০১ জানুয়ারী ২০২৬, বৃহস্পতিবার, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৮ মাস অতিক্রান্ত, এখনও জেলে গুলফিশা ফাতিমা, দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া

নয়াদিল্লি: দেশের রাজধানীর জেলে দীর্ঘ ১৮ মাস পূর্ণ হল গুলফিশা ফাতিমার। দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ আরারিয়া, পাটনা, বাদওয়ানি, বরোদা, লখনউ, ফইজাবাদ, মুজফফরনগর, সাহারানপুর, জয়পুর, পুনে সহ ভারতের নানা জায়গায় ‘জাস্টিস ফর গুলফিশা’ প্রোগ্রাম আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজকদের মধ্যে রয়েছে এআইপিডব্লিউএ, এনএফআইডব্লিউ, সতরক নাগরিক সংগঠন, এআইডিডব্লিউএ, বেবাক কালেক্টিভ, পারচম কালেক্টিভ (মুম্বই), পিইউসিএল (রাজস্থান), ফোরাম এগেন্সট অপ্রেসন অফ ওম্যান, ওম্যান এগেন্সট সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স অ্যান্ড স্টেট রিপ্রেসন, হ্যাবিট্যাট অ্যান্ড লাইভ্লিহুড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন, জন স্বাস্থ্য অভিযান (মুম্বই), জেজেএসএস (আরারিয়া, বিহার), জাস্টিস কোয়ালিশন অফ রিলিজিয়নস (পশ্চিম ভারত), ওম্যান অ্যান্ড ট্রান্সজেন্ডার অর্গানাইজেশন, ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অফ পিপল’স মুভমেন্ট (এনএপিএম) ও নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন। সংগঠনগুলি বিবৃতিতে জানিয়েছে, মুক্ত ও ন্যায়সঙ্গত বিশ্বের স্বপ্ন দেখেছিল যে তরুণীটি তাঁকে জেলে পুরে রাখা হয়েছে এবং আমাদের দেশের বাস্তবতা যন্ত্রণাদায়কভাবে প্রতিফলিত হয়েছে এই ঘটনায়।
২০২০ সালের ৯ এপ্রিল জাফরাবাদে সিএএ-বিরোধী ধর্নায় বসার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল ২৮ বছরের গুলফিশাকে। তাঁর উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় ইউএপিএ ধারা। দিল্লি হিংসার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার ছাত্রনেতা সফুরা জারগার ও মিরন হায়দরের উপরও এই ধারা চাপানো হয়। যাইহোক, গুলফিশার বাবা তানসিফ হুসেন এক ভিডিও বার্তায় বলেন,”আমার মেয়ে যখন থেকে জেলে গিয়েছে তখন থেকে আমি ডিপ্রেশনে ভুগছি। মাঝে মাঝে অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছি। আমরা আশা হারাব না কারণ আমাদের আশার সঙ্গে আল্লাহ রয়েছেন।” ভিডিও বার্তাটি শেয়ার করেছিলেন সাংবাদিক আহমেদ কাসিম।
ঐক্যবদ্ধ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দুর স্নাতকোত্তর, এমবিএ স্নাতক ও রেডিও জকি গুলফিশা উত্তর-পূর্ব দিল্লির সিলামপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি শান্তিপূর্ণ সিএএ-এনপিআর-এনআরসি-বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এই আন্দোলনের এটাই জোর ও সৌন্দর্য যে, গুলফিশার মতো স্থানীয় মেয়েরা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং অনেক নেতার জন্ম দিয়েছে এই আন্দোলন। এই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে মুসলিমদের গণহত্যা করা হয়েছে রাষ্ট্রের পুলিশের পূর্ণ মদতে এবং এরপর সিএএ, এনআরসি ও এনপিআর বিরোধী আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে, মূলত মুসলিম মহল্লা থেকে, ইচ্ছামতো অসংখ্য মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংগঠনগুলির অভিযোগ, গুলফিশার হাজতবাস কোনও ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়, বরং গণতান্ত্রিক ও সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বরকে ভয় দেখিয়ে দমিয়ে দেওয়ার বর্তমান সরকারের নীতিরই অংশ।

সর্বধিক পাঠিত

‘জয় শ্রী রাম’ বলাতে চাপ, বিজেপির রাজ্যে নির্যাতনের শিকার কাশ্মীরি ব্যবসায়ীরা

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

১৮ মাস অতিক্রান্ত, এখনও জেলে গুলফিশা ফাতিমা, দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া

আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২১, বৃহস্পতিবার

নয়াদিল্লি: দেশের রাজধানীর জেলে দীর্ঘ ১৮ মাস পূর্ণ হল গুলফিশা ফাতিমার। দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ আরারিয়া, পাটনা, বাদওয়ানি, বরোদা, লখনউ, ফইজাবাদ, মুজফফরনগর, সাহারানপুর, জয়পুর, পুনে সহ ভারতের নানা জায়গায় ‘জাস্টিস ফর গুলফিশা’ প্রোগ্রাম আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজকদের মধ্যে রয়েছে এআইপিডব্লিউএ, এনএফআইডব্লিউ, সতরক নাগরিক সংগঠন, এআইডিডব্লিউএ, বেবাক কালেক্টিভ, পারচম কালেক্টিভ (মুম্বই), পিইউসিএল (রাজস্থান), ফোরাম এগেন্সট অপ্রেসন অফ ওম্যান, ওম্যান এগেন্সট সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স অ্যান্ড স্টেট রিপ্রেসন, হ্যাবিট্যাট অ্যান্ড লাইভ্লিহুড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন, জন স্বাস্থ্য অভিযান (মুম্বই), জেজেএসএস (আরারিয়া, বিহার), জাস্টিস কোয়ালিশন অফ রিলিজিয়নস (পশ্চিম ভারত), ওম্যান অ্যান্ড ট্রান্সজেন্ডার অর্গানাইজেশন, ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অফ পিপল’স মুভমেন্ট (এনএপিএম) ও নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন। সংগঠনগুলি বিবৃতিতে জানিয়েছে, মুক্ত ও ন্যায়সঙ্গত বিশ্বের স্বপ্ন দেখেছিল যে তরুণীটি তাঁকে জেলে পুরে রাখা হয়েছে এবং আমাদের দেশের বাস্তবতা যন্ত্রণাদায়কভাবে প্রতিফলিত হয়েছে এই ঘটনায়।
২০২০ সালের ৯ এপ্রিল জাফরাবাদে সিএএ-বিরোধী ধর্নায় বসার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল ২৮ বছরের গুলফিশাকে। তাঁর উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় ইউএপিএ ধারা। দিল্লি হিংসার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার ছাত্রনেতা সফুরা জারগার ও মিরন হায়দরের উপরও এই ধারা চাপানো হয়। যাইহোক, গুলফিশার বাবা তানসিফ হুসেন এক ভিডিও বার্তায় বলেন,”আমার মেয়ে যখন থেকে জেলে গিয়েছে তখন থেকে আমি ডিপ্রেশনে ভুগছি। মাঝে মাঝে অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছি। আমরা আশা হারাব না কারণ আমাদের আশার সঙ্গে আল্লাহ রয়েছেন।” ভিডিও বার্তাটি শেয়ার করেছিলেন সাংবাদিক আহমেদ কাসিম।
ঐক্যবদ্ধ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দুর স্নাতকোত্তর, এমবিএ স্নাতক ও রেডিও জকি গুলফিশা উত্তর-পূর্ব দিল্লির সিলামপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি শান্তিপূর্ণ সিএএ-এনপিআর-এনআরসি-বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এই আন্দোলনের এটাই জোর ও সৌন্দর্য যে, গুলফিশার মতো স্থানীয় মেয়েরা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং অনেক নেতার জন্ম দিয়েছে এই আন্দোলন। এই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে মুসলিমদের গণহত্যা করা হয়েছে রাষ্ট্রের পুলিশের পূর্ণ মদতে এবং এরপর সিএএ, এনআরসি ও এনপিআর বিরোধী আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে, মূলত মুসলিম মহল্লা থেকে, ইচ্ছামতো অসংখ্য মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংগঠনগুলির অভিযোগ, গুলফিশার হাজতবাস কোনও ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়, বরং গণতান্ত্রিক ও সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বরকে ভয় দেখিয়ে দমিয়ে দেওয়ার বর্তমান সরকারের নীতিরই অংশ।