পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: অবশেষে মহাকাশে পাড়ি দিতে চলেছে শুভাংশু শুক্ল। সাতবার পিছিয়ে যাওয়ার বুধবার মহাকাশ অভিযানে যাচ্ছেন শুভাংশু। লখনউয়ের শুভাংশু ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন।  নাসার ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’ অভিযানে কমান্ডিং পাইলট হিসেবে ঐতিহাসিক মুহূর্ত সৃষ্টি করতে চলেছেন তিনি।

এই মিশনের কমান্ডার হিসেবে রয়েছেন প্রাক্তন নভশ্চর ও অ্যাক্সিয়ম স্পেসের মহাকাশযানের ডিরেক্টর পেগি হুইটসন। এলন মাস্কের স্পেসএক্সের ‘ড্রাগন’ মহাকাশযানকে মহাকাশে নিয়ে যাবে ‘ফ্যালকন ৯’ রকেট। আমেরিকার ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারের ৩৯-এ লঞ্চ কমপ্লেক্স থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে। মিশনে পাইলট হিসেবে রয়েছেন লখনউয়ের শুভাংশু। রাকেশ শর্মার চার দশক পরে দ্বিতীয় ভারতীয় হিসাবে মহাকাশে পাড়ি দিচ্ছেন তিনি। নাসা জানিয়েছে, ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার বেলা ১২টা ১ মিনিট নাগাদ উড়ান দিতে পারে এই মাহাকাশযান। তাঁদের মতে সব ঠিক থাকলে শুভাংশুরা আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র (আইএসএস)-এ ঠিক বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ পৌঁছোবেন।

এর আগে সাত বার পিছিয়ে গিয়েছে শুভাংশু শুক্লর মহাকাশযাত্রা। উৎক্ষেপণের দু’দিন আগে,  গত ২৯ মে বাতিল করে দেওয়া হয় ‘ড্রাগন’-কে। খারাপ আবহাওয়া, প্রযুক্তিগত ত্রুটি ও মহাকাশ স্টেশনের সংস্কারকাজের কারণে সাতবার পিছিয়ে যায় এই মিশন। নাসার দাবি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের এভেজদা সার্ভিস মডিউলে মেরামতি হয়েছে। ফলে উড়ানের জন্য সমস্ত কিছু ঠিকঠাক চলছে কিনা তা খতিয়ে দেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২৯ মে ২০২৫ অ্যাক্সিয়ম-৪ শুরু হওয়ার কথা ছিল। পরে তা পিছিয়ে ৮ জুন করা হয়। আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে অভিযান বাতিল করা হয়। এরপরও জানা যায়, ‘ড্রাগন’-এ ইলেক্ট্রিক্যাল হারনেসের সমস্যা রয়েছে। এরপর ৯ জুন অভিযানের দিন ঠিক করা হয়। সেদিনও ফ্যালকন-৯ রকেটের প্রস্তুতি শেষ না হওয়ায় পিছিয়ে গিয়েছিল অভিযান। অভিযান ১০ জুনও হওয়া সম্ভব হইনি খারাপ আবহাওায়ার কারণে। মহাকাশযানের ‘ফায়ার বুস্টার’ পরিদর্শনের সময় দেখা যায়, ‘এলওএক্স’ (তরল অক্সিজেন) লিক করছে। তারফলে আবারও পিছিয়ে যায় মিশনটি। শেষমেশ বুধবার এই অভিযান হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে নাসা।

‘অ্যাক্সিয়ম-৪’ মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য। চার সদস্যের এই অভিযানের নেতৃত্বে রয়েছেন শুভাংশু। তিনিই মহাকাশযানটি পরিচালনা করবেন। রাকেশ শর্মার পরে শুভাংশুই হচ্ছেন দ্বিতীয় ভারতীয় যিনি মহাকাশে পাড়ি দিচ্ছেন। বায়ু সেনার ক্যাপ্টেন হওয়ায় তিনি এর আগে এএন-৩২, জাগুয়ার, হক, মিগ-২১, সু-৩০-সহ নানা ধরনের যুদ্ধবিমান চালনা করেছেন। তবে মহাকাশযান তাঁর জন্য এই প্রথম অভিজ্ঞতা। তিনি দীর্ঘদিন  স্পেসএক্স এবং ‘অ্যাক্সিয়ম স্পেস ইনকর্পোরেশন’-এর কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ১৪ দিনের এই মহাকাশ অভিযানে শুভাংশুরা বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও পরীক্ষানিরীক্ষা চালাবেন। সবটা পরিচালিত হবে নাসা ও ইসরোর যৌথ উদ্যোগে।