১৯ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাজকোষের টাকা ব্যবহার করে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে কেন্দ্র, কমিশনকে চিঠি লিখে ক্ষোভ প্রকাশ তৃণমূলের

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার
  • / 34

পুবের কলম প্রতিবেদক: আর মাত্র কয়েকঘন্টা। রাত পোহালেই ঘোষণা করা হবে লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ। নির্বাচন কমিশনের তরফে তাদের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানানো হয়েছে শনিবার দুপুর তিনটে নাগাদ সাংবাদিক সম্মেলন করে জানানো হবে লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ। এই আবহে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে রাজকোষের টাকা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়ার অভিযোগ তুলে কমিশনকে চিঠি দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রই রাজ্যের প্রাপ্য ১ লক্ষ ৭৪ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে বলে দাবি করে শুক্রবার পালটা বিজ্ঞাপন দিয়েছে রাজ্য।
নির্বাচন কমিশনকে পাঠানো চিঠিতে তৃণমূল দাবি করেছে, সংবাদমাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। রাজ্য সরকারকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা হয়েছে। রাজ্যের শাসকদলের বক্তব্য, কেন্দ্রের উচিত বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা কিন্তু, সেই নিরপেক্ষতা বজায় রাখা হচ্ছে না। নির্দিষ্ট কিছু রাজ্যের সরকার(ডবল ইঞ্জিন বা বিজেপি শাসিত)-এর প্রতি পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাজ্যের অধিকাংশ সংবাদমাধ্যমে কেন্দ্রের তরফে একটি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। যেখানে দাবি করা হয়, কেন্দ্র অর্থ বরাদ্দ করা সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের অসহযোগিতা এবং অনীহায় বহু প্রকল্পের সুবিধা সাধারণ নাগরিকরা পাচ্ছেন না। বেশ কিছু প্রকল্পের কাজও আটকে আছে। ওই একই দিন উত্তরপ্রদেশ সরকারও বৃহস্পতিবার রাজ্যের বেশ কয়েকটি প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমে এই বিজ্ঞাপন দেয়। ওই বিজ্ঞাপনে বিগত সাত বছর ধরে উত্তরপ্রদেশে কী কী উন্নয়ন হয়েছে তার বিবরণ ফলাও করে দেওয়া হয়েছে। এই বিজ্ঞাপনগুলির কথা উল্লেখ করে কমিশনের কাছে তৃণমূলের অভিযোগ, রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধি করতেই সংবাদমাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এধরনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বিজ্ঞাপনের প্রতিবাদে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবকে চিঠি দিয়েছে তৃণমূল।
চিঠিতে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল দাবি করেছে, দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে যখন কোনও বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় তখন তার নিরপেক্ষতা বজায় রাখা উচিত। সেটা না করে এই বিজ্ঞাপন নির্দিষ্ট সরকারের পক্ষপাতিত্ব করছে। একই সঙ্গে, বিরোধী রাজ্যের সরকারগুলিকে নেতিবাচক দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইনও উল্লেখ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্রের বিজ্ঞাপনে ইচ্ছাকৃতভাবে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির কাজের অগ্রগতি দেখানো হচ্ছে এবং বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে আছে বলে দেখানো হচ্ছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের দেওয়া বিজ্ঞাপনে উন্নয়নের গতি আটকে দেওয়ার যে অভিযোগ রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে করা হয়েছিল, তার পাল্টা জবাব দিয়ে শুক্রবার রাজ্যের তরফে সমস্ত সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের ওই বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয়েছে, কেন্দ্রই রাজ্যের প্রাপ্য ১ লক্ষ ৭৪ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। তার পরেও আবাস যোজনা থেকে শুরু করে একশো দিনের কাজ সব ক্ষেত্রেই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে মা মাটি মানুষের সরকার। তুলে ধরা হয়েছে এ রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রের কাছে শ্বেত পত্র দাবি করে রাজ্যের শাসক দল জানতে চেয়েছিল, বিগত তিন অর্থবর্ষে কেন্দ্র আবাস যোজনার জন্য রাজ্যকে কত টাকা দিয়েছে? শাসকদলের অভিযোগ, কেন্দ্র রাজ্যের ১১ লক্ষ মানুষকে আবাস যোজনার টাকা থেকে বঞ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জনসভা থেকে তিনটি অর্থবর্ষে ৪২ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করছেন অথচ, কোনও টাকা পায়নি রাজ্য। রাজ্যের শাসকদলের দাবি, এই বিষয়ে জানিয়ে ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর চিঠি লিখেও জানানো হয়েছিল কেন্দ্র সরকারকে।

Tag :

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাজকোষের টাকা ব্যবহার করে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে কেন্দ্র, কমিশনকে চিঠি লিখে ক্ষোভ প্রকাশ তৃণমূলের

আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: আর মাত্র কয়েকঘন্টা। রাত পোহালেই ঘোষণা করা হবে লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ। নির্বাচন কমিশনের তরফে তাদের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানানো হয়েছে শনিবার দুপুর তিনটে নাগাদ সাংবাদিক সম্মেলন করে জানানো হবে লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ। এই আবহে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে রাজকোষের টাকা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়ার অভিযোগ তুলে কমিশনকে চিঠি দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রই রাজ্যের প্রাপ্য ১ লক্ষ ৭৪ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে বলে দাবি করে শুক্রবার পালটা বিজ্ঞাপন দিয়েছে রাজ্য।
নির্বাচন কমিশনকে পাঠানো চিঠিতে তৃণমূল দাবি করেছে, সংবাদমাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। রাজ্য সরকারকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা হয়েছে। রাজ্যের শাসকদলের বক্তব্য, কেন্দ্রের উচিত বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা কিন্তু, সেই নিরপেক্ষতা বজায় রাখা হচ্ছে না। নির্দিষ্ট কিছু রাজ্যের সরকার(ডবল ইঞ্জিন বা বিজেপি শাসিত)-এর প্রতি পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাজ্যের অধিকাংশ সংবাদমাধ্যমে কেন্দ্রের তরফে একটি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। যেখানে দাবি করা হয়, কেন্দ্র অর্থ বরাদ্দ করা সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের অসহযোগিতা এবং অনীহায় বহু প্রকল্পের সুবিধা সাধারণ নাগরিকরা পাচ্ছেন না। বেশ কিছু প্রকল্পের কাজও আটকে আছে। ওই একই দিন উত্তরপ্রদেশ সরকারও বৃহস্পতিবার রাজ্যের বেশ কয়েকটি প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমে এই বিজ্ঞাপন দেয়। ওই বিজ্ঞাপনে বিগত সাত বছর ধরে উত্তরপ্রদেশে কী কী উন্নয়ন হয়েছে তার বিবরণ ফলাও করে দেওয়া হয়েছে। এই বিজ্ঞাপনগুলির কথা উল্লেখ করে কমিশনের কাছে তৃণমূলের অভিযোগ, রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধি করতেই সংবাদমাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এধরনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বিজ্ঞাপনের প্রতিবাদে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবকে চিঠি দিয়েছে তৃণমূল।
চিঠিতে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল দাবি করেছে, দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে যখন কোনও বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় তখন তার নিরপেক্ষতা বজায় রাখা উচিত। সেটা না করে এই বিজ্ঞাপন নির্দিষ্ট সরকারের পক্ষপাতিত্ব করছে। একই সঙ্গে, বিরোধী রাজ্যের সরকারগুলিকে নেতিবাচক দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইনও উল্লেখ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্রের বিজ্ঞাপনে ইচ্ছাকৃতভাবে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির কাজের অগ্রগতি দেখানো হচ্ছে এবং বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে আছে বলে দেখানো হচ্ছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের দেওয়া বিজ্ঞাপনে উন্নয়নের গতি আটকে দেওয়ার যে অভিযোগ রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে করা হয়েছিল, তার পাল্টা জবাব দিয়ে শুক্রবার রাজ্যের তরফে সমস্ত সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের ওই বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয়েছে, কেন্দ্রই রাজ্যের প্রাপ্য ১ লক্ষ ৭৪ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। তার পরেও আবাস যোজনা থেকে শুরু করে একশো দিনের কাজ সব ক্ষেত্রেই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে মা মাটি মানুষের সরকার। তুলে ধরা হয়েছে এ রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রের কাছে শ্বেত পত্র দাবি করে রাজ্যের শাসক দল জানতে চেয়েছিল, বিগত তিন অর্থবর্ষে কেন্দ্র আবাস যোজনার জন্য রাজ্যকে কত টাকা দিয়েছে? শাসকদলের অভিযোগ, কেন্দ্র রাজ্যের ১১ লক্ষ মানুষকে আবাস যোজনার টাকা থেকে বঞ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জনসভা থেকে তিনটি অর্থবর্ষে ৪২ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করছেন অথচ, কোনও টাকা পায়নি রাজ্য। রাজ্যের শাসকদলের দাবি, এই বিষয়ে জানিয়ে ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর চিঠি লিখেও জানানো হয়েছিল কেন্দ্র সরকারকে।