০১ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাইকেলে উনিশ হাজার ফুটের বেশি উচ্চতা স্পর্শ জোমাটো বয় এমদাদুলের

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২২, শনিবার
  • / 14

দেবশ্রী মজুমদার, বোলপুর: সাইকেলে উনিশ হাজার ফুটের বেশি উচ্চতা স্পর্শ করলেন জোমাটো বয় মুহাম্মদ এমদাদুল হক। পড়াশোনা চালানোর জন্য বছর উনিশের এমদাদুল বেশ কিছুদিন মুম্বইয়ে জোমাটো ডেলিভারি বয়ের কাজ করেন। তারপর বোলপুরে এসেও পড়াশোনার পাশাপাশি জোমাটো ডেলিভারি বয়ের কাজ করেন। বোলপুরে পড়াশোনার পাশাপাশি, তাঁর নিজস্ব ব্লগ আছে। আর রয়েছে পাহাড় ছোঁয়ার নেশা। সেখানে একমাত্র সাইকেলই তাঁর পছন্দের বাহন। তাই ‘দেখব এবার জগৎটাকে’ বলে বেরিয়ে পড়া।

অনেকেই তাঁকে আর্থিক বা সামাজিকভাবে সাহায্য করেছেন। স্থানীয় স্পনসর হিসেবে বোলপুর বাইকারস ক্লাব, শপিং বাস, রৌনক এন্টারটেইনমেন্ট এবং চৌধুরি অটোমোবাইলস তাঁকে সামান্য কিছু সাহায্য করেছে। বোলপুর শান্তিনিকেতনের সেন্ট টেরেসা স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র মুহাম্মদ এমদাদুল হক প্রায় আড়াই হাজারের বেশি পথ সাইকেলে পাড়ি দিয়ে পৃথিবীর উচ্চতম মটোরেবল স্থান অর্থাৎ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উনিশ হাজার তিনশো ফুট উচ্চতায় লাদাখের উমিং-লা-পাস পৌঁছান।

 

ক্ষুদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান এমদাদুল হক। আদি বাড়ি ঝাড়খণ্ডের পাকুর জেলার মহেশপুর থানার অন্তর্গত খাগড়া গ্রামে। পরিবারে দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সেই ছোট। চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর সাইকেলে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেন এমদাদুল। এই সাইকেল যাত্রায় তাঁর প্রেরণা মুহাম্মদ সেলিম খান। মূলত তাঁর প্রেরণার ফলে এমদাদুলের মাথায় আসে এরকম অভিযান করার।

 

এমদাদুল পাড়ি দিয়েছেন আড়াই হাজার কিমির বেশি পথ। সেক্ষেত্রে ‘ওয়ার্ল্ড বুক অফ রেকর্ডসে’ এমদাদুল অনেকটাই এগিয়ে। উমিং-লা-পাস পৌঁছানোর পরই ওয়ার্ল্ড বুক অফ রেকর্ডসে জায়গা করে নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন তিনি। এমদাদুল বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের মধ্যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার ক্ষমতা কমছে। তাই হতাশায় ভুগছে। তারা সহজেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে।’ তাই এই প্রজন্মকে প্রেরণা দিতে তার ‘সে নো ট্যু সুইসাইড’ বার্তা।

আগামী দিনে তাঁর লক্ষ্য, পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলা সাইকেলে পরিভ্রমণ করা। তারজন্য একটু বড় স্পনসর দরকার। এই দীর্ঘ যাত্রাপথে শান্তিনিকেতনের এক বন্ধুর কাছ থেকে গিফট হিসেবে পেয়েছেন অক্সিজেন ক্যান। যদিও সেটি কাজে লাগেনি। এমদাদুল জানান, সাইকেল চালিয়ে এই যাত্রায় বিভিন্ন এলাকার আবহাওয়ার সঙ্গে অভ্যস্ত হওয়ায় এই অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়েনি। চব্বিশ দিন সাইকেল যাত্রার মাঝে হোটেলে থাকতে হয়েছে তাঁকে। তারমধ্যে অন্যতম হল মানালি ও লাস্ট-স্টে-হানলে। লক্ষ্যপূরণ করে মিতালি এক্সপ্রেস ধরে কলকাতায় পৌঁছনোর পর, আসানসোল যান এমদাদুল। কারণ জম্মু থেকে সাইকেল পার্সেল করে আসানসোলে পাঠানো হয়। আসানসোল থেকে সাইকেল নিয়ে ২৪ অক্টোবর সে বোলপুর পৌঁছায়।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সাইকেলে উনিশ হাজার ফুটের বেশি উচ্চতা স্পর্শ জোমাটো বয় এমদাদুলের

আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২২, শনিবার

দেবশ্রী মজুমদার, বোলপুর: সাইকেলে উনিশ হাজার ফুটের বেশি উচ্চতা স্পর্শ করলেন জোমাটো বয় মুহাম্মদ এমদাদুল হক। পড়াশোনা চালানোর জন্য বছর উনিশের এমদাদুল বেশ কিছুদিন মুম্বইয়ে জোমাটো ডেলিভারি বয়ের কাজ করেন। তারপর বোলপুরে এসেও পড়াশোনার পাশাপাশি জোমাটো ডেলিভারি বয়ের কাজ করেন। বোলপুরে পড়াশোনার পাশাপাশি, তাঁর নিজস্ব ব্লগ আছে। আর রয়েছে পাহাড় ছোঁয়ার নেশা। সেখানে একমাত্র সাইকেলই তাঁর পছন্দের বাহন। তাই ‘দেখব এবার জগৎটাকে’ বলে বেরিয়ে পড়া।

অনেকেই তাঁকে আর্থিক বা সামাজিকভাবে সাহায্য করেছেন। স্থানীয় স্পনসর হিসেবে বোলপুর বাইকারস ক্লাব, শপিং বাস, রৌনক এন্টারটেইনমেন্ট এবং চৌধুরি অটোমোবাইলস তাঁকে সামান্য কিছু সাহায্য করেছে। বোলপুর শান্তিনিকেতনের সেন্ট টেরেসা স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র মুহাম্মদ এমদাদুল হক প্রায় আড়াই হাজারের বেশি পথ সাইকেলে পাড়ি দিয়ে পৃথিবীর উচ্চতম মটোরেবল স্থান অর্থাৎ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উনিশ হাজার তিনশো ফুট উচ্চতায় লাদাখের উমিং-লা-পাস পৌঁছান।

 

ক্ষুদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান এমদাদুল হক। আদি বাড়ি ঝাড়খণ্ডের পাকুর জেলার মহেশপুর থানার অন্তর্গত খাগড়া গ্রামে। পরিবারে দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সেই ছোট। চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর সাইকেলে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেন এমদাদুল। এই সাইকেল যাত্রায় তাঁর প্রেরণা মুহাম্মদ সেলিম খান। মূলত তাঁর প্রেরণার ফলে এমদাদুলের মাথায় আসে এরকম অভিযান করার।

 

এমদাদুল পাড়ি দিয়েছেন আড়াই হাজার কিমির বেশি পথ। সেক্ষেত্রে ‘ওয়ার্ল্ড বুক অফ রেকর্ডসে’ এমদাদুল অনেকটাই এগিয়ে। উমিং-লা-পাস পৌঁছানোর পরই ওয়ার্ল্ড বুক অফ রেকর্ডসে জায়গা করে নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন তিনি। এমদাদুল বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের মধ্যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার ক্ষমতা কমছে। তাই হতাশায় ভুগছে। তারা সহজেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে।’ তাই এই প্রজন্মকে প্রেরণা দিতে তার ‘সে নো ট্যু সুইসাইড’ বার্তা।

আগামী দিনে তাঁর লক্ষ্য, পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলা সাইকেলে পরিভ্রমণ করা। তারজন্য একটু বড় স্পনসর দরকার। এই দীর্ঘ যাত্রাপথে শান্তিনিকেতনের এক বন্ধুর কাছ থেকে গিফট হিসেবে পেয়েছেন অক্সিজেন ক্যান। যদিও সেটি কাজে লাগেনি। এমদাদুল জানান, সাইকেল চালিয়ে এই যাত্রায় বিভিন্ন এলাকার আবহাওয়ার সঙ্গে অভ্যস্ত হওয়ায় এই অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়েনি। চব্বিশ দিন সাইকেল যাত্রার মাঝে হোটেলে থাকতে হয়েছে তাঁকে। তারমধ্যে অন্যতম হল মানালি ও লাস্ট-স্টে-হানলে। লক্ষ্যপূরণ করে মিতালি এক্সপ্রেস ধরে কলকাতায় পৌঁছনোর পর, আসানসোল যান এমদাদুল। কারণ জম্মু থেকে সাইকেল পার্সেল করে আসানসোলে পাঠানো হয়। আসানসোল থেকে সাইকেল নিয়ে ২৪ অক্টোবর সে বোলপুর পৌঁছায়।