণ্ন করে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির উন্মোচন প্রত্যক্ষ করেছি। এর পেছনে ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে একটি সংকীর্ণ রাজনৈতিক মানসিকতা।” কেন্দ্রের এই আচরণ নিয়ে জনসাধারণকে প্রতিবাদের আহ্বান জানিয়ে বাম শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। রাষ্ট্রীয় স্বংয়সেবক সংঘের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বিজয়ন বলেন, “এটা অগ্রহণযোগ্য, যে সঙ্ঘ পরিবার তাদের সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রচারের জন্য দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা রেলকে ব্যবহার করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘দেশাত্মবোধক গান’ ক্যাপশনে এই গণগীত শেয়ার করে দক্ষিণ রেলওয়ে শুধু নিজেকে উপহাস করেনি, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকেও উপহাস করেছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদের ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে কাজ করা রেল এখন আরএসএসের সাম্প্রদায়িক এজেন্ডাকে সমর্থন করছে। যারা স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। আজ তাদের গণগীত গাওয়া হচ্ছে।”

কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র প্রতিবাদের পর গেরুয়া শিবিরকে আক্রমণ করেছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপাল। তিনি রেলমন্ত্রীকে চিঠি লিখে কেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরএসএসের গান গাইতে বলা হয়েছিল, তার ব্যাখ্যা চেয়েছেন। কংগ্রেস নেতার বক্তব্য, “একটি পাবলিক ইভেন্টকে আরএসএসের অনুষ্ঠানে রূপান্তরিত করা হয়েছে। দক্ষিণ রেলের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলও গর্বের সাথে এটি শেয়ার করা হয়েছে। এটি ভারতীয় রেলের নির্লজ্জ অপব্যবহার। ভারতীয় রেল কোনও বিভাজনমূলক মতাদর্শ নয়।” কেন্দ্রকে নিশানা করে বেণুগোপাল বলেন, ‘ভারতকে ধীরে ধীরে সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র থেকে আরএসএস নিয়ন্ত্রিত স্বৈরাচারে রূপান্তরিত করার চেষ্টা হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ এবং আমাদের প্রতিষ্ঠানের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করে।”

আরও পড়ুন: ‘৫০০ বছর ধরে জ্বলতে থাকা যজ্ঞের আজ সমাপ্তি হলো’, অযোধ্যায় ধ্বজারোহণে প্রধানমন্ত্রী মোদি

আরও পড়ুন: দিল্লির বিস্ফোরণে ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ দেখছেন মোদি, ‘জড়িতদের কঠোর শাস্তি হবে’ হুঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর
প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.
সর্বধিক পাঠিত

গ্যাংস্টার দুবের জীবনী নিয়ে ওয়েব সিরিজ, ‘সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন’ হওয়ার আশঙ্কায় হাইকোর্টে স্ত্রী

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

দেশে ধর্মনিরপেক্ষতাকে ধ্বংস করছে গেরুয়া শিবির, রেলের অনুষ্ঠানে সংঘের গান নিয়ে তোপ বিজয়নের

আপডেট : ৮ নভেম্বর ২০২৫, শনিবার

পুবের কলম, তিরুবন্তপুরম: দেশে ধর্মনিরপেক্ষতাকে ধ্বংস করছে গেরুয়া শিবির। শনিবার কেন্দ্রকে নিশানা করে বললেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ভারতীয় রেলের এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরএসএস গণগীত গাওয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। বিজয়ন বলেন, “আরএসএসের গানটি সরকারী অনুষ্ঠানে গাওয়া অন্যান্য ধর্মের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো। এটি সাম্প্রদায়িক বিভাজনমূলক রাজনীতির অংশ। এটি সম্পূর্ণ সাংবিধানিক নীতির লঙ্ঘন।” জানা গিয়েছে, এর্নাকুলাম-বেঙ্গালুরু বন্দে ভারত ট্রেন পরিষেবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের আরএসএস গণগীত গাইতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনা চাউর হতেই দক্ষিণ রেলের সমালোচনা করেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সাফ জানান, সরকারী অনুষ্ঠানে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখা উচিত। বন্দে ভারতের উদ্বোধনে আরএসএস গণগীত গাওয়া অত্যন্ত প্রতিবাদমূলক। এই জাতীয় কর্মকাণ্ড সরকারের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকে ক্ষুণ্ন করে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির উন্মোচন প্রত্যক্ষ করেছি। এর পেছনে ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে একটি সংকীর্ণ রাজনৈতিক মানসিকতা।” কেন্দ্রের এই আচরণ নিয়ে জনসাধারণকে প্রতিবাদের আহ্বান জানিয়ে বাম শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। রাষ্ট্রীয় স্বংয়সেবক সংঘের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বিজয়ন বলেন, “এটা অগ্রহণযোগ্য, যে সঙ্ঘ পরিবার তাদের সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রচারের জন্য দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা রেলকে ব্যবহার করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘দেশাত্মবোধক গান’ ক্যাপশনে এই গণগীত শেয়ার করে দক্ষিণ রেলওয়ে শুধু নিজেকে উপহাস করেনি, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকেও উপহাস করেছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদের ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে কাজ করা রেল এখন আরএসএসের সাম্প্রদায়িক এজেন্ডাকে সমর্থন করছে। যারা স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। আজ তাদের গণগীত গাওয়া হচ্ছে।”

কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র প্রতিবাদের পর গেরুয়া শিবিরকে আক্রমণ করেছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপাল। তিনি রেলমন্ত্রীকে চিঠি লিখে কেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরএসএসের গান গাইতে বলা হয়েছিল, তার ব্যাখ্যা চেয়েছেন। কংগ্রেস নেতার বক্তব্য, “একটি পাবলিক ইভেন্টকে আরএসএসের অনুষ্ঠানে রূপান্তরিত করা হয়েছে। দক্ষিণ রেলের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলও গর্বের সাথে এটি শেয়ার করা হয়েছে। এটি ভারতীয় রেলের নির্লজ্জ অপব্যবহার। ভারতীয় রেল কোনও বিভাজনমূলক মতাদর্শ নয়।” কেন্দ্রকে নিশানা করে বেণুগোপাল বলেন, ‘ভারতকে ধীরে ধীরে সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র থেকে আরএসএস নিয়ন্ত্রিত স্বৈরাচারে রূপান্তরিত করার চেষ্টা হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ এবং আমাদের প্রতিষ্ঠানের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করে।”

আরও পড়ুন: ‘৫০০ বছর ধরে জ্বলতে থাকা যজ্ঞের আজ সমাপ্তি হলো’, অযোধ্যায় ধ্বজারোহণে প্রধানমন্ত্রী মোদি

আরও পড়ুন: দিল্লির বিস্ফোরণে ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ দেখছেন মোদি, ‘জড়িতদের কঠোর শাস্তি হবে’ হুঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর