২৩ জুন ২০২৫, সোমবার, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কেরলের রাজভবনের অনুষ্ঠানে গেরুয়া রং, প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ এসএফআই-এর

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ২২ জুন ২০২৫, রবিবার
  • / 10

তিরুবন্তপুরম: কেরলের রাজভবনে সরকারি অনুষ্ঠানে ভারত মাতার ছবি প্রদর্শন নিয়ে এসএফআই এবং এবিভিপি-র রাস্তা ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ চলছে। যদিও রাজ্যপাল রাজেন্দ্র আরলেকর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি গেরুয়া পতাকা হাতে ভারত মাতার প্রতিকৃতি সরাবেন না। জানা গিয়েছে, রাজভবনে সরকারি অনুষ্ঠানে ভারত মাতার যে ছবি ব্যবহার করা হয়েছে তা সাধারণত আরএসএসের শাখায় দেখা যায়। এনিয়ে এসএফআইকে রাজভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। পাল্টা প্রতিশোধ নিতে গত দু’দিন ধরে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ভি সিভানকুট্টির সরকারি বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে রাষ্ট্রীয় স্বংয়সেবক সংঘের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। ভারত মাতার প্রতিকৃতির উপস্থিতির প্রতিবাদে সম্প্রতি রাজভবনে একটি অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়েও এসেছিলেন সিভানকুট্টি। শিক্ষামন্ত্রীর রাজভবনের অনুষ্ঠান থেকে ওয়াকআউট করার পর প্রতিবাদ আরও তীব্র হয়। রাজ্যপালের সামনে সভাস্থল ছেড়ে শিক্ষামন্ত্রী প্রোটোকল ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ করে রাজভবন। গত ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে ভারত মাতার ছবি নিয়ে রাজভবনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠান বয়কট করেন কৃষিমন্ত্রী পি প্রসাদ। এই ঘটনা নিয়ে রাজ্যপাল আরলেকরের সঙ্গে বাকযুদ্ধে জড়িয়ে ছিলেন কেরলের কৃষিমন্ত্রী। তখন সিপিএম ও গেরুয়া শিবিরের ছাত্র সংগঠন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং বিক্ষোভ শুরু করে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক এন এম পিয়ারসন বলেছেন, এলডিএফ সরকারের উচিত বিষয়টি আইনিভাবে নেওয়া। আরলেকার এবং এলডিএফ সরকারের মধ্যে অচলাবস্থা অব্যাহত থাকায় এই বিষয়ে স্পষ্টতা আনবে। যদিও সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক বিনয় বিশ্বম বলেছেন, “আইনি আশ্রয় নেওয়ার কোনও অর্থ নেই। কারণ সংবিধান ইতিমধ্যে জাতীয় প্রতীকগুলিকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং সংজ্ঞায়িত করেছে। আরলেকরের স্পষ্ট করা উচিত, কেরলের রাজ্যপাল হিসেবে তাঁর ভূমিকা পালনের সময় আরএসএসের আমলে তাঁর আদর্শ বা সংবিধান পথপ্রদর্শক হওয়া উচিত কিনা। জাতীয় মূর্তি ও প্রতীক নিয়ে সংবিধানে কী লেখা আছে, তা তাঁর পড়া উচিত।” সাংবিধানিক পদমর্যাদার কথা মনে করিয়ে তিনি আরও বলেন, “রাজভবনের মতো একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ভারতের ভুল ছবি দেখানো উচিত নয়। ভারতের মানচিত্রে ভারত মাতার ছবি তুলে ধরছেন রাজ্যপাল। এখন সময় এসেছে ওঁর উপদেষ্টাদের ওঁকে সংশোধন করার।”

প্রসঙ্গত, আরলেকর রাজ্যপাল হিসেবে কেরলের দায়িত্বভার নেওয়ার পর থেকে রাজ্য-রাজ্যপাল সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। তাঁর একগুঁয়েমি নিয়ে ক্ষুব্ধ সিপিএম নেতৃত্বও। এদিকে বিরোধীরা বারবার রাজ্যপালের কাছে রাজভবনকে আরএসএস শাখায় রূপান্তরিত না করার জন্য অনুরোধও জানাচ্ছে।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

কেরলের রাজভবনের অনুষ্ঠানে গেরুয়া রং, প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ এসএফআই-এর

আপডেট : ২২ জুন ২০২৫, রবিবার

তিরুবন্তপুরম: কেরলের রাজভবনে সরকারি অনুষ্ঠানে ভারত মাতার ছবি প্রদর্শন নিয়ে এসএফআই এবং এবিভিপি-র রাস্তা ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ চলছে। যদিও রাজ্যপাল রাজেন্দ্র আরলেকর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি গেরুয়া পতাকা হাতে ভারত মাতার প্রতিকৃতি সরাবেন না। জানা গিয়েছে, রাজভবনে সরকারি অনুষ্ঠানে ভারত মাতার যে ছবি ব্যবহার করা হয়েছে তা সাধারণত আরএসএসের শাখায় দেখা যায়। এনিয়ে এসএফআইকে রাজভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। পাল্টা প্রতিশোধ নিতে গত দু’দিন ধরে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ভি সিভানকুট্টির সরকারি বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে রাষ্ট্রীয় স্বংয়সেবক সংঘের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। ভারত মাতার প্রতিকৃতির উপস্থিতির প্রতিবাদে সম্প্রতি রাজভবনে একটি অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়েও এসেছিলেন সিভানকুট্টি। শিক্ষামন্ত্রীর রাজভবনের অনুষ্ঠান থেকে ওয়াকআউট করার পর প্রতিবাদ আরও তীব্র হয়। রাজ্যপালের সামনে সভাস্থল ছেড়ে শিক্ষামন্ত্রী প্রোটোকল ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ করে রাজভবন। গত ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে ভারত মাতার ছবি নিয়ে রাজভবনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠান বয়কট করেন কৃষিমন্ত্রী পি প্রসাদ। এই ঘটনা নিয়ে রাজ্যপাল আরলেকরের সঙ্গে বাকযুদ্ধে জড়িয়ে ছিলেন কেরলের কৃষিমন্ত্রী। তখন সিপিএম ও গেরুয়া শিবিরের ছাত্র সংগঠন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং বিক্ষোভ শুরু করে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক এন এম পিয়ারসন বলেছেন, এলডিএফ সরকারের উচিত বিষয়টি আইনিভাবে নেওয়া। আরলেকার এবং এলডিএফ সরকারের মধ্যে অচলাবস্থা অব্যাহত থাকায় এই বিষয়ে স্পষ্টতা আনবে। যদিও সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক বিনয় বিশ্বম বলেছেন, “আইনি আশ্রয় নেওয়ার কোনও অর্থ নেই। কারণ সংবিধান ইতিমধ্যে জাতীয় প্রতীকগুলিকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং সংজ্ঞায়িত করেছে। আরলেকরের স্পষ্ট করা উচিত, কেরলের রাজ্যপাল হিসেবে তাঁর ভূমিকা পালনের সময় আরএসএসের আমলে তাঁর আদর্শ বা সংবিধান পথপ্রদর্শক হওয়া উচিত কিনা। জাতীয় মূর্তি ও প্রতীক নিয়ে সংবিধানে কী লেখা আছে, তা তাঁর পড়া উচিত।” সাংবিধানিক পদমর্যাদার কথা মনে করিয়ে তিনি আরও বলেন, “রাজভবনের মতো একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ভারতের ভুল ছবি দেখানো উচিত নয়। ভারতের মানচিত্রে ভারত মাতার ছবি তুলে ধরছেন রাজ্যপাল। এখন সময় এসেছে ওঁর উপদেষ্টাদের ওঁকে সংশোধন করার।”

প্রসঙ্গত, আরলেকর রাজ্যপাল হিসেবে কেরলের দায়িত্বভার নেওয়ার পর থেকে রাজ্য-রাজ্যপাল সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। তাঁর একগুঁয়েমি নিয়ে ক্ষুব্ধ সিপিএম নেতৃত্বও। এদিকে বিরোধীরা বারবার রাজ্যপালের কাছে রাজভবনকে আরএসএস শাখায় রূপান্তরিত না করার জন্য অনুরোধও জানাচ্ছে।